শব্দদূষণ বলতে মানুষের বা কোনো প্রাণীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী কোনো শব্দ সৃষ্টির কারণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে বোঝায়। যানজট, কলকারখানা থেকে দূষণ সৃষ্টিকারী এরকম তীব্র শব্দের উৎপত্তি হয়। মানুষ সাধারণত ২০-২০,০০০ হার্জের কম বা বেশি শব্দ শুনতে পায় না। তাই মানুষের জন্য শব্দদূষণ প্রকৃতপক্ষে এই সীমার মধ্যেই তীব্রতর শব্দ দ্বারাই হয়ে থাকে।বিভিন্ন উৎস থেকে উৎপন্ন জোরালো এবং অপ্রয়োজনীয় শব্দ মানুষের সহনশীলতার মাত্রা ছাড়িয়ে বিরক্তি ঘটানো এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতিসাধন করাই শব্দ দূষণ।


মানুষের সহনশীল শ্রুতিসীমা ৪০ থেকে ৫০ ডেসিমাল।কিন্তু বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে শব্দদূষনের মাত্রা কখনও কখনও ১৩০ ডেসিমাল ছাড়িয়ে যায় যা সহনীয় মাত্রার চেয়ে ৩ গুন বেশি।ঢাকা শহরে শব্দদূষন নিত্যদিনের সঙ্গী ।সেকারনে সারা বিশ্বের মধ্য শব্দদূষনে রাজধানী ঢাকা প্রথম এবং রাজশাহী ৫টি দূষন কবলিত শহরের মধ্য ৪ র্থ ।ভয়ঙ্কর এই শব্দদূষন আগামী দিনে নীরবঘাতক মহামারী হিসাবে দেখা দিতে পারে।শব্দদূষনের ফলে মানুষ হারাচ্ছে স্মৃতিশক্তি ভূগছে বিষন্নতায়।নারী ,শিশু,বয়োবৃদ্ধ সহ সব বয়সী মানুষই প্রতিনিয়ত শব্দদূষনের স্বীকার হচ্ছে।বিশ্বের প্রাই ৫ ভাগ মানুষ প্রতিদন এই শব্দসন্ত্রাসের স্বীকার হচ্ছে ।বিশ্বব্যাংক ও ইউনিসেফের এক জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশের মানুষের ৩০টি জটিল ও কঠিন রোগের কারন এই শব্দদূষন।শব্দদূষনের ফলে নষ্ট হচ্ছে কান ও স্মৃতিশক্তি বাড়ছে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুকি।আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে বাংলাদেশের ঢাকা শহরের তিব্র শব্দদূষনের ফলে ৪২ ভাগ রিক্সাচালক এবং ৩১ভাগ ট্রাফিক পুলিশ কানে কম শুনছে এবং প্রতি ৪ জনের ১ জন প্রায় ১২% কানে কম শুনছে ।৩০% মানুষ চোখের ঝুকি, ফুসফুসের জটিলতা,মানষিক চাপ সহ নানা ধরনের জটিল রোগ ও মারাত্নক স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্য রয়েছে ।


সবমিলিয়ে প্রতিবছর প্রায় ৮০,০০০ হাজার মানুষ এই শব্দদূষন ও বায়ুদূষনের কারনে অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও শব্দদূষন নিয়ন্ত্রন আইন থাকলেও এর যথাযথ প্রয়োগ নেই বললেই চলে।



মরনঘাতী শব্দদূষনের ব্যাপারে শব্দদূষন প্রতিরোধ আন্দলনের ঝিনাইদহের সংগঠন যুব ফেডারেশনের আহবায়ক,এস এম রবি বলেন শব্দ যে একটি দূষন এব্যাপারে দেশের মানুষ একেবারেই সচেতন নয়।বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরের ভূমিকা অতি নগন্য এবং দূষন নিয়ে আন্দোলন করা সংগঠনগুলোর কার্যক্রমে সরকারি পৃষ্টপোষকতা নাই।



সেক্ষেত্রে শব্দদূষন নামক এই নীরবঘাতক থেকে পরবর্তী প্রজন্মকে বাচাতে হলে প্রত্যককেই তার নিজ নিজ জায়গা থেকে শব্দদূষন রোধে সচেতন হতে হবে,পাশাপাশি সরকারি ভাবেও দেশের সকল শ্রেনীপেশার মানুষকে বিভিন্ন সচেতন মূলক প্রচার প্রচারনা,সেমিনার,লিফলেট বিতরন সহ শব্দদূষন নিয়ন্ত্রন আইনের সঠিক প্রয়োগে উদ্যগী হতে হবে।সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই হয়ত সুন্দর পৃথিবীর মুখ দেখবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024