দিনশেষে শাবতলার নির্জন মাঠে গোধূলি

        বেলায় জলরঙে আঁকা নিস্তব্ধ 

                একটা ফিঙে আমি।


       বসে থাকি সারাবেলার ক্লান্তির

                      ধুলো মেখে।


 সারাদিনে  সঙ্গী হিসেবে যারা জুটেছিল

        তাদের জাবর কাটতে কাটতে

              বেঘোরে ঘুমিয়ে যাবো।


সকালে উত্তরের ঝাউবন থেকে যে ফিঙেটা

এসেছিল, তাকে বেশ উৎফুল্ল মনে হচ্ছিল -


 এমনভাবে আমরা আকাশে উড়ছিলাম , মনে

   হচ্ছিল এই আকাশ শুধুমাত্র আমাদের ;

       উপর থেকে পৃথিবীর সবকিছু ছোট্ট

          মনে হওয়ায়, অবজ্ঞায় আমাদের 

               নাক সিটকে আসছিলো।


    কিন্তু হঠাৎ দক্ষিণ দিকে কিসের একটা

 বিকট আওয়াজ হওয়ায়, সে ঈগল পাখির

        চিৎকার বলে ভীত হয়ে ছিটকে 

                 গেল আমার থেকে।

 

সঙ্গীহীন অবস্থায় দূর আকাশ থেকে মুখ থুবড়ে

 পড়লাম, মাটিতে তীব্র আছাড় খেয়ে একটা

              ডানায় পেলাম প্রচন্ড আঘাত -


   ব্যথিত ডানা নিয়ে উড়ে গেলাম পশ্চিম বিলে 

ফড়িং এর সন্ধানে । দেখলাম সেখানে ঘাড়ে মুখ 

    গুঁজে বিষণ্ণ রঙে আঁকা আরেকটা ফিঙে


আমার দিকে ফিরে তাকাতেই দেখলাম তার মুখে                      

         রাজ্যের অবহেলা এসে জড়ো হয়েছে ,  


সে আমার সাথে খুব আগ্রহ নিয়ে ফড়িং খেতে লাগলো । হৃদয় দিয়ে মিশে গেলাম তার সাথে;

                মনে হলো আমি ছাড়া

            তার কেউ'ই নাই এ তল্লাটে।


তারপর উত্তর পশ্চিম কোণ থেকে কাল বৈশাখীর

     ঝড়ো হাওয়ার মত একটি ফিঙে আসতেই 

        সেই ফিঙের সাথে সে হিজলের বনে

                    মুহূর্তে'ই মিলিয়ে গেল -


আমার হৃদয়ের দু-কূল ভেঙে তোলপাড় হয়ে গেল ।


অবশেষে ব্যথিত ডানা নিয়ে খুব কষ্ট করে শাবতলার 

            মাঠে এসে এই আমি বসে আছি ;

 আমার দিকে পাখি রাজ্যের কোন পাখির'ই 

                         ভ্রূক্ষেপ নেই।


লেখক: প্রণব মন্ডল, খুলনা ইউনিভার্সিটি।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024