ছোটবেলায় কোনো আত্মীয়ের বাসায় গেলে যখন আমার থেকেও অন্যান্য আত্মীয়ের বাচ্চাদের বেশি প্রাধান্য দিতো সবাই,তখন বিষয়টি দেখে অনেক কষ্ট পেতাম!দূর থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম সবার খুনসুটি।কেউ কাছেও টেনে নিতো না!

দুঃখ পেতাম খুব!

বাড়িতে এসে কাঁদতাম। মা-বাবা বোঝালেই বুঝ মেনে নিতাম অনায়াসে।অবুঝ ছিলাম তো তখন।

বড় হওয়ার পর দূর থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম, স্কুল,কলেজ আর ইউনিভার্সিটির বন্ধুরা সবাই মিলে আড্ডা দিতো।ওদের কাছে নিজের কোনো প্রায়োরেটি না পেয়ে আমি নিজেকে সবসময় গুটিয়ে রাখতাম। 

বন্ধু-বান্ধব থাকে না?ঐ যে,বন্ধুর জন্য অপর বন্ধু জী ব ন দিয়ে দেয়,ঠিক তেমন কোনো বন্ধু নেই আমার জীবনে। 

অফিসের অন্যান্য কলিগরা একসাথে বসে বসে খুনসুটি আড্ডা দিতো।দূর থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছি। কিন্তু আমার কোনো কথা কিংবা আমাকে কেউ এতটা গুরুত্ব দেয়নি কখনো।

ব্যক্তিজীবনেও এমন কেউ নেই,যার এই আমিটাকে ছাড়া একমুহূর্তও চলবে না,যার জীবনে আমার প্রায়োরেটি অনেক। আসলে এই বয়সে এসে সবই বুঝতাম,অবুঝ ছিলাম না তো।

ধীরে ধীরে আরও বড় হতে হতে জীবনের প্রায় সব কঠিন বাস্তবতা উপলব্ধি করে এসেছি। বাস্তবতা এমন হলেও,সবকিছু আসলে Notice করতে নেই। কিন্তু ঠিক ক'টা এড়িয়ে যাবো,বলুন?মানুষ তো,অনুভূতি, আবেগ সবই আছে আমার।

আজকের এই আমি একা একা হাঁটছি!

মাঝে মাঝে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছি,আবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।কিন্তু একা একা এভাবে আর কত?আমিও যে ক্লান্ত হই,আমাকেও যে অবসাদ ঘিরে ধরে!অবহেলার ভয়ংকর রূপ,এই আমি ছাড়া আর কে দেখে আসছে জীবনভর?

লেখক : প্রণব মন্ডল, কবি & শিক্ষার্থী ;খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024