মোঃ ফরমান উল্লাহ,ভ্রাম্যমান সংবাদদাতা


হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী লাঙ্গল-জোয়াল আর গরু দিয়ে চাষাবাদ।  বর্তমান আধুনিক যন্ত্রপাতির যুগে একান্তই বেমানান লাঙ্গল-জোয়াল আর গরু দিয়ে চাষাবাদ করা। একটা সময় ছিল যখন চাষাবাদের জন্য লাঙ্গল-জোয়াল আর গরু ছিল একমাত্রা ভরসা। 


সেই কাকডাকা ভোরে কৃষক লাঙ্গল-জোয়াল কাঁধে নিয় মাঠে চলে যেতো জমিতে হালচাষ করার জন্য। বাড়ি থেকে পান্তা আর কাঁচা মরিচ দিয়ে নাস্তা নিয়ে যাওয়া হতো মাঠে।  এখন লাঙ্গল-জোয়ালও নেই আর ঐতিহ্যবাহী পান্তা আর কাঁচা মরিচের নাস্তাও নেই।

বর্তমানে চাষাবাদের জন্য আবিষ্কৃত হয়েছে অত্যাধুনিক যন্ত্র ট্রাক্টর, পাওয়ারটিলায়, হারভেস্টিং মেশিন আরো কত কি। এসব আধুনিক যন্ত্রপাতির সাথে পাল্লা দিয়ে টিকতে না পেরে লাঙ্গল-জোয়ালের হয়তো ঠাঁই হবে যাদুঘরে।  এখনও বাংলার কতিপয় কৃষক পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য লাঙ্গল -জোয়াল  দিয়ে চাষাবাদ ধরে রাখার চেস্টা করছেন।


৯০ দশকের দিকেও মানুষ আধুনিক এই কলের লাঙ্গলের কথা কল্পনাও করে নি। এখন চাষাবাদে শুধু ইঞ্জিল চালিত লাঙ্গলই নয় ফসল কাটার জন্য আবিষ্কৃত হয়ে অত্যাধুনিক হারভেস্টিং মেশিনও।

আর কিছুদিন পর হয়তো বর্তমান প্রজন্ম ভুলেই যাবে লাঙ্গল-জোয়াল আর গরু দিয়ে চাষাবাদের কথা।


 আগেকার দিনে কৃষক বাড়িতে গরু পোষত মূলত চাষাবাদ করার জন্য। প্রত্যেক কৃষকের ঘরে ছিল গোলাভরা ধান আর গোয়ালভরা গরু। বর্তমানে এখন আর দেখাই যায় না। এখন গরু পোষে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য।  কৃষাণীরা নিজের ঘরের গোলার ধান নিজেরাই সিদ্ধ করে নিজেরাই চাউল তৈরি করতো। বর্তমানে নিজের গোলার ধান বিক্রি করে বাজার থেকে বস্তা ভর্তি চাউল কিনে আনে আর তা খেয়ে পরিবারের প্রায় সবাই কোন না কোন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।


এখন ডাক্তারের নিকট চিকিৎসার জন্য গেলে অনেক সময় উপদেশ দেন ঢেঁকি ছাঁটা চাউলের ভাত খেতে।  কিন্তু কোথায় পাবে সেই ঢেঁকি ছাঁটা চাউল। চাউল তৈরীর জন্য ও রয়েছে আত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। 


আর আধুনিক যুগে অত্যাধুনি যন্ত্রপাতির সাথে লড়াই করে টিকতে না পেরে হারিয়ে যাচ্ছে হাজারো বছরের ঐতিহ্য লাঙ্গল-জোয়াল আর গরু মহিষের চাষাবাদ।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024