দীর্ঘ ১২ বছর পর কানাডা থেকে দেশে ফিরেছে

 রায়হান । গাড়িতে বসে ঢাকা শহর দেখছে আর ভাবছে এই ক,বছরে কত আপডেট ঢাকাশহর।  আপনমনে গুনগুনিয়ে গাইছে 

আমি এক যাযাবর,পৃথিবী আমারে আপন করেছে

ভুলেছি নিজের ঘর...!

পাশে বসা বন্ধু মুরাদ পিঠ চাপড়ে বলছে দোস্ত কিভাবে এতদিন তুই দেশে না এসে থাকতে পারলি।

রায়হান দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল দেশে আসতে না পারার যে কি কষ্ট তা আমি তোকে বোঝাতে পারবনারে 

দোস্ত ।

মুরাদের বনানীর দ্বিতল ফ্ল্যাটে এসে গাড়ি থামলো ।

দুজনে নেমে আসলো। 

একটি চমৎকার মিষ্টি হাওয়া এসে যেন রায়হানের মন প্রাণ জুড়িয়ে দিল। 

চিৎকার করে বলল রায়হান ,আহারে দোস্ত এই হলো মাতৃভূমির শীতল পরশ । আমি যেন এক মুহূর্তে স্বর্গকে ছুঁয়ে আসলাম ।

ঘরে ঢুকে দুজনে ফ্রেশ হয়ে খেতে খেতে আবার গল্প মেতে উঠেছে ।কথার ফাঁকে রায়হান বলল মুরাদ তুই কেন এখনো বিয়ে করলি না দোস্ত?

মুরাদ হেসে বলল তুই তো জানিস দোস্ত এই বিয়ে নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ ছিল না কখনো।এই তো বেশ আছি।

তো তুই এবার বিয়ে করবি তো?

রায়হান একটু চুপ থেকে বলল দেখা যাক সবেমাত্র আসলাম ।একটু ঘুরে দেখি নিজের স্বদেশ। 

চট্টগ্রাম যাব বাবা মায়ের কবর জিয়ারত করে আসব।আত্মীয় স্বজনের সাথে দেখা করে আসব। বড় ভাই তো দেশের বাইরে এখানে আর তো তেমন কাছের কেউ নেই। 

তোর এখানে থাকলে কি কোনো সমস্যা হবে ?

দূর কি সমস্যা হবে আমি তো একা আছি। তোর যতদিন ইচ্ছে থাকতে পারবি দোস্ত ।

পরের দিন চট্টগ্রামের এসে পৌঁছাল রায়হান । সেই চিরচেনা চট্টগ্রাম নগরী ও বেশ অচেনা লাগছে।কত কিছু পরিবর্তন হয়েছে।বেশ ভালোও লাগছে সব কিছু মিলিয়ে । চট্টগ্রাম এসে মন খুঁজে বেড়াচ্ছে ফেলে যাওয়া প্রিয় মানুষটিকে ।

কোথায় আছে ইরা ? কেমন আছে? বড্ড জানতে ইচ্ছে করছে 

কিন্তু কে দেবে ইরার খোঁজ?

ইরা খুব বই পড়তে ভালোবাসত। প্রায় প্রতি মাসে রায়হান ইরাকে কয়েকটি বই উপহার দিত।আর ইরা বইগুলো পড়ে বিভিন্ন জায়গায় কবিতা আবৃত্তি করত। বন্ধুদের আড্ডায় কোনো গল্পের অংশবিশেষ শোনাত। এই বিষয়গুলো রায়হানের বেশ ভালো লাগতো।

ইরার সাথে কাটানো কত স্মৃতি মনে পড়ে গেল  রায়হানের।

চট্টগ্রামের  কাজ শেষ করে ঢাকা চলে যাচ্ছে রায়হান ।

সোনার বাংলা ট্রেনে উঠতেই পেছন ফিরে প্রিয় শহরটা একবার দেখল আর চাপা কস্ট নিয়ে বিড়বিড় করে বলল ইরা একটিবার যদি তোমাকে দেখতে পারতাম !

