|
Date: 2023-07-08 13:22:12 |
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের ভোটবিহীন ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো.মাইনুল হোসেন খান নিখিল। সম্মেলন উদ্বোধন করেন জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা রাজু।
শনিবার (৮ জুলাই) ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় সম্মেলন।
সম্মেলনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতিগ্রহণ করেছিলেন নেতাকর্মীরা। সভাপতি পদে ৯ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অংশ নিয়েছেন।
৭ বছর পর উপজেলা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও ঘোষণা করা হয়নি নতুন কমিটি। ফলে কে হবেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এনিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে তর্ক-বিতর্ক ও নানাবিধ জল্পনা-কল্পনা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিশাল আকারে মঞ্চ নির্মাণ করা হয়। বেলা ১১টায় সম্মেলন উদ্বোধনের কথা থাকলেও দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মঞ্চ ছিলো ফাঁকা। এরপর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে জনসমাগম। স্ব-স্ব প্রার্থীরা বাদ্যযন্ত্রে সজ্জিত মিছিল সহকারে সম্মেলন স্থলে হাজির হন। এক পর্যায়ে নেতাকর্মী-সমর্থকদের পদচারণে কানায় কানায় ভরে ওঠে সম্মেলনের মাঠ। পুরো পৌর শহর হয়ে ওঠে লোকে লোকারণ্য।
ইসলামপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকোট আব্দুস সালাম।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও সম্মেলনে আসেননি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকোট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক বাবু বিজন কুমার চন্দ। জেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও জামালপুর-শেরপুর সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি হোসনে আরা সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বলেন, 'উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির মতো যাতে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন যুবলীগের কমিটিতে স্থান না পায়। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।'
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন যুবলীগের সভাপতি মণ্ডলির সদস্য এনামুল হক খান, জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহ রাজু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাসেদুল ইসলাম খোকন, পৌরসভার মেয়র সেখ আব্দুল কাদের প্রমুখ।
দলীয় সূত্রে জানা যায় , গত ২০১৬ সালের ২ মার্চ আওয়ামী যুবলীগ ইসলামপুর উপজেলা শাখার সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থীরা তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় তোলে ধরে বাহারি-রকমারি ব্যানার-পোস্টার ও তোরণে ছেঁয়ে যায় পৌর শহরের অলিগলি। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারোণা ও শুডাউনে সরগরম হয়ে উঠে এখানকার রাজনীতির মাঠ। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলের ভিতর একাধিক গ্রুফের লক্ষণীয়। পছন্দের প্রার্থীকে যদি দলীয় পদে নির্বাচিত না করা হয়, এনিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা বিরাজ করছে নেতাকর্মীদের মাঝে। তবে সংঘর্ষের বিষয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে থেকে কেউ মুখ খুলছে না। তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে দলের অনেক নেতাকর্মী জানিয়েছে, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মাঝে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না। পছন্দের প্রার্থীকে পদে পদায়ন না করা হলে সংঘর্ষসহ ঘটতে পারে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও। সংঘর্ষসহ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের ধারণা সংঘর্ষসহ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতেই সম্ভবত নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।
জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা রাজু বলেন, 'নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। পরবর্তীতে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।'
ইসলামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, 'সম্মেলনে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি। বিশৃঙ্খলা এড়াতে আমরা আগে থেকেই সতর্ক ছিলাম।'
© Deshchitro 2024