|
Date: 2023-07-24 07:32:14 |
২০২১ সালে ‘ডিকশনারি’ মুক্তির পর বাংলাদেশের বিখ্যাত অভিনেতা মোশাররফ করিমকে নিয়ে আরো একটি ছবির ঘোষণা করেছিলেন বিখ্যাত নাট্যকার তথা অভিনেতা ও পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু । ‘ডিকশনারি’ যেখানে ছিল বুদ্ধদেব গুহর দুই ছোট গল্প অবলম্বনে তৈরি, সেখানে দ্বিতীয় ছবিটি সম্পূর্ণ সত্য ঘটনা নির্ভর। নির্মাতারা জানিয়েছিলেন, এই ছবি হুগলির একসময়ের কুখ্যাত মাফিয়া হুব্বা শ্যামলকে নিয়ে। ছবির নাম রাখা হয়েছে ‘হুব্বা’।
অবশেষে দু’বছর পর রোববার (২৩ জুলাই) সকালে প্রকাশ্যে এলো সেই সিনেমার ফার্স্ট লুক। সেখানে দেখা গেল, গলায় গাঁদা ফুলের মালা জড়িয়ে এবং আরো সাঙ্গপাঙ্গদের সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ডনরূপী মোশাররফ।
ছবির গল্প আবর্তিত হয়েছে হুগলির একসময়ের গ্যাংস্টার শ্যামল দাস, ওরফে হুব্বা শ্যামলকে কেন্দ্র করেই। তার উত্থান, তার গুন্ডারাজ এবং সবশেষে তার পতন- সবকিছুই তুলে ধরা হবে এই ছবিতে। এমনটাই জানিয়েছেন পরিচালক ব্রাত্য বসু এবং প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান।
ব্রাত্য বসুর এই সিনেমায় সেই হুব্বা শ্যামলের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। তার সঙ্গে আছেন পৌলমী বসুসহ কলকাতার নাট্যজগতের বেশ কয়েকজন শিল্পী।
জানা যায়, আশির দশকে অপরাধ জগতে ধীরে ধীরে উত্থান হয়েছিল শ্যামলের। নয়ের দশক থেকে ক্রমশ তার আধিপত্য বাড়তে থাকে কলকাতার কাছে এই জনপদে। হুগলিতে একসময় গঙ্গার ধার বরাবর ও অন্যদিকে এক্সপ্রেসওয়ের দিকে একাধিক কারখানা ছিল। সেই কারখানাগুলির শ্রমিকদের থেকেই হপ্তা তুলে শ্যামলের অপরাধ জগতে হাতেখড়ি। এরপর ধীরে ধীরে এলাকায় তোলাবাজি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানির মতো ঘটনা ঘটতে শুরু করে তার হাত ধরে।
শোনা যায় তৎকালীন শাসকদলের ঘনিষ্ঠও ছিল হুব্বা শ্যামল। দলের হয়ে বহু কাজকর্ম করার সুবাদে একাধিক নেতা-মন্ত্রীদের কাছের লোক হয়ে উঠেছিল সে। তবে ২০০৫ সালে একটি খুনের ঘটনায় তাকে মুখ্যমন্ত্রীর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নির্দেশে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও কয়েকমাসের মধ্যেই সে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। কিন্তু সেই জেলবন্দি থাকা অবস্থাতেই হাতছাড়া হয়ে যায় তার রাজ্যপাট।
এরপর একসময় যারা ছিল তার কাছের লোক, তাদের হাতেই খুন হতে হয় শ্যামলকে। ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকার পতনের কিছুদিন পরেই বৈদ্যবাটি খালে হাওড়া-বর্ধমান মেইন শাখার ন’নম্বর রেলগেটের কাছে পাওয়া যায় তার লাশ। গলা থেকে কোমর অবধি কোপানো ছিল দেহ।
অনেকেই সে সময় বলেছিল, শ্যামলের ট্রেডমার্ক কায়দাতেই তাকে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। সেই কায়দার নাম পৈতে কাট। গলা থেকে কোমর পর্যন্ত যেভাবে পৈতে ঝুলে থাকে, ঠিক সেভাবেই শ্যামল অনেককে বুক-পেট চিরে দিয়ে খুন করেছিল। সেই একই কায়দাতে তাকে খুন করে প্রতিপক্ষ রমেশ মাহাত।
এবার সেই গল্পই বড়পর্দায় তুলে ধরবেন ব্রাত্য। ফার্স্টলুক রোববার প্রকাশ্যে এলেও ছবি মুক্তির দিনক্ষণ এখনও জানানো হয়নি। তবে প্রযোজক ফিরদৌসুল বলেছেন, ‘ব্রাত্য নিজের ছবির জন্য যে পরিমাণ পড়াশোনা করে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আশা করি এই ছবিটিও দর্শক খুবই পছন্দ করবেন। যত শীঘ্রই সম্ভব আমরা ‘হুব্বা’ মুক্তির ব্যবস্থা করব।’
© Deshchitro 2024