◾ নিউজ ডেস্ক


দ্রুতগতিতে বাড়ছে দেশের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ। পাশাপাশি বাড়ছে এ খাতের ঋণ বিতরণের হার। করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের বেসরকারি খাত।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২১ সালের জুলাই মাসের তুলনায় চলতি বছরের জুলাইয়ে বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা ব্যাংক খাত থেকে ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি ঋণ নিয়েছেন। আগের মাস জুনে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।


তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ফেব্রুয়ারিতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে ১০ দশমিক ৭২ শতাংশে নেমে আসে। এরপর মার্চে আবার বেড়ে ১১ দশমিক ২৯ শতাংশে এসে দাঁড়ায়। এরপরের মাস এপ্রিলে হয় ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং মে মাসে প্রবৃদ্ধি আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি বছরের জুলাই শেষে বেসরকারি খাতে ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৫২ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা--যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১১ লাখ ৮৭ হাজার ১১ কোটি টাকা।


বেসরকারি খাতের ঋণ বাড়ার বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘বেসরকারি খাতের ঋণ বেড়েছে এটা ভালো দিক, তবে এ সময় মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। অর্থাৎ যারা বিনিয়োগের জন্য পণ্যের কাঁচামাল, মুলধনি যন্ত্রপাতি কিনছে, তাদের খরচ আগের চেয়ে বেড়ে গেছে।’


এর দুটি কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এক. বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বেশি । আরেকটি হলো--ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ায় পণ্য আমদানিতে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। পণ্যমূল্য বেশি ও ডলারের বাড়তি দামের কারণে আমদানি ব্যয় মেটাতে গিয়ে ঋণ বেশি নিতে হচ্ছে কী না এটা বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। তবে আমার মনে হয় প্রকৃত বিনিয়োগ খুব একটা বাড়েনি।’     


তবে এখনও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার নিচে রয়েছে এই সূচক। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ ১৪ দশ‌মিক ১০ শতাংশ ঠিক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক--যা গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।


মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক সভাপতি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এখনও সুদহার কম আছে, পাশপাশি সরকারের ঋণ নেওয়ার হারও কম; তাই বেসরকারি ঋণপ্রবৃদ্ধি বাড়ছে। এ ছাড়া আগের অনেক এলসি এখন নিষ্পত্তি হচ্ছে।  এটাও তো এক ধরনের ঋণ। এসব কারণে ঋণপ্রবৃদ্ধি বেড়েছে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024