গাজীপুরের সালনায় গৃহশিক্ষক কুপিয়ে কলেজ ছাত্রীকে হত্যা ঘটনায় প্রধান আসামি মো.সাইদুল ইসলাম(২৫)কে  গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১।


গত রাতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১ এর যৌথ অভিযানে 

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।


গ্রেফতার সাইদুল ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছার ফজলুল হক এর ছেলে। সাইদুল চট্টগ্রামের একটি মাদ্রাসা থেকে দাওরা পাশ করে। সে গাজীপুরের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা

করার পাশাপাশি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করত এবং এলাকার বিভিন্ন বাসায় গিয়ে প্রাইভেট পড়াত।


আজ সন্ধ্যা সাতটায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যম বিষয়টি নিশ্চিত করেন গাজীপুর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের র‍্যাব-১ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর এ এস এম মাঈদুল ইসলাম।


তিনি বলেন,২০২০ সালে করোনাকালীন ভিকটিমের পরিবারের সবাইকে

আরবি পড়ানোর জন্য গৃহশিক্ষক হিসেবে ভিকটিমের বাবা সাইদুল নিয়োগ করে।সে প্রতিনিয়ত ভিকটিমের বাসায় যাওয়া-আসা করত। একপর্যায়ে ভিকটিমের পরিবারের সাথে তার সু-সম্পর্ক তৈরি হয় এবং  ভিকটিমকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতে ৫-৬ মাস আরবি শিখানো বাসা থেকে বন্ধ করে দেয়।শুধু তাই নয় পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত সাইদুল বিভিন্ন প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড করায়  ভিকটিমের পরিবার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ভিকটিম

গাজীপুর সদর থানায় বিভিন্ন সময়ে তাকে উত্যক্ত করার বিষয়ে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। যার প্রেক্ষিতে গ্রেফতারকৃত

সাইদুল কিছুদিন ভিকটিমকে উত্যক্ত করা হতে বিরত থাকে। কিন্তু গত ২ মাস ধরে ভিকটিমের কলেজে এবং বাসার

বাহিরে যাওয়া-আসার পথে পুনরায় তাকে উত্যক্ত করতে থাকে এবং বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হলে ভিকটিমকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। 


র‍্যাব আরও বলেন, একপর্যায়ে গ্রেফতারকৃত জানতে পারে যে ভিকটিমের পরিবার ভিকটিমকে উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাহিরে প্রেরণের

প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিষয়টি গ্রেফতারকৃত সাইদুল কোনভাবেই মেনে নিতে না পেরে ভিকটিম ও তার পরিবারের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে।


মেজর মাঈদুল ইসলাম বলেন, পূর্বপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য

স্থানীয় বাজারে কামারের দোকানে থেকে গত ৮ মে সন্ধ্যায় ছুরি সংগ্রহ করে ভিকটিমের বাসায় গিয়ে তার রুমে ঢুকে ধারালো ছুরি  উপর্যুপুরি ছুরিকাঘাত করে। এ সময় ভিকটিমের চিৎকারে তার মা ও দুই বোন দৌড়ে তার ঘরে গিয়ে তাকে

বাঁচানোর চেষ্টা করলে গ্রেফতারকৃত ছুরি দিয়ে তাদেরকেও এলোপাথাড়িভাবে কুপিয় জখম করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে

যায়।তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ

হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন এবং ভিকটিমের মা ও ছোট ২ বোনের গুরুত্বতর আহত হয়।


পরে উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের পিতা

বাদী হয়ে গাজীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।


র‍্যাব বলেন,ঘটনার পর থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেয়ার জন্য সে নিজের চেহারা

পরিবর্তন করে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে তার এক বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে আত্মগোপনে থাকাকালীন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে

গত রাতে র‍্যাব সাইদুল ইসলাম কে গ্রেফতার হয়।গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024