◾ নিউজ ডেস্ক


ব্যাংক খাতের পর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেখানে রাখা হয়েছে তিনবারে ১৬ বছর মেয়াদী ঋণ পুন:তফসিল সুবিধা। পাশাপাশি রাখা হয়েছে মাত্র ৪ শতাংশ ডাউনপেমেন্টে ঋণ নবায়নের সুযোগ। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ ‘ঋণ পুনঃতফসিলে’ এমন নীতিমালা জারি করেছে।


নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, যদি কোনো গ্রাহক পূর্বেই তিনবার ঋণ পুন:তফসিল করে থাকে তবে তাকে বিশেষ বিবেচনায় আরও একবার সুযোগ দেওয়া যাবে। চতুর্থ দফা পুন:তফসিলের পরও গ্রাহক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তিনি স্বভাবজাত বা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন। তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।


এর আগের মাস্টার সার্কুলারে চতুর্থবার ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের সুযোগ ছিল না। কিন্তু প্রস্তাবিত মাস্টার সার্কুলারে চতুর্থবার ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের সুযোগ রাখা হয়েছে। আগের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল ‘কোনো ঋণ তিনবারের বেশি পুনঃতফসিল করতে পারবে না।’ বলা হয়েছিল, তৃতীয় দফা পুনঃতফসিলের পরও গ্রাহক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তিনি স্বভাবজাত বা ইচ্ছাকৃত খেলাপি বিবেচিত হবেন। নতুন নির্দেশনা মতে, এখন থেকে চারবারের বেশি পুনঃতফসিল করতে পারবে না গ্রাহক।


বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় ‘ঋণ পুনঃতফসিলে ডাউনপেমেন্টের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে বকেয়া ঋণ স্থিতির ৪ শতাংশ বা মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির যথাক্রমে ৭ শতাংশের যে অঙ্কটা কম। পূর্বে ছিল ১৫ শতাংশ। পুন:তফসিলকৃত এই ঋণ পরিশোধে সময় দেওয়া হয়েছে ছয় বছর। সুতরাং ঋণ পুন:তফসিলে এখন আর মোটা অঙ্কের টাকা গুণতে হবে না। স্বল্প অর্থে ঋণ নবায়নের সুযোগ করে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দ্বিতীয় দফায় পুন:তফসিলের জন্য গুণতে হবে মোট ঋণের ৫শতাংশ বা বকেয়া কিস্তির ৮শতাংশের মধ্যে যেটা কম সে পরিমাণ অর্থ। পূর্বে যা ছিল ২০ শতাংশ। এর জন্য পাঁচ বছর সময় পাবেন গ্রাহক। তৃতীয় ও সর্বশেষবারের জন্য রাখা হয়েছে ৬ শতাংশে ঋণ পুন:তফসিলের সুযোগ। অথবা বকেয় কিস্তির ৯ শতাংশ। পূর্বে যা ছিল ঋণের ৫০ শতাংশ। তৃতীয়বার পুন:তফসিল করেও সেই ঋণ শোধ করার জন্য আরও পাঁচ বছর সময় পাবেন গ্রাহক। সুতরাং তিনবার পুন:তফসিল করলে সামষ্টিকভাবে ১৬ বছর সময় পাবেন বকেয়া ঋণ পরিশোধের জন্য।


নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, প্রকৃত আদায় ব্যতিরেকে পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনকৃত ঋণের বিপরীতে কোন অর্থ আয় খাতে নেওয়া যাবে না। আধিগ্রহণকৃত ঋণের ক্ষেত্রে পূর্বের ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পুনঃতফসিল/পুনর্গঠনকে বিবেচনায় নিতে হবে, যা সর্বোচ্চ চার বার হিসাবয়নের ক্ষেত্রে গণনায় নিতে হবে। জাল-জালিয়াতির ঋণ এই নীতিমালার আওতায় পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন করা যাবে না। গ্রহকের অস্তিত্ব, ঋণের সদ্ব্যবহার, জামানত ইত্যাদি যাচাই করে নথিতে রাখতে হবে।


একইভাবে পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন করার জন্য নির্দিষ্ট ছকে তথ্য নিতে হবে এবং পরিদর্শনের সুবিধার্থে নথিতে সংরক্ষণ করতে হবে। পুনঃতফসিল করার সময় কস্ট অব ফান্ড কাভার না করে কোন সুদ মওকুফ করা যাবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনকালে নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটিয়ে পুনঃতফসিল হলে পরিদর্শন দল তা বাতিল করতে পারবে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024