বগির ভেতরে ঢুকতেই  রায়হানের চোখ পড়ল একজন মাঝবয়সী মহিলা মুখের উপর একটি বই ধরে আছে। তার পাশে তিন চার বছরের ছোট্ট একটি মেয়ে চিপস খাচ্ছে আর মোবাইলে গেইম খেলছে।পিছনেই ছিল রায়হানের সিট।

রায়হান সিটে বসল  মহিলার মুখটা খেয়াল করার চেষ্টা করতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল।একি এ তো ইরা! এখনো সুন্দর চোখ জোড়া চিনতে একটু ও ভুল হলো না রায়হানের ।

বাচ্চাটি কি যেন বলতেই বইটা বন্ধ করে ইরা মেয়ের দিকে তাকাতেই রায়হানের চোখে চোখ পড়ল।ইরা তো আরো হতবাক সে কি সত্যি দেখছে? এটা কি রায়হান? দূর কি ভাবছে ইরা এসব লোকটা রায়হানের মতো দেখতে লাগলেও একটু মোটা সোটা।এটা রায়হান না ।আর ও কোথা থেকে আসবে এখানে।ওর এক বন্ধুর থেকে জেনেছি ও দেশে নেই ।

ইরা আর তাকালো না । বাচ্চাটিকে জল খাইয়ে মুখ মুছিয়ে দিয়ে আবার বইটি হাতে নিতে যাবে এমন সময় রায়হান বলে উঠলো ইরা তোমার এখনো বই পড়ার অভ্যাস কি আগের মতো রয়ে গেল?

সেই চিরচেনা সুরে নিজের নামটি শুনে চমকে গেলেন ইরা । পেছন ফিরে তাকিয়ে বলল তুমি? এখানে কিভাবে ? মানে শুনেছিলাম তুমি দেশের বাইরে থাক।

সব বলব ইরা ।কিন্তু আমি ভাবছি এমন কাকতালীয় ভাবে আমাদের দেখা হয়ে গেল। একটু আগেও কষ্ট পাচ্ছিলাম তোমার সাথে দেখা হলো না বলে।সত্যি আমাদের বোধহয় দেখা হওয়ারই ছিল।

রায়হানের পাশের সিটের ভদ্রলোককে অনুরোধ করে ইরা সিটটা চেইঞ্জ করে রায়হানের পাশের সিটে আসলো।

কথায় আড্ডায় ফিরে গেল দুজনে ১২ বছর আগের পুরনো স্মৃতিময় দিনগুলোর কাছে। 

রায়হান বলা শুরু করল কেন যেতে হলো দেশের বাইরে হঠাৎ ।কেন ইরাকে জানানোর সুযোগ হয় নি ।

বড়ভাই হঠাৎ সব ঠিকঠাক করে ফেলল আমার বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে ।আমাকে শুধু বলা হলো ঢাকা যাও কিছু কাজ আছে তাই কয়েকদিনের জন্য ঢাকা গেলাম দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাসায় থেকে সব ফরমালিটি শেষ করে একদিন এর জন্য চট্টগ্রাম আসলাম মাকে সালাম করে চলে যেতে হলো ঢাকা।কারো সাথে দেখা করার সুযোগ পাইনি।এক সপ্তাহ পর চলে গেলাম কানাডা। পাঁচ বছর আগে আম্মা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন ।আমি আসতে পারিনি।বড় ভাই এসেছিল।

ইরা বলতে শুরু করল সেই যে গেলে আর ফিরলে না। আমি তোমার কয়েকজন বন্ধুর থেকে খোঁজ নিয়েছি ।বলল উচ্চ শিক্ষার জন্য বাইরে চলে গেছ। 

সত্যি আমাদের ভার্সিটির জীবন গুলো ছিল জীবনের অন্যতম সেরা দিন। তোমার দেয়া সব বইগুলো আজো আমার নিসঙ্গতার সঙ্গী ।

