প্রতিভাবান মানুষ শত প্রতিকুলতার মধ্যে একটু সুয়োগ পেলেই তার সাক্ষর রাখবে। তেমনি পুলিশের চাকরি করেও থেমে নেই। দায়িত্বপালনের পাশাপাশি ইউটিউবে ভিডিও কন্টেইন প্রচার করে পুলিশবাহিনীতে সুনাম কুড়িয়েছেন এসআই জাহাঙ্গীর আলম। শৃঙ্খলাবদ্ধ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে দায়িত্বশীলতার সাথে মানবিক নানান কর্মকাণ্ডে নিজেকে উজার করে দিয়েছেন তিনি। তার কর্মস্থলের বিভিন্ন দায়িত্বের পাশাপাশি সুবিধা বঞ্চিত, আইন না জানা সাধারণ মানুষের জন্য সর্বদা নিবেদিত তিনি । আমাদের দেশের মানুষ সহজে থানায় যেতে চায় না। তারা মনে করে, পুলিশের কাছে গেলে তার আরো সমস্যা হবে। এ কথাও সত্য যে থানায় কর্মরত অনেক পুলিশ সাহায্য প্রার্থীর সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রেই ভালো আচরণ করে না। অপরাধের শিকার ব্যক্তি এমনিতেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে। এ ক্ষেত্রে পুলিশের প্রধান কর্তব্য হলো ভিকটিমকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে স্বাভাবিক করা। পুলিশ ভিকটিমের সঙ্গে এমন মানবিক ও বন্ধুসুলভ আচরণ করবে যাতে ভিকটিমের মনে পুলিশের ওপর আস্থা সৃষ্টি হয়, নিরাপত্তাবোধ জেগে ওঠে এবং পুলিশকে আপন মনে করে। এমনই একজন মানবিক পুলিশের কথা এখানে তুলে ধরব। শত ব্যস্ততার মাঝেও পেশাগত দায়িত্ব ছাড়াও মানুষের অনেক সমস্যা ও তার সমাধান করা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এসআই জাহাঙ্গীর আলম। জনগণ এবং বাংলাদেশ পুলিশের মধ্যকার দূরত্বকে কমিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে এসআই জাহাঙ্গীর বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণকে উপহার দিয়ে আসছেন প্রতিনিয়ত। আইন না জানা সাধারণ প্রান্তিক মানুষের মাঝে আইনগত বিভিন্ন তথ্য, তার ভিডিওর মাধ্যমে মানুষকে জানানোর চেষ্টা করেন তিনি। কীভাবে মামলা করতে হয়, কীভাবে জিডি করতে হয়, কেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু হয়, রিকলের কাজ কি। কখন, কোথায় রিকল জমা দিতে হয়। প্রতারণার হাত থেকে বাঁচার উপায় কি, সড়ক নিরাপদ রাখার উপায় কি, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার ফেসবুক পেইজে ভিডিও করে পোস্ট করে থাকেন। এতে করে আইনের প্রতি সঠিক ধারণা না থাকা মানুষগুলো অনেক উপকার পাচ্ছেন। ইতিমধ্যে জাহাঙ্গীরের ফেসবুক পেইজে ১৭ লাখ ফলোয়ার তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে করা তার জনসচেতনতামূলক কনটেন্টগুলো সাধারণ মানুষের হৃদয়ে দাগ কেটেছে। এসআই জাহাঙ্গীর যে জায়গাতেই কর্মরত থাকেন সেই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে তার একটা আত্মার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাংলাদেশ পুলিশে । নতুন সংযোজিত বিট পুলিশিংয়ে কার্যক্রম নিয়ে যেসব থানায় কাজ করেছেন সেসব অঞ্চলে তিনি বেশ আলোচিত হয়েছেন। তার জনপ্রিয়তা এতটাই যে ইতিপূর্বে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় তিনি একটি বিট এলাকার দায়িত্বে ছিলেন সেখান থেকে তাকে বদলি করে অন্য বিটে দায়িত্ব দেওয়ায় তাকে পূর্বের বিটে বহাল রাখার দাবিতে বিশাল মানববন্ধন হয়েছিল। তিনি তার কর্মস্থলে বিভিন্ন দায়িত্বের পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত আইন না জানা সাধারণ মানুষের জন্য সর্বদা নিবেদিত প্রাণ একজন মানুষ। এছাড়াও এস আই জাহাঙ্গীর বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং ইউটিউব চ্যানেলে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে তিন গোয়েন্দা, বিন্টুমামা, মধ্যরাতের ট্রেন, প্রিসিস্টার্স, শঙ্খ সাদা পরিবার, হলুদ শাড়ি লাল পাড়, ঘাটের মানুষ, লাকিনিউটন, ইস্যু, রাঙ্গাভুবন, ভজকটসহ চ্যানেল আইতে প্রচারিত ক্রাইম স্টোরির অসংখ্য এপিসোডে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন।লেখালেখিতেও সিদ্ধহস্ত এসআই জাহাঙ্গীর আলম তোমাকে চাই, সিও দহন, হৃদয় পোড়ানো গন্ধ নামক তিনটি উপন্যাসও লিখেছেন। এছাড়াও করোনাকালীন সময়ে অসহায় মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন এসআই জাহাঙ্গীর। এসব কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে জাহাঙ্গীর বলেন, একজন মানুষ হিসেবে আমি চাই মানুষের দুঃসময়ের বন্ধু হতে। তাই নিজের সাধ্যানুযায়ী সব সময় চেষ্টা করি সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। আমি যেহেতু একজন পুলিশ সদস্য সেক্ষেত্রে ডিপার্টমেন্ট থেকে। যদি এ কাজের জন্য আরো বেশি উৎসাহ পাই তাহলে আশা করি আমার এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সুনাম আরও অনেক বৃদ্ধি পাবে। মানবিক পুলিশ জাহাঙ্গীর আরো বলেন, ছোটবেলা থেকেই মানুষের দুঃখ-কষ্ট দেখলে সহ্য হয় না। নিজের বেতনের টাকা থেকেও নিজের গ্রামের কিছু গরিব পরিবারকে সাহায্য করেন জাহাঙ্গীর। কর্তব্য পালন করতে গিয়ে জাহাঙ্গীর যে মহৎ ও মানবিক কর্ম করে চলেছেন তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024