◾মাওলানা ইমরান হোসাইন : শোকর হলো আল্লাহ তাআলার দেওয়া নেয়ামতের স্বীকারোক্তি দেওয়া, নেয়ামতের জন্য আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও গুণকীর্তন করা এবং বাস্তব জীবনে নেয়ামতের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো। শোকর বা কৃতজ্ঞতা ইমানদারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এমনকি শোকর করা ইমানের অর্ধেক আর বাকি অর্ধেক হলো সবর তথা ধৈর্য ধারণ করা। মানুষের জীবন সুখ ও দুঃখের দ্বৈত প্রবাহে চলমান। মুমিনের ইমানের দাবি হলো সুখের সময় শোকর করা আর দুঃখের সময় সবর করা। 


আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআন মাজিদের সুরা সুরাতুল ফাতিহা শুরু করেছেন শোকর আদায়ের অন্যতম বাক্য—আলহামদুলিল্লাহ দিয়ে। শোকর করা একটি স্বতন্ত্র ইবাদতও বটে। পবিত্র কোরআনের অনেক আয়াতে শোকর করার গুরুত্বের বিষয় আলোচিত হয়েছে। এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা শোকর করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘অতএব আল্লাহ তাআলা তোমাদের যেসব হালাল ও পবিত্র বস্তু দান করেছেন, তা আহার করো এবং আল্লাহর নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো; যদি তোমরা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করে থাকো।’ (সুরা নাহল: ১১৪)


অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো, অকৃতজ্ঞ হয়ো না।’ (সুরা বাকারা: ১৫৪)


আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রতি অবারিত ধারায় রহমত করলেও দুনিয়ার খুব কম সংখ্যক লোকই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। আল্লাহ এরশাদ করেন, ‘তোমার প্রতিপালক মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল, তবে তাদের অধিকাংশই কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না।’ (সুরা নামল: ৭৩)


মানুষ প্রতিনিয়ত আল্লাহ তাআলার যেসব নেয়ামতের মধ্যে নিমজ্জিত আছে, তার জন্য শোকর করলে, আল্লাহ তাদের নেয়ামতের মধ্যে প্রবৃদ্ধির ওয়াদা করেছেন। এরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, আমি অবশ্যই তোমাদের আরও দেব। আর যদি অকৃতজ্ঞ হও (জেনে রেখ) আমার শাস্তি বড় কঠোর।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)


লেখক: মাওলানা ইমরান হোসাইন, শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2023