মেয়ের পারিবারিক সমস‍্যা নিয়ে ঘর জামাই শ্বশুরের দ্বন্দে প্রাণ গেল অন‍্যের।

এমনই ঘটনার অবতারণা হয়েছে দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯নং আশ্করপুর ইউনিয়নের সুন্দরা মুকুন্দপুর গ্রামে।

 দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯নং আশ্করপুর ইউনিয়নের নূর মোহাম্মদ ঘড় জামাই এর দেশীয় অস্ত্র(দা)এর আঘাতে প্রতিবেশী শ্বশুর মোঃ সোবাহান( ৪৫) ঘটনাস্থলেই মৃত‍্যুবরন করেছে।

৬জুন মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৯টা ৩০মিনিটে ৯নং আশ্করপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সুন্দরা মুকুন্দপুর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।   

নিহত মোঃ সোবাহান মুকুন্দপুর গ্রামের মোঃ আমিনুল ইসলামের ছেলে।এবং ঘাতক নূর মোহাম্মদ,মোঃ গনি জব্বারের ছেলে এবং অত্র এলাকার জয়নাল আবেদিনের ঘড় জামাই।বিয়ের পর থেকেই মেয়ে জামাইয়ের দ্বন্দ লেগেই থাকত।বেশ কয়েকবার গ্রাম‍্য সালিশ হয়েছে।কিন্তু কোন ফল হয়নি।

স্থানীয় এলাকবাসী ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মোতাহার হোসেনের দেয়া তথ‍্য মতে জানা যায় অত্র গ্রামের জয়নাল আবেদিনের মেয়ের সাথে জামাই নূর মোহাম্মদ এর বিয়ের পর থেকেই নূর মোহাম্মদ ঘড় জামাই থাকতো।কিন্তু স্বামী স্ত্রীর মধ‍্যে কোন বনীবনাত ছিল না।বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে ।তার ছেলে ও মেয়েসহ ৩টি সন্তান রয়েছে।নূর মোহাম্মদ মেয়ে ও স্ত্রীর কোন সাংসারিক খরচ বহন করতে চাইতো না।এমনকি তাদের নূর মোহাম্মদ নানাভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।দীর্ঘদিন থেকে এইভাবে চলে আসতে থাকায় জয়নাল আবেদিন পুনরায় গ্রামের গন‍্যমান‍্য ব‍্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে গ্রাম‍্য সালিশের মাধ‍্যমে তার মেয়ের সংসারের সমস‍্যা নিরসন করতে চেয়েছিল।আর উদ্দেশ‍্যেই ৬জুন রাত নয়টায় স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম‍্যান,সাবেক মেম্বারসহ একাধিক ময়মুরব্বির পাশাপাশি নিহত মোঃ সোবাহানও সেই সালিশে উপস্থিত হয়।সালিশে সকলে উপস্থিত হলেও ঘাতক নূর মোহাম্মদ উপস্থিত না হওয়ায় হত‍্যার স্বীকার মোঃ সোবাহান নূর মোহাম্মদকে ডাকতে গেলে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে পূর্ব থেকেই নূর মোহাম্মদের সংগে থাকা গরু কাটার ধারালো দা দিয়ে সোবাহানের ঘাড়ে কোপ দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত‍্যু হয়।। সোবাহানের ফিরতে দেরি হওয়ায় অত্র ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মোতাহার তার বাসায় গিয়ে দেখে মোঃ সোবাহান মাটিতে পরে আছে তখন ঘাতক নূর মোহাম্মদ তাকেও মারতে দা নিয়ে তার পিছনে তাড়া করে।মোতাহার হোসেন পালিয়ে গিয়ে প্রানে রক্ষা পায়।তৎক্ষনাৎ সালিশের জন‍্য উপস্থিত সকলকে বিষয়টি অবগত করার পর তারা গিয়ে দেখে মোঃ সোবানের রক্তাক্ত নিথর দেহ মাটিতে পরে আছে।স্থানীয় লোকজন দিনাজপুর কোতয়ালি থানায় বিষয়টি জানানোর সাথে সাথে কোতয়ালি থানার অফিসার ইন চার্য মোঃ তানভীরুল ইসলামের নির্দেশে এস আই মনির তার সংগীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাল উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন‍্য হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করেন এবং ঘটনাস্থল থেকে তদন্তের স্বার্থে ঘাতক নূর মোহাম্মদের স্ত্রী,কন‍্যা ও তার সন্তান সোহেলকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে স্থানীয় তথ‍্য সুত্রে জানা যায়।কিন্তু এ ঘটনায় কোতয়ালি থানার অফিসার ইন চার্য মোঃ তানভীরুল ইসলামের সাথে মুঠো কথা বললে তিনি প্রতিনিধিকে জানায় আসামী নূর মোহাম্মদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার স্ত্রী সন্তানরাও থানায় রয়েছে বলে সুত্র জানায়।

  অন‍্যের পরিবারের সমস‍্যা নিরসন করতে এসে মোঃ সোবাহানকেই লাশ হয়ে বাসায় ফিরতে হলো।এটা অত‍্যন্ত ন‍্যাক্কারজনক ও হৃদয়বিদারক ঘটনা বলে মন্তব‍্য করেন স্থানীয় একাধিক ব‍্যক্তিবর্গ।


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024