ইরাকে থামিয়ে দিয়ে রায়হান বলল নিসঙ্গ কেন বলছ? তোমার সংসার সন্তান সব তো আছে।

ইরা এবার টলমল চোখের পানিতে বলে চলছে তাঁর জীবনের দুর্ঘটনার কথা।রায়হান ইরার মেয়েটাকে  কোলে তুলে নিল ।ঘুমিয়ে পড়েছে মেয়েটা।কি মিষ্টি মায়াবী হয়েছে মেয়েটা।ইরার মতো সুন্দর চোখ জোড়া পেয়েছে। 

ভার্সিটির পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে করলাম শাকিলকে। ইঞ্জিনিয়ার ।

একটি বেসরকারি কোম্পানিতে জব ছিল। মোটামুটি ভালো কাটছিল আমাদের সংসার। বেশ অনেকদিন আমাদের সন্তান আসছে না দেখে আমরা ভারতে গেলাম চিকিৎসা করাতে।  

এরপর আমাদের কোল জুড়ে আসলো আমাদের মেয়ে টুসি। দুজনের খুশির অন্ত ছিল না টুসিকে  আমাদের জীবনে পেয়ে । শাকিল চোখে হারাত মেয়েকে।

দুই বছর আগের কথা টুসির বয়স দুই বছর তখন। আমরা ঘুরতে গেলাম কক্সবাজার ।বেশ আনন্দে দুদিন কাটালাম।

ফেরার পথে নির্মম সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়লাম ।

মা মেয়ে কোনোভাবে বেঁচে গেলেও হারিয়ে ফেলেছি শাকিলকে। অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম ওকে বাঁচাতে । আমার পৃথিবীটা আলোহীন হয়ে গেল। বাঁচার ইচ্ছেটুকু মরে গেল।

কথাগুলো বলতে বলতে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করল ইরা।

ইরার দুচোখ বেয়ে অশ্রুধারা বয়ে চলছে।

রায়হান একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল।এমন সংবাদ শোনার জন্য তৈরী ছিল না সে।কি বলবে ইরাকে বুঝতে পারছে না। কিভাবে সান্ত্বনা দিবে? 

ইরার হাতটি ধরে বলল , প্লিজ এভাবে কেঁদো না তোমার সন্তানের জন্য শক্ত হতে হবে তোমাকে । তোমাকে বাঁচতে হবে টুসির জন্য ।

ইরা চোখ মুছতে মুছতে বলল ওর জন্য তো বেঁচে আছি এখনো। ওর মুখের দিকে তাকিয়ে দুঃখ ভুলতে চেষ্টা করি। তবুও ভেতরের কষ্টে আমি প্রতি মুহূর্তে দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছি। আমি নিজেকে সামলাতে পারিনা। মাঝে মাঝে ভাবি এর নাম কি জীবন? এটাকে কি বেঁচে থাকা বলে?

রায়হান যে ভেতরে ভেতরে ইরাকে ভালোবাসত সে কথা ইরা জানতো না । ইরা জানতো ওরা ভালো বন্ধু ছিল। হৈ চৈ করে সব বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিত ।ঘুরতে যেত। আলাদা করে কখনো ইরা রায়হানের দুর্বলতা টের পায়নি।রায়হান ও মুখ ফুটে বলেনি। সময়ের অপেক্ষা করেছিল।

কিন্তু সে সময় তাদের পথের দুরত্ব এতটাই বাড়িয়ে দিয়েছে যে কেউ কারো সাথে যোগাযোগ পর্যন্ত করতে পারেনি। 

অনেকক্ষণ চুপচাপ থাকার পর রায়হান বলল ঢাকা কোথায় যাচ্ছ? কেন যাচ্ছ? কোনো বিশেষ কারণ আছে?

