|
Date: 2022-09-09 02:03:25 |
◾ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাজ্যের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ মারা গেছেন। স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে ৯৬ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। বাকিংহাম প্যালেস এক ঘোষণায় এ তথ্য জানায়।
ব্রিটেনের সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা রানি দ্বিতীয় এলিভাবেথ ওই প্রাসাদে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ কাটাচ্ছিলেন। সেখানে তিনি ভালোই ছিলেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে রানির স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা উদ্বেগ জানান। তখন তারা রানিকে তত্ত্বাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। রানির অসুস্থতার খবরে স্কটল্যান্ড ছুটে যান তার স্বজনরা। লন্ডনে স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বাকিংহ্যাম প্যালেস।
এদিকে অসুস্থতার সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর দেশে বিদেশ ছড়িয়ে থাকা তার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের অনেকেই ইতোমধ্যে স্কটল্যান্ডে পৌঁছে গেছেন, বাকিরা রয়েছেন যাত্রাপথে।
১৯৫২ সালে সিংহাসনে বসেন রানি। তখন থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ৭০ বছর ধরে ওই পদে আসীন ছিলেন তিনি। এ সময় তিনি বহু সামাজিক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছেন। চলতি বছরই রানির সিংহাসনে আরোহণের ৭০ বছর উদযাপিত হয়েছে। গত জুলাই থেকে স্কটল্যান্ডের বারমোরাল প্রাসাদে অবস্থান করছিলেন তিনি।
রানিকে সর্বশেষ প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল গত মঙ্গলবার। সেদিন বালমোরাল প্রাসাদে রানির সঙ্গে দেখা করে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন লিজ ট্রাস। সেই সঙ্গে নতুন সরকার গঠনের অনুমতিও নেন।
রানির মৃত্যুতে তার বড় ছেলে সাবেক প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লস নতুন রাজা ও কমনওয়েলথভুক্ত রাজ্যের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দেশকে নেতৃত্ব দেবেন।
বাকিংহাম প্যালেসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রানি আজ (বৃহস্পতিবার) বিকালে বালমোরালে মারা গেছেন।রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মেয়াদে যুদ্ধ-পরবতী সংস্কার, সাম্রাজ্য থেকে কমনওলেথে উত্তরণ, স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তি, ইউরোপীয় ইউনিয়নে যুক্তরাজ্যের প্রবেশ এবং তা থেকে প্রত্যাহারের মতো ঘটনাগুলো উল্লেখ্যযোগ্য।
রানির শাসনকালে দেশটিতে ১৫ জন প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছেন। ১৮৭৪ সালে জন্ম নেওয়া উইনস্টন চার্চিলকে দিয়ে শুরু, শেষ হয় লিজ ট্রাসকে দিয়ে। যাকে গত সপ্তাহে নিয়োগ দেন রানি।
সংবাদমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম- সবখানেই বহুল আলোচিত এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
বয়সটা নব্বইয়ের ঘরে হলেও, সদা হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তার আরচণে গাম্ভীর্যতা থাকলেও কোথাও যেন চিরতরুণীর আবহ খুঁজে পাওয়া যেত; যেন বার্ধ্যক্য সে অর্থে ছুঁতেই পারেনি তাকে। লন্ডনের মেফেয়ারে ইয়র্কের ডিউক এবং ডাচেসের (পরে রাজা জর্জ এবং রানি এলিজাবেথ) প্রথম সন্তান এলিজাবেথ আলেকজান্ড্রা ম্যারি। সময়টা ১৯২৬ সালের ২১ এপ্রিল।
তার বাবা ১৯৩৬ সালে নিজের ভাই রাজা অষ্টম এডওয়ার্ডের পর সিংহাসনে বসেন। তখন থেকেই সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ছিলেন ১০ বছরের দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
১৭ বছরের অপেক্ষায় অবসান ঘটে ১৯৫৩ সালে। এ বছরের ২ জুন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মুকুট মাথায় নেন ২৭ বছরের দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তবে এক বছর আগে ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাজা জর্জ মারা গেলে, সেদিনই রানি হন তিনি।
প্রাসাদেই ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষিত হয়েছিলেন এই রানি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর নারী বিভাগ-অগজিলিয়ারি টেরটোরিয়াল সার্ভিসে যোগদান করে জনসাধারণের দায়িত্ব পালন শুরু করেছিলেন তিনি।
১৯৪৭ সালে গ্রিস ও ডেনমার্কের সাবেক প্রিন্স ডিউক অফ এডিনবরা ফিলিপকে বিয়ে করেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। এই দম্পতির চার সন্তান- ওয়েলসের প্রিন্স চার্লস, প্রিন্সেন অ্যান, ইয়র্কের ডিউক প্রিন্স অ্যান্ড্রু এবং ওয়েসেক্সের আর্ল প্রিন্স এডওয়ার্ড।
© Deshchitro 2024