|
Date: 2023-07-28 08:02:19 |
(২৮ জুলাই) কক্সবাজার জেলায় এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। গেল বছর (২০২২ সালে) যেখানে পাসের হার ছিল ৮৮.৪৫% এ বছর সেখানে ৭৭.২৫%। গত বছর জিপিএ-৫ ছিল যেখানে ২৪৫১ জন সেখানে এবছর পেয়েছে মাত্র ১৪০৬ জন। পাসের হার কমেছে ১১.২০% এবং এক লাফে জিপিএ-৫ প্রাপ্তি কমেছে ১০৪৫ জন!
তিন বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে ভাল ফলাফল হয়েছে বিজ্ঞান বিভাগে। পাশের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক থেকে এবারও ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা। উদ্বেগের বিষয় এবছর মেয়েদের চেয়ে ২০৪৫ জন ছেলে কম পাশ করেছে। এমনই বিপর্যয়কর চমকে দেওয়া ফলাফল হয়েছে এবার কক্সবাজার জেলায়।
তবে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কক্সবাজার জেলায় সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছে কক্সবাজার সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় এবং কক্সবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কক্সবাজার সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় এবং বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমির শিক্ষার্থীরা।
২৮ জুলাই সারা দেশের ন্যায় কক্সবাজার জেলাতেও মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা ২০২৩ এর ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এবছর এসএসসিতে কক্সবাজার জেলায় মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ২৩ হাজার ৪৫৪ জন। তাদের মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে ২৩ হাজার ২১০ জন। আর পাশ করেছে ১৭ হাজার ৯২৯ জন। পাশের হার ৭৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৬ জন।
এবারের পরীক্ষায় ছেলে পরীক্ষার্থী ছিলো ১০ হাজার ৪২১ জন এবং অংশ নেয় ১০ হাজার ৩৪০ জন।এর মধ্যে পাশ করেছে ৭ হাজার ৯৪২ জন ।পাশের হার ৭৬.৮১%। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৪৬ জন।
অন্যদিকে এবারের পরীক্ষায় মেয়ে পরীক্ষার্থী ছিলো ১৩ হাজার ৩৩ জন এবং অংশ নেয় ১২ হাজার ৮৭০ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে ৯ হাজার ৯৮৭ জন এবং পাশের হার ৭৭.৬০%। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৬০ জন।
গতবছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২ হাজার ৪৫১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ১০৮২ জন আর ছাত্রী ১৩৬৯ জন। গত বছরের তুলনায় এবছর ১০৪৫ জন কম পেয়েছে।
বিজ্ঞান বিভাগ
পরিসংখ্যানে দেখা যায়,কক্সবাজার জেলায় প্রতিবারের মতো ২০২৩ সালেও পাশের হার সবচেয়ে বেশি বিজ্ঞান বিভাগে। এবছর বিজ্ঞানে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ৪৬৩০ জন এবং অংশগ্রহন করে ৪ হাজার ৬১৫ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে ৪ হাজার ৩৪৬ জন। পাশের হার ৯৪,১৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ২৫৬ জন। গত বছর(২০২২) পাশের হার ছিল ৯৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ হাজার ৯৬৬ জন।
এবছর বিজ্ঞানে মোট ছেলে পরীক্ষার্থী ছিলো ২২২৯ জন এবং অংশগ্রহন করে ২ হাজার ২২২ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে ২ হাজার ৮৩ জন। পাশের হার ৯৩,৭৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৯৮ জন। গতবছর পাশের হার ছিল ৯৮.০২% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯৩০ জন।
অন্যদিকে এ বিভাগে মোট মেয়ে পরীক্ষার্থী ছিলো ২৪০১ জন এবং অংশগ্রহন করে ২ হাজার ৩৯৩ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে ২ হাজার ২৬৩ জন। পাশের হার ৯৪.৫৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫৮ জন। গতবছর পাশের হার ছিল ৯৭.৭১% । আর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ হাজার ৩৬ জন।
বাণিজ্য বিভাগ