ইরা বলল হুম আমি একটি এনজিও সংস্থায়  কাজ করি। ঢাকায়  মিটিং আছে । আগে মামা শশুড়ের বাসায় যাব একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে।এই দুবছর কোথাও বের হইনি।অনেক জোরাজুরি করল মামা শশুড় তাই যেতে হচ্ছে ।

রায়হান বলল ভালো করেছ মেয়েটার তো কোথাও যেতে ইচ্ছে করে বলো ।

ইরা বলল হুম সেই জন্য তো।

দুজনের দীর্ঘ আলাপচারিতায় কবে যে ট্রেন স্টেশন পৌঁছাল কেউ টের পেলনা।

স্টেশনে নামলো দুজনে ইরাকে ওর মামা শশুড়ের বাসায় পৌঁছে দিল রায়হান ।

ইরা গাড়ি থেকে নেমে রায়হানের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দু ,পা বাড়িয়েছে অমনি পেছন থেকে রায়হান ডাক দিয়ে বলল ইরা আমার সাথে কি দেখা করতে পারবে আর একবার? তুমি সময় করে জানাই ও আমার নাম্বার তো আছে। 

ইরা একটু চুপ থেকে বলল ঠিক আছে জানাব।সাবধানে যেও।

ঠিক তিনদিন পর ইরার কল ।রায়হান তো খুশিতে পাগল হয়ে যাচ্ছে । নিশ্চয়ই ইরা দেখা করার জন্য কল দিয়েছে। কল রিসিভ করল ।কুশল বিনিময় করে ইরা বলল আজ বিকেলে বের হবো ।

রায়হান বলল ঠিক আছে আমি নিতে আসব তোমাকে ।

বিকেল পাঁচটা ইরা রেডি হয়ে বাসার নীচে দাঁড়ালো ।১০ মিনিট পর রায়হান এসে গাড়িতে তুলে নিল ।গুলশানের একটি কফি শপে দুজনে বসলো।

রায়হান আজ ঠিক করেছে ইরাকে সে জানাবে তাঁর ভালোবাসার কথা। ইরা যেভাবে নিবে নিক আর লুকিয়ে রাখবে না কথাটি।

রায়হান ইরার হাতটি ধরে বলল ।ইরা তুমি কি কখনো বুঝতে পারো নি, আমি যে তোমার প্রতি দুর্বল ছিলাম ।আমি ভেতরে ভেতরে তোমাকে প্রচন্ড ভালোবাসতাম।

ইরা বলল নাতো। আমি আসলে এইভাবে ভাবিনি কখনো । মনে হতো সবাই তো বন্ধু । তুমি তো জানাতে পারতে তখন। বলোনি কেন?

রায়হান বলল ইরা সময়ের অপেক্ষা করেছি ।কিন্তু সময় বড় স্বার্থপর ।সে তাঁর নিজের গতিতে চলে।

কারো জন্য অপেক্ষা করে না।

ইরা জানিনা তুমি আমার কথাটা কিভাবে নিবে তবু ও একটি কথা আজ আমি তোমাকে বলতে চাই যদি তুমি অনুমতি দাও।

ইরা বলল, বলো ।

ইরা আমি আমার জীবনের বাকী সময়টুকু  তোমার সাথে টুসির সাথে থাকতে চাই।আমাকে কি সে সুযোগ দেয়া যায়?

ইরা কাঁদছে কি বলবে রায়হান কে। ফিরিয়ে দেবে নাকি কাছে টেনে নিবে। কিছুই ভাবতে পারছে না।শাকিলের কথা খুব মনে পড়ছে।আজ তাঁর পায়ে হাজারটি শেকল। নিজের সুখ  মেয়ের সুখ চাইলে সমাজ আঙুল তুলবে। 

আবার সমাজের কথা ভাবতে গেলে ইরা আর টুসি অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে যুদ্ধ করবে। সেই যুদ্ধে কাউকে পাশে পাবে না সেটাও দিবালোকের মতোই সত্যি ।

কোনদিকে যাবে ইরা?

