◾আবদুল আযীয কাসেমি


লজ্জা পবিত্রতা। লজ্জা চারিত্রিক সুষমা। লজ্জা মুমিনের ভূষণ। লজ্জা ইমানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। লজ্জার বিপরীত হলো নির্লজ্জতা, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা ও কদর্যতা। সুস্থ রুচির মানুষমাত্রই নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনাকে ঘৃণা করে। লজ্জা মানুষের স্বভাবজাত একটি গুণ। কিন্তু বেহায়াপনার চর্চা ও খারাপ পরিবেশ এ স্বভাবজাত গুণকে অকেজো করে দেয়।


ইসলাম এ উন্নত গুণকে কেবল সমর্থনই করেনি; একে সাব্যস্ত করেছে ইমানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে। অর্থাৎ এটি স্বভাবজাত বলে কারও মনে যেন এমন ধারণা না জন্মে, এটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। এক হাদিসে মহানবী (সা) বলেন, ‘ইমানের সত্তরটির অধিক শাখা-প্রশাখা রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোত্তম হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র অকুণ্ঠচিত্ত ঘোষণা, আর এর সর্বনিম্ন শাখা হলো রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা।’ এরপর বললেন, ‘মনে রাখবে, লজ্জা ইমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা।’ (মুসলিম)


ইমাম নববি (রহ.) এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘লজ্জা ব্যক্তিকে মন্দ ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকতে উদ্বুদ্ধ করে এবং অপরের অধিকার নষ্ট করতে বারণ করে। অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, অনেক সময় সংকোচে কাউকে সৎকাজের আদেশ দেওয়া কিংবা অসৎ কাজ থেকে বারণ করতে পারে না। এটা লজ্জা নয়। বরং দুর্বলতা ও কাপুরুষতা। শরিয়ত নির্দেশিত জায়গায় লজ্জার প্রদর্শনই প্রকৃত লজ্জা। হাদিসে এসেছে লজ্জা কেবল কল্যাণই বয়ে আনে। এতে অকল্যাণ নেই বিন্দু পরিমাণ। অপর এক বর্ণনায় এসেছে, একদিন এক আনসারি সাহাবি তাঁর এক ভাইকে লজ্জা ত্যাগ করার উপদেশ দিচ্ছেন। নবীজি তাঁকে বললেন, ‘এমন করে বলো না। লজ্জা আপাদমস্তক কল্যাণই কল্যাণ।’ (মুসলিম) 


লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক



প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024