|
Date: 2023-06-23 05:37:08 |
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে কোরবানিরর জন্য ১৩ হাজার ৫১২ টি পশু প্রস্তুত করছেন খামারিসহ কৃষকরা। দেশীয় ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে এসব পশু মোটাতাজা করা হয়েছে বলে জানান গো-খামারীরা। পাশাপাশি হৃষ্টপুষ্ট করা দেশী ও বিদেশি জাতের ফ্রিজিয়ান, শাহীওয়ান, শংকর, জা সহ বিভিন্ন জাতের ষাড় গরু কোরবানির পশুর হাটে বিক্রয়ের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে খামারিরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ছোট-বড় ৬০২ জন খামারিসহ ব্যক্তি পর্যায়ে কৃষকের বাড়িতে মোট ১৩ হাজার ৫১২ টি কোরবানী যোগ্য পশু রয়েছে। এরমধ্যে ৮ হাজার ৬৫০ টি গরু, ৩১০ টি মহিষ ও ৪৩২২ টি ছাগল ও ২৩০ টি ভেড়া রয়েছে। উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১২ হাজার ২০৬ টি। সে হিসেবে উপজেলায় চাহিদার তুলনায় ১ হাজার ৩০৬ টি পশু বেশী রয়েছে। উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়নে কুরবানী উপলক্ষে মোট সাতটি পশুর হাট বসে। এর মধ্যে স্থায়ী হাট দুটি এবং অস্থায়ী হাট পাঁচটি। হাটগুলো হল- সুবিদখালী লঞ্চঘাট, দেউলি, মহিষকাটা, মাধবখালী, হুরমইবুনিয়া ও ভয়াং।
পশু বিক্রেতারা বলছেন গো খাদ্যের দাম বেড়েছে, বেশি দামে পশু বেচতে না পারলে লোকসান হবে। ক্রেতারা বলছেন গতবারের চেয়ে গবাদিপশুর দাম অনেক বেশি চাচ্ছে। ক্রেতা ও বিক্রেতার এমন পাল্টাপাল্টি অভিযোগে এখনো পর্যন্ত জমে ওঠেনি বেচাকেনা। বাজারে পর্যাপ্ত পশুর আমদানি থাকলেও বেচাকেনা কম বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তবে বিভিন্ন খামার ও কৃষকের বাড়িতে দেখা যাচ্ছে গরু ব্যবসায়ীসহ সাধারণ ক্রেতাদের আনাগোনা। অনেকে আবার কোরবানির পশু কিনতে শরণাপন্ন হচ্ছেন স্থানীয় দালালদের। এ অঞ্চলের মানুষের কুরবানির পশুর পছন্দের তালিকায় রয়েছে গরু, মহিষ ও ছাগল-ভেড়া। ঈদে ভালো দামে পশু বিক্রি করে লাভের আশা করছেন খামারিসহ কৃষকরা।
উপজেলার পশ্চিম সুবিদখালী এলাকার কৃষক হাকিম হাওলাদার বলেন, ঈদে বিক্রির জন্য আমি বাড়িতে তিনটি ষাঁড় পুষছি। গত কয়েকদিন ধরে সেগুলো দেখতে অনেকেই আসছেন, দাম করছেন। দামে এখনো বনিবনা হয়নি। তবে আশা করি ভালো দামই পাবো।
উপজেলার পূর্ব সুবিদখালী এলাকার আদুরী ফার্মের মালিক ফারুক মুন্সি জানান, তার ফার্মে কোরবানী যোগ্য ১৭ টি গরু রয়েছে। সেগুলো এক লক্ষ থেকে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাম হাকা হচ্ছে। গরুগুলো হাটে নিলেও ক্রেতাদের তেমন সাড়া পাচ্ছেন না।
এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গবাদিপশুর খামারি ও কৃষকরা জানান, বেশি দামে খাদ্য কিনে গরুকে খাইয়ে মোটাতাজা করতে হয়েছে। বাজারে পশুর ভালো দাম না পেলে লোকসান হবে। তাছাড়া চোরাই পথে ভারতীয় গরু দেশে আসলে গরু নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেক খামারি।
স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীরা জানান, হাটে পর্যাপ্ত পশু উঠলেও এখনো ক্রেতারা খুব একটা হাটে আসতে শুরু করেননি। তবে ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে ক্রেতাও তত বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
উপজেলার কাকড়াবুনিয়া এলাকার কলেজ শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এবছর গবাদিপশুর খাদ্যের দাম বাড়ার অজুহাতে গতবারের চেয়ে সব ধরনের পশুর অনেক বেশি দাম চাচ্ছে। তাই এখন পর্যন্ত কিনতে পারিনি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আলাউদ্দিন মাসুদ বলেন, এ বছর উপজেলায় কুরবানীর জন্য মোট ১৩৫১২ টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যা এই উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যত্র সরবরাহ করা যাবে। যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে। উপজেলায় মোট সাতটি পশুর হাটে আমাদের চারটি টিম কাজ করে। রুগ্ন ও অবৈধ উপায়ে হৃষ্টপুষ্ট করা গরু সনাক্তকরণে কাজ করবে টিমগুলো।
© Deshchitro 2024