|
Date: 2023-08-05 09:07:08 |
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে পৃষ্ঠপোষকতা করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া খেলাধুলা ও সংস্কৃতির বিকাশ সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির বিকাশের জন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতাও প্রয়োজন। পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এটি বিকশিত হতে পারে না।’
তাঁর সরকারের বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দেয়ার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলবো আমাদের এখানে এখন ব্যাবসা-বাণিজ্য, ব্যাংক-বীমা অনেক কিছু আমরা করে দিয়েছি। বেসরকারি খাত অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে। তারাই (খেলোযাড়রা) তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম সব জায়গায় তুলে ধরতে পারবেন। সেক্ষেত্রেও আপনাদের (ব্যবসায়ী/উদ্যোক্তা) এই সহযোগিতাটুকু কিন্তু দরকার,’ যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) পুরস্কার-২০২৩ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়েরা যদি সেই এভারেস্ট বিজয় করতে পারে অথবা এত স্বল্প সুযোগের মধ্যদিয়েও খেলোযাড়রা ক্রীড়াক্ষেত্রে যদি এত উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখতে পারে তাহলে এই সুনাম বাড়ানোর জন্যই দরকার পৃষ্ঠপোষকতা।’
যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমাদের ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য আরো অনেক সুনাম বয়ে আনবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘যাদের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে-আপনারাও কিন্তু একজন ক্রীড়াবিদকে চাকরি দিতে পারেন বা আপনাদেরও একটা ক্রীড়া সংগঠন থাকতে পারে। বিভিন্ন প্রতিভা ছড়িয়ে আছে সারা বাংলাদেশে। সেসব প্রতিভাগুলোকে আপনারা কুড়িয়ে আনেন এবং তাদের একটু সুযোগ করে দেন। আপনারা দেখবেন বাংলাদেশের জন্য এরাই সবথেকে বেশি সুনাম বয়ে আনবে।’
জাতির পিতাই ক্রীড়াবিদদের জন্য ক্রীড়া ফাউন্ডেশন করে যান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাকে তাঁর সরকার পরবর্তীতে সীডমানি দিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে দেয়। সেখান থেকে বর্তমানে প্রায় ৫শ’ জনকে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী খেলোযাড়দের পৃষ্ঠপোষকতা এবং কল্যাণ ফাউন্ডেশনে অনুদান প্রদানে সমাজের বিত্তবানদেরকেও এড়িয়ে আসার আহবান জানান।
তিনি বলেন, যারা বৃত্তশালী আছেন তাদেরকেও আমি বলবো ক্রীড়া সেবীদের কল্যাণে এই ফাউন্ডেশনে আপনারাও অনুদান দেবেন। কারণ, আমি জানি আপনাদের অনেক পুরনো খেলোয়াড় রয়েছেন যারা অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তাদের চিকিৎসার কোন সুযোগ থাকে না। অনেকে আর্থিক সংকটেও পড়ে। কারণ, খেলাধুলাতো বেশি বয়স পর্যন্ত করা যায় না। কিন্তু তাদের পরবর্তী জীবনটা কেমন হ্েব, সেটাও একটা বড় কথা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যতক্ষণ আছি দিয়ে যাচ্ছি। যাদের ঘর নাই, তাদের ফ্লাট তৈরি করে দেওয়া বা জমি দেওয়া, খেলাধূলার সরঞ্জাম প্রদান বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা বা চিকিৎসা করিয়ে বিদেশ থেকে আনা-সব করে যাচ্ছি।
সরকার প্রধান বলেন, ‘চিরদিনতো আর আমি থাকবো না, আর হয়তো এভাবে আর কেউ আন্তারিকতার সাথে করবেও না। কাজেই তাদের ভবিষ্যৎ যাতে ভার থাকে এবং ভবিষ্যতে তারা ভাল কিছু করে চলতে পারে সেজন্যই আজকে আমাদের যারা বিত্তশালী আছেন তাদের আহবান করবো আপনারা একটু উদ্যোগ নেন বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তারাও একটু উদ্যোগ নেন।’
তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন এবং যখন ছিলেন না তখনও তিনি খেলোয়াড়দেরকে সহযোগিতা করে গেছেন। বিশেষ করে আবাহনীর সাথে সম্পৃক্ত অধিকাংশ খেলোযাড়কে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন এবং সহযোগিতা করেছেন এবং করে যাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, অনেক গরিব পরিবারের ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের জন্য স্বর্ণ জয় করে আনছে। বিশেষ করে প্রতিবন্ধিরা স্পেশাল অলিম্পিকে স্বর্ণ জয় করছে। তারা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে এজন্য তারা যেন এসব প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে সেজন্য তাঁর সহযোগিতা রয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্রীড়া ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১০ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব এবং দ’ুটি সংস্থার মাঝে ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২৩’ প্রদান করেন।
© Deshchitro 2024