এবছর বাণিজ্য বিভাগে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ৬৬৬২ জন এবং অংশগ্রহন করে ৬ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে ৫ হাজার ৫৮১ জন। পাশের হার ৮৪,৪৫ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৬ জন। গত বছর (২০২২) পাশের হার ছিল ৯২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৩৫২ জন।
এবছর বাণিজ্যে মোট ছেলে পরীক্ষার্থী ছিলো ৩৬৫১ জন এবং অংশগ্রহন করে ৩ হাজার ৬৩১ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে ৩ হাজার ৫ জন।পাশের হার ৮২,৭৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৪৫ জন। গতবছর পাশের হার ছিল ৯১.৬৭% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৩০ জন।
অন্যদিকে এ বিভাগে মোট মেয়ে পরীক্ষার্থী ছিলো ৩০১১ জন এবং অংশগ্রহন করে ২ হাজার ৯৭৮ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে ২ হাজার ৫৭৬ জন। পাশের হার ৮৬.৫০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৭১ জন।গতবছর পাশের হার ছিল ৯৩.৩৩% । আর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২২২ জন।
মানবিক বিভাগ
এবছর মানবিক বিভাগে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ১২,১৬২ জন এবং অংশগ্রহন করে ১১ হাজার ৯৮৬ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে ৮ হাজার ২ জন। পাশের হার ৬৬.৭৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৩৪ জন। গত বছর (২০২২) পাশের হার ছিল ৮১.১৬ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছিল মাত্র ১৩৩ জন।
এবছর মানবিকে মোট ছেলে পরীক্ষার্থী ছিলো ৪,৫৪১ জন এবং অংশগ্রহন করে ৪ হাজার ৪৮৭ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে ২ হাজার ৮৫৪ জন।পাশের হার ৬৩.৬১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৩ জন। গতবছর পাশের হার ছিল ৯১.৬৭% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২২ জন।
অন্যদিকে এ বিভাগে মোট মেয়ে পরীক্ষার্থী ছিলো ৭,৬২১ জন এবং অংশগ্রহন করে ৭ হাজার ৪৯৯ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে ৫ হাজার ১৪৮ জন। পাশের হার ৬৮.৬৫ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৩১ জন। গতবছর পাশের হার ছিল ৮৩.৫৫% । আর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১১১ জন।
চট্রগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে শীর্ষ ২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কক্সবাজারের তিন স্কুল
এছাড়া চট্রগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে শীর্ষ ২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঠাই করে নিয়েছে বরাবরের মতো ভালো ফলাফল অর্জন করা কক্সবাজার শহরের দুটি প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কক্সবাজার সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়। আর তালিকায় এবছর নতুন যুক্ত হয়েছে বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি।
কক্সবাজার সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাম মোহন সেন কক্সবাংলাকে জানান, এবছর ২৪৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তির্ন হয়েছে ২৩৭ জন। ফেল করেছে ৭ জন। পাশের হার ৯৭.১৩ %।জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫৭ জন। গতবছর (২০২২) পাশের হার ছিল ৯৯.৬১% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৯০ জন।
কক্সবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মাসুদা মোর্শেদ আইভি জানান,এবছর ২৪৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তির্ন হয়েছে ২৪৩ জন। ফেল করেছে ৪ জন। পাশের হার ৯৮.৩৮ %।জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৭৯ জন। গতবছর (২০২২) পাশের হার ছিল ৯৯.৭০% এবং ২০১টি জিপিএ-৫ পেয়ে জেলায় শীর্ষে ছিল এ প্রতিষ্ঠান।
অপরদিকে জেলায় সাফল্য লাভ করা বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমির ৫৪৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তির্ন হয়েছে ৫৩৬ জন। ফেল করেছে ৭ জন। পাশের হার ৯৮.৭১ %। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৩ জন।
© Deshchitro 2024