|
Date: 2023-07-24 14:22:28 |
জামালপুরে অগ্রণী ব্যাংকের টাকা নিয়ে নয়ছয় করার অভিযোগ উঠেছে জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা সোমার বিরুদ্ধে। ১২ হাজার টাকা ভাংতি করতে গিয়ে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা নিয়ে চলে এসেছিলো ফারহানা সোমা। গত ১৯ জুলাই দুপুরে শহরের তমালতলা মোড়ে অবস্থিত অগ্রণী ব্যাংকের জামালপুর শাখায় এই ঘটনাটি ঘটে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকের একাধিক কর্মচারী জানান- ১৯ জুলাই দুপুরের দিকে ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারে গিয়ে এক হাজার টাকার ১২টি নোট ভাংতি দিতে বলেন ফারহানা সোমা। এ সময় তার সঙ্গে আরো একজন মেয়ে ছিলো। ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ভুল করে তাঁর সামনে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা রাখলে সেটি নিয়ে চলে যান তিনি। এরপর বিকেলে ক্যাশে টাকার হিসাব না মিললে ক্যাশে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুহাম্মদ হারুনুর রশিদকে বিষয়টি জানান। এরপর তাঁরা সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে ফারহানা সোমাকে টাকা নিয়ে যাওয়ার তথ্য পান। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফারহানা সোমাকে ফোন করলে অতিরিক্ত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে গড়িমসি করেন ফারহানা সোমা। ওইদিন রাতে লোক মারফত ৮৮ হাজার টাকা ব্যাংকে ফেরৎ পাঠান ফারহানা সোমা। টাকাগুলোর অধিকাংশই ৫০ ও ২০ টাকার নোট ছিলো।
জেলা যুব মহিলা লীগের কয়েকজন নেত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯ জুলাই বিকেলে দলীয় একটি অনুষ্ঠান শেষে কর্মীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অবস্থান করে। এরপর ফারহানা সোমা একজন নেত্রীকে নিয়ে তাঁর কাচারীপাড়ার বাসায় যান। সেখানে টাকার একটি ব্যাগ ওই নেত্রীকে দেন এবং কর্মীদের যাতায়াত ভাড়া দিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। ব্যাগটি নিয়ে আবারো শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনে এসে কর্মীদের টাকা দিতে থাকে নেত্রীরা। ৩২ হাজার টাকা দেয়া শেষে ব্যাগে অবশিষ্ট ১লাখ টাকা দেখে অবাক হয়ে যান তাঁরা। তাঁরা তখনই সেই টাকা ৪ জনের মধ্যে ভাগ করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এমন সময়ই ব্যাংক থেকে ফোন পায় ফারহানা সোমা।
নেত্রীরা আরো জানান, ব্যাংকের ফোন পাওয়ার পরে বিষয়টি জানাতে শহরের পাথালিয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের একজন প্রথম সারির নেতার বাড়িতে যান ফারহানা সোমা। এরপর তাকে জানালে তিনি ৮৮হাজার টাকা তার লোক মারফত ব্যাংকে পাঠিয়ে দেন। এদিকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবশিষ্ট ৩২ হাজার টাকার জন্য ফারহানা সোমার সাথে যোগাযোগ করে সাড়া না পেলে বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগ এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একজন নেতাকে জানান। এ বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ওই নেতার জামালপুরের বাড়িতে একটি বৈঠক হয়। সেখান থেকে ব্যাংকে টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপরও অবশিষ্ট ৩২ হাজার টাকা দিতে গড়িমসি করেন ফারহানা সোমা। সবশেষ বিষয়টি জামালপুর শহরে ছড়িয়ে পড়লে এবং সাংবাদিকরা ফারহানা সোমার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে অবস্থা বেগতিক ২৩ জুলাই সকালে ব্যাংকে গিয়ে টাকা দিয়ে আসেন তিনি। এসব বিষয়ে জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা সোমা বলেন, 'যে টাকা নেয়া হয়েছে সেটি ফেরত দেয়া হয়েছে।'কবে নাগাদ এই অর্থ ফেরত দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে ফারহানা সোমা বলেন, 'মনে হয় ঘটনার দিনই অর্থ ফেরত দেয়া হয়েছে।'জামালপুর অগ্রণী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেন, 'ব্যাংকের হিসাবে এক টাকা কম থাকলে ব্যাংক বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের হিসাব আমরা মিল করেছি।'
© Deshchitro 2024