◾ নাজমুন নাহার লেখালেখির সাথে জড়িত ক্লাস সেভেন থেকে। ডাইরির খাতা ভরতাম অবসরে।২০২০ সালের শেষ দিকে ২১ সালের প্রথমে অনলাইনে লেখা আরম্ভ করি। সেই থেকে এখনো চলছে। যৌথ বই হয়েছে প্রায় ১৫ টি একক করেছি এখন পর্যন্ত (১)একটি। ইচ্ছে করলে একক দশটি(১০টি) বই এ মুহুর্তে করতে পারি। কিন্তু সাহস পাই না পাঠক বই কিনে পড়ে না অনলাইনে পড়ে নেয়। আমাদের মত লেখকদের এখানেই সমস্যা।


প্রতিভা অনলাইনে বন্দী। আগামী প্রজন্ম বইয়ে নয়, আমাদের খুঁজে বের করবে অনলাইনে যদি বা কেউ চিনে তবে। অনলাইনে হাঁটাহাঁটির কারণে। সাহিত্যের অনেক ইতিবাচক নেতিবাচক ঘটনার সাক্ষী হয়ে শুধু একা থাকতে ইচ্ছে করলো না, সাথে আপনাদের ও রাখার উদ্দেশ্যে আজ এই লেখা। অনেক সংগঠনের সাথে জড়িত প্রথমদিকে প্রায় সব কয়টিতে লিখতাম এখন লিখি না।


বেছে বেছে যে সব সংগঠন কবিতার ভুলভ্রান্তি ধরিয়ে শুদ্ধ করার সুযোগ করে দেয়, সে সব সংগঠনে লিখি। এতে নিজের যেমন শেখা হয়, তেমন পরিশুদ্ধ একটা কবিতা পাঠকের বরাবরে পৌঁছাতে পারি।যা মনে আত্মতৃপ্তি এনে দেয় যে, অন্তত পাঠক কে ঠকানো হয় না বলে, এটা একটা পজিটিভ দিক।কিন্তু এমন অনেক সংগঠন আছে যারা লেখক যাহাই লিখে তাহাই সনদ করে দেয়। এ সনদ যারা বয়সে ছোট মূলত তাদের অন্ধকারেই রাখা হয়।


চাকরির ক্ষেত্রে,পড়ালেখার ক্ষেত্রে সৃজনশীল কাজের দক্ষতা খোঁজা হলে তারা এই ভুলে-ভরা সনদ চাকরি বা লেখাপড়ার অগ্রগতির ক্ষেত্রে উপস্থাপন করে নিজেদের দক্ষতার পরিচয় দিয়ে কামিয়াবি লাভ করে।এতে তার ব্যক্তিগত লাভ হলেও স্বচ্ছতা দূরীভূত হয়। তার কর্মে শুদ্ধতার কতটুকু স্থান পেলো ? পাঠকের মাঝে প্রশ্ন রেখে গেলাম। হাতেগোনা কয়েকটি সংগঠন আছে যারা শুদ্ধ বাংলা ভাষায় সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।যা প্রশংসার দাবিদার।


আবার এমন অনেক সংগঠন আছে যারা নিজেদের প্রচার-প্রসারের জন্য হোক বা লেখকদের উৎসাহ দিতে হোক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।নিঃসন্দেহে এটা একটা ইতিবাচক দিক। কিন্তু প্রতিযোগিতার বিচারকার্যে যখন যাঁরা লিখেন তাদের থেকে অযোগ্য বা অজ্ঞ লোক তাদের বিচার করে,আবার জনগণের ভোটের ঘরে তাদের যোগ্যতার মাপকাঠি যাচাই করতে দেয়া হয়, তখন যিনি প্রতিযোগী তার মন ভেঙ্গে যায়। সেদিন তো এক প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়া এক লেখক দুঃখ করে বলেই ফেলছেন, যদি জানতাম বিচারকার্যে জনৈক ব্যক্তিবর্গ থাকবেন বা ভোট খুঁজতে জনগণের দুয়ারে হাঁটতে হবে তাহলে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণই করতাম না। এটা যে শুধু সাহিত্যের ক্ষেত্রে তা নয় প্রায় প্রতিটা সেক্টরে এ ধরনের অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়। যাই হোক যে কোন কাজেরই ভুলভ্রান্তি আলোচনা-সমালোচনা থাকবে যা হয়তো যারা আয়োজক তাদের চোখে নাও পড়তে পারে কারণ মানুষ সর্বজ্ঞ নয়। ভুলভ্রান্তির ঊর্ধ্বে নয়। আমার এ লেখা জানিনা বিজ্ঞজনদের চোখে পড়বে কিনা যদি পড়ে অনুরোধ থাকবে যখন কোন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন তখন যেন অজ্ঞ দিয়ে বিজ্ঞ যাচাই না হয়, অর্থাৎ আমি বলতে চাচ্ছি যারা বিচারক থাকবেন তাদের ছন্দ জ্ঞান মাত্রা জ্ঞান গদ্য পদ্য কবিতার নিয়মকানুন অনেক বেশি জানা থাকা চাই কারণ যাঁরা অংশগ্রহণ করেন তাদের মধ্যে অনেকে এত বেশি জানেন যে হয়তো আয়োজকদের ধারণার বাহিরে সুতরাং প্রতিযোগিতা শেষে যেন ফললাভের সুখ টুকু তাদের মনে পীড়া না দেয়, বা যাঁরা উত্তীর্ণ হতে পারেননি তাদের যেন সখেদে বলতে না হয় বিচারকার্য ঠিক হয়নি।


আমার কথায় ভুল বুঝবেন না একটু চিন্তা করবেন সবার মত আমিও চাই শুদ্ধ বাংলা সাহিত্য চর্চায় বেরিয়ে আসুক কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ জসীমউদ্দীন, হুমায়ূন আহমেদ এর মত গুণীজন। জানি না আমাদের সেই অতীত গুণীদের হাল ধরতে আর কত প্রজন্মের অপেক্ষা করতে হবে আমাদের?


লেখক - কবি , প্রাবন্ধিক ও সিনিয়র শিক্ষিকা । 

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024