ইরা রায়হানের দিকে তাকিয়ে বলল আমাকে একটু সময় দাও । আমি টুসি কি বলে দেখি আর আমার পরিবারের সাথে ও কথা বলতে হবে।

রায়হান বলল এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের একটি সিদ্ধান্তে যেতে হবে ইরা।

আমার হাতে সময় খুব কম। আমি আর দু ,সপ্তাহ থাকব দেশে। যদি তুমি রাজি থাকো তাহলে তোমার টুসির কাগজপত্র সাথে নিয়ে যাব।তোমরা কয়েকমাস পর কানাডা আসবে। আমি ওদিক থেকে রিসিভ করব তোমাদের।

 ইরা বাসায় এসে ভাবনার গভীরে ডুবল ।কি করবে কি করা উচিত তার ? শাকিলের পরিবার কিভাবে নিবে বিষয়টা। টুসির ভবিষ্যতের কথা ও ভাবতে হবে।শাকিল কেন আমাকে এতটা অসহায় করে ছেড়ে চলে গেলে? আমাকে বলে দাও তুমি আমি কি করব? ইরা তাঁর ছোট্ট মেয়েটার মতামত নিল সবার আগে।

টুসি শুধু বলল মা আংকেল কি আমার পাপা হবে? ইরা কেঁদে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল হে মা।

পরিবারের সদস্যদের কারো কারো মতবিরোধ থাকলেও ইরার মা শক্ত ভাবে ইরা টুসির পাশে দাঁড়াল ।সবাইকে বুঝিয়ে বলল ইরা টুসির ভবিষ্যতের দায়িত্ব যখন কেউ নিতে পারবে না তাহলে এই সিদ্ধান্ত সকলের মেনে  নেওয়া উচিত । ইরার ও দীর্ঘ জীবন পড়ে আছে। ওর একজন সঙ্গী প্রয়োজন ।অতঃপর সবাই মেনে নিল বিষয়টা।

ইরা রায়হান কে জানালো টুসি ইরা দুজনেই তাঁদের সবটুকু দিয়ে রায়হানের পাশে থাকতে চায় ।

তবে কোনো আনুষ্ঠানিকতা নয় পারিবারিকভাবেই এই আয়োজন সম্পন্ন করার অনুরোধ করল ইরা।

রায়হান আজ অনেক খুশি । সে ফিরে ফেল তার ভালোবাসাকে। আজ এত বছর পর পূর্ণতা পেল তার ভালোবাসা । আর সাথে বাড়তি পাওনা টুসি।

এত মিষ্টি একটা মেয়ে তাঁকে পাপা ডাকবে এটাই রায়হানের সবচেয়ে বড় আনন্দ। মেয়েটাকে সে আদর যত্ন দিয়ে সুন্দর করে মানুষের মতো মানুষ করবে।

কোনো রকম অভিযোগ করার সুযোগ ইরাকে দিবে না রায়হান।

যথারীতি ইরা রায়হানের বিয়ে সম্পন্ন হলো পারিবারিকভাবে।  ইরা ,টুসিকে নিয়ে নতুন একটি ফ্ল্যাটে উঠলো রায়হান ।

টুসিকে ঘুম পাড়িয়ে দুজনে মুখোমুখি বসলো । রায়হান কফি বানিয়ে আনলো দুজনের জন্য ।

রায়হান ইরাকে বলল আমি আমার জীবনে তোমাদের পেয়ে পরিপূর্ণ হলাম । জীবনের প্রতি আমার যে অনীহা চলে এসেছিল তা আবার তোমাদের ভালোবাসায় সজীব হলো।

আমার অপেক্ষার ভালোবাসা আজ একান্ত আমার হলো। টুসি আমাদের এই পথচলার সবচেয়ে বড় আনন্দ । 

জীবনের অংক জটিল হলেও কিছু কিছু হিসেব মিলে যায় । আমরা হয়তো যা ভাবি সবকিছু পাই না কিন্তু কিছু অদ্ভুত পাওয়া আমাদের এইভাবে সুখী করে। এমনি করে ভালোবাসা বাচুঁক ভালোবাসার পরশে।।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024