আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। তার পর তো টানা দুই জয়ে সিরিজ ২-০ তেও নিশ্চিত করেছে। তবে দুটি ওয়ানডেতেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচটিতে আয়ারল্যান্ডের দেওয়া ৩২০ রানের বড় লক্ষ্য চেজ করে জিততে হয়েছে। তৃতীয় ম্যাচটিতেও হারতে বসা বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে মোস্তাফিজ-শান্ত-হাসানের দারুণ বোলিংয়ে। স্নায়ুক্ষয়ী দুটি ম্যাচের ভিন্ন দুটি অভিজ্ঞতা আসন্ন বিশ্বকাপের আগে দারুণ কাজে দেবে বলে মনে করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

দুই বছর আগেও এই শান্তর পারফরম্যান্স নিয়ে বিস্তর সমালোচনা ছিল। তার পর তো নিজেকে আমূল বদলে ফেলেছেন। ব্যাট হাতে বইয়ে দিচ্ছেন রানের বন্যা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি, প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট-সবকিছুই পেয়েছেন তিনি। হয়েছেন সিরিজ সেরাও। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। তার আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা সিরিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে নিজস্ব মূল্যায়ন দিয়েছেন তিনি, ‘যেটাতে ৩২০ চেজ করলাম, মনে হয় এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের পরিস্থিতি বিশ্বকাপে আসতেই পারে। বিশেষ করে বড় দলের বিপক্ষে। দুই ধরনের অনুভূতিই পেলাম কীভাবে চেজ করতে হয় বা ডিফেন্ড করতে হয়। দুটো ম্যাচের অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপে আমাদের খুব কাজে দেবে। আশা করি, সামনে এমন পরিস্থিতিতে পড়লে আমরা ভালো করতে পারবো।’


তিন ম্যাচে শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে ১৯৬ রান। শেষ ম্যাচে বোলিংয়েও অবদান রেখেছেন। ফিল্ডিংয়ে ছিলেন দুর্দান্ত। ভবিষ্যতেও এমন পারফরম্যান্স করে যেতে চান তিনি, ‘পুরো সময়টা সবাই দলের জন্য অবদান রাখার চেষ্টা করেছি। খুব ভালো একটা অভিজ্ঞতা ছিল। এটা যদি কন্টিনিউ করতে পারি, তাহলে সামনের দিকে আরও ভালো কিছু করতে পারবো।’

গত রবিবার হ্যারি টেক্টর ও লরকান টাকার মিলে যখন আয়ারল্যান্ডকে শক্ত অবস্থানে নিচ্ছিলেন, তখনই অধিনায়ক তামিম ইকবাল বল তুলে দেন শান্তর হাতে। নিজের পঞ্চম বলেই টেক্টরকে ফিরিয়ে ৭৯ রানের জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন তিনি। যদিও বিষয়টি নিয়ে মাতামাতি করতে বারণ করেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার, ‘বোলিংটা খুব ভালো হয়েছে বলবো না। তিন ওভার বল করেছি। অধিনায়ক বল দিলে চেষ্টা করবো আবারও ভালো বল করার। এটা নিয়ে খুব মাতামাতি করার কিছু নেই যে আমি একদিন তিন ওভার বল করে অনেক কিছু করে ফেলেছি।’

ব্যাটিং-বোলিংয়ে অবদান রাখার পর শান্তকে পুরো মাঠেই সরব থাকতে দেখা গেছে। শেষ ওভারে যখন হাসান মাহমুদ বল করছিলেন, বাউন্ডারি রোপ থেকে দৌঁড়ে এসে হাসান মাহমুদকে পরামর্শও দিচ্ছিলেন তিনি। এমনকি অধিনায়ক তামিম ইকবালকেও নানা সময় পরামর্শ দিতে দেখা গেছে। এমনিতেও ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে শান্তর নাম বেশ আলোচনাতেই আছে। মাঠে নিজের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় যখনই ফিল্ডিং করি, সবাই চেষ্টা করি হেল্প করতে। যদি কোনও আইডিয়া থাকে সেটা বোলার বা অধিনায়ককে দেওয়ার চেষ্টা করি। আলহামদুলিল্লাহ সেটা করতে পেরেছি। এতে যদি দলের উপকার হয়ে থাকে, তাহলে ভালো লেগেছে অবশ্যই। সবসময় চিন্তা থাকে কীভাবে দলের হয়ে অবদান রাখতে পারি অথবা ভালো ফিডব্যাক দিতে পারি।’

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2023