নাটোরের সোনাপাতিল-নলডাঙ্গা মহিলা কলেজে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের প্রতিবাদে মানবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে কলেজ চত্বরে এই কর্মসুচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আমিনুল ইসলাম হাদু, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন আলী, দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, নলডাঙ্গা পৌরসভার কাউন্সিলর মাহবুর রহমান, মাহামুদুল হাসান মুক্তা, শামসুন নাহার, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মিলন, আওয়ামী লীগ নেতা আকতার হোসেন, কলেজের হিসাব রক্ষক কামরুল ইসলাম আজাদসহ আরো অনেকে।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, নাটোর নওগাঁ সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রত্না আহম্মেদের ব্যক্তিগত সহকারী আরাফ মাহতাব প্লাবন সোনাপাতিল-নলডাঙ্গা মহিলা কলেজে পরিচালনা কমিটির সভাপতি হন। তারপর থেকেই ডিগ্রি খোলার নামে ১৬ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পাশাপাশি সাবেক অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম দুনর্ীতি ধামাচাপা দিতে তৎপর রয়েছেন তিনি। আর এই অনিয়ম দুর্নীতিতে প্রকাশ্যে সহযোগিতা করছেন এমপি রত্না আহম্মেদ। এসব অনিয়ম ও দুনর্ীতির প্রতিবাদ করায় সম্প্রতি আব্দুস সালাম নামে এক শিক্ষক কলেজের হিসাব রক্ষক কামরুল ইসলাম আজাদকে বেদম মারপিট করেন। 

এই ঘটনায় বিচারের দাবী জানালেও সভাপতি তার বিচার না করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা অভিযোগ করে বলেন, আরাফ মাহতাব প্লাবনের মত অযোগ্য সভাপতি দায়িত্বে থাকলে কলেজ ধ্বংস হয়ে যাবে। শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি ওই কলেজে টাকার বিনিময়ে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। ডিগ্রি খোলা সহ আরো শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা করছেন। তাকে এই কাজে আর সুযোগ দেয়া হবে না উল্লেখ করে শীঘ্রই কলেজের সভাপতি তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবী করেন বক্তারা। অন্যথায় তারা বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসুচি নেয়া হবে বলেও হুশিয়ারী দেন তারা। পরে তারা সোনাপাতিল বাজারে একটি মিছিল বের করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল আলম জানান, কলেজের অভ্যন্তরীন বিষয়ে প্রভাষক আব্দুস সালাম ও হিসাব রক্ষক কামরুল ইসলামের সাথে কয়েকদিন আগে একটি অনাকাংখিত ঘটনা ঘটে। এবিষয়ে কলেজের সভাপতিকে অবহিত করা হয়। তিনি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন। আর শিক্ষক নিয়োগের অনিয়ম বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। ওইসব নিয়োগ প্রক্রিয়ার পর তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব হাতে পেয়েছেন। এলাকাবাসী একটি মানববন্ধন করেছেন। বিষয়টি উর্ধতন কতর্ৃপক্ষই দেখবেন বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে কলেজের সভাপতি আরাফ মাহতাব প্লাবন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, শিক্ষক নিয়োগে কোন প্রকার অনিয়ম বা টাকা পয়সা লেনদেন হয়নি। সম্পূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক ও বৈধ পন্থায় শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কলেজের হিসাব রক্ষক কামরুল ইসলামকে মারপিটের বিষয়ে পরিচালনা পরিষদ মিলে আলোচনা সাপেক্ষে অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে বৈঠকও হয়েছে। তিনি বলেন, স্থানীয় একটি চক্র তাদের অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছেন এবং মানববন্ধন করেছেন। তাদের অভিযোগের বিন্দু পরিমাণ সত্যতা নেই। আর মাননীয় সংসদ সদস্য রত্না আহমেদকে জড়িয়ে যেসব বক্তব্য দেয়া হয়েছে তা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কলেজ নিয়ে তার কোন প্রকার হস্তক্ষেপ নেই। এমনকি কলেজে নিয়োগ বা কোন বিষয়ে এমপি রত্না আহম্মেদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।

এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য রত্না আহম্মেদ জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। ব্যাক্তিগত মানসম্মান ক্ষুন্ন করতে এবং এলাকায় ভাবমুর্তি বিনষ্ট করতে তারা এ ধরনের মিথ্যাচার করা হচ্ছে। 


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2023