যশোর রোডের ইতিহাস ছায়ার আর মায়ার।

যশোর থেকে নদীয়ার গঙ্গাঘাট পর্যন্ত ৮০ কি. মি. সড়কের ১৬৮ বছর আগে রোপিত প্রবীণ রেইন্ট্রি বৃক্ষগুলো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। রেইন্ট্রির ছায়া আর ফুল এখনো অনেককে আবেগাপ্লুত করে। 

সত্যিকারের গল্প হচ্ছে, যশোরের জমিদার কালী পোদ্দারের মা গঙ্গাস্নানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু কালী পোদ্দার কৃপণ জমিদার। এ কারণে বজরার মাঝি কালীর মাকে বজরায় উঠতে দেয়নি। মাঝি বলেছে, 'তোমাকে নিলে কড়ি পাওয়া যাবে না।' মা মন খারাপ করে বাড়ি ফিরে এ কথা কালী পোদ্দারকে জানান।

কালী আবেগতাড়িত হন। তিনি মা গঙ্গাস্নানে যাবেন এ জন্য সড়ক নির্মাণের ব্রত গ্রহণ করেন। ১৮৪০ সালে যশোর শহরের বকচর থেকে ভারতের নদীয়ার গঙ্গাঘাট পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করেন। হাজার হাজার শ্রমিক রাত-দিন কাজ করে ১৮৪২ সালে সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ করেন। সে সময় সড়ক নির্মাণে দুই লাখ ৫৮ হাজার কড়ি ব্যয় হয়েছিল। এরপর মা ছায়ায় ছায়ায় গঙ্গাস্নানে যাবেন এ জন্য রাস্তার দুই ধারে কালীবাবু বিদেশ থেকে এনে অতিবর্ধনশীল রেইন্ট্রি বৃক্ষের চারা রোপণ করেন। সেই বৃক্ষগুলো যশোর-বেনাপোল রোডকে এখনো ছায়া দিচ্ছে। যশোর থেকে কলকাতা কালীবাবুর এই রাস্তার নাম 'যশোর রোড'।

লেখক: প্রণব মন্ডল, খুলনা ইউনিভার্সিটি।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024