যেকোনো তদন্তেই অভিযুক্তের বক্তব্য শোনা হয়। অথচ বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে ফিফার ২ বছরের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে আপাতত না ডাকারই সিদ্ধান্ত বাফুফের গঠিত তদন্ত কমিটির। তাঁর বক্তব্য শোনার পরিকল্পনা আপাতত কমিটির নেই।


তদন্ত কমিটির প্রথম সভা শেষে আজ বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কমিটির প্রধান কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘তাঁকে (আবু নাঈম সোহাগ) ডাকার কোনো অবকাশ নেই। তাঁর বিষয়ে ফিফা সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছে। উনি আপিল করেছেন।’ পরে আরেক প্রশ্নের জবাবে অবশ্য নাবিল বলেছেন, ‘তদন্তের স্বার্থে যে কোনো কিছু করা যেতে পারে। তবে এই মুহূর্তে নয় (সোহাগের বক্তব্য শোনা)।’


সোহাগকে তদন্ত কমিটির সামনে না ডাকার যুক্তি হিসেবে বলা হচ্ছে, তাঁকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছে বাফুফে। বাফুফে ভবনেও তাঁর প্রবেশ নিষিদ্ধ। সোহাগ যেহেতু শাস্তি পেয়ে গেছেন, তাই তাঁর কথা শোনার আপাতত প্রয়োজন মনে করছে না কমিটি।


বাফুফের বেতনভুক্ত কর্মীদের মধ্য অন্য যাঁদের ফিফা ডেকে পাঠিয়েছিল, তাঁদের দ্রুতই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, ‘ফিফার রিপোর্টে যাদের দিকে আঙুল উঠেছে, তাদের একে একে ডেকে আমরা কথা বলব।’ কিন্তু প্রশ্ন হলো, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের স্বপদে বহাল রেখে কীভাবে তদন্তকাজ চলবে? নাবিল আহমেদ বলেছেন, এ ব্যাপারে কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।


ফিফা যে চারটি কেনাকাটায় সুনির্দিষ্টভাবে অনিয়মের প্রমাণ দিয়েছে, সেগুলোর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তলব করেছে তদন্ত কমিটি। কাজী নাবিল তা জানিয়ে বলেছেন, ‘বাফুফে সেক্রেটারিকে ইতিমধ্যে আমরা নির্দেশ দিয়েছি যে ফিফার অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সাপোর্টিং যেসব কাগজ আছে, সেগুলো দ্রুত আমাদের সামনে হাজির করার জন্য। আজকেই আমরা কিছু কাগজপত্র পরীক্ষা করা শুরু করেছি।’


তদন্তের স্বার্থে ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যানকে (সালাম মুর্শেদী) ডাকা হবে কি না, এমন প্রশ্নে কাজী নাবিলের জবাব, ‘তদন্তে না, তার সঙ্গে আমরা যেকোনো সময় আলাপ করতে পারি। কিভাবে কী হয়েছিল, কিভাবে ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে ওনার যদি কোনো বক্তব্য থাকে, তা আমরা জানতে পারি।’


২ মে বাফুফের নির্বাহী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, প্রথম সভার পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেবে। ১০ সদস্যের কমিটি থেকে বাফুফের দুজন সহসভাপতি পদত্যাগ করেছেন আগেই। বাকি ৮ সদস্যের মধ্যে আজ প্রথম সভায় ছিলেন না তিনজন—বাফুফের সহসভাপতি ইমরুল হাসান, সদস্য হারুনুর রশিদ ও ইলিয়াস হোসেন।


৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কীভাবে তদন্তকাজটা শেষ করা হবে, কমিটির কাজের পরিধি কী হবে, এসবই মূলত ঠিক করা হয়েছে আজকের সভায়।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024