ছেলে বেলার কত আবদার,

পূর্ণ করতে পারে নি তার সব ,

অপূর্ণ বাহানায় ব্যথাতুর মনে, 

আড়ালে অশ্রু মুছেছে প্রিয় মা আমার।


কি করেই বা হবে পূরণ!

সামান্য পয়সায় সংসার যেন ছুঁই ছুঁই, 

তার উপরে আকাশ কুসুম আবদার,

সংসার চালাতেই লেগে যায় তার চৌদ্দ আনা।

শত আবদার, জানি হবে না কো পূরণ।


মোয়াজ্জেনের আজান আর পাখ-পাখালির কন্ঠে, 

সেই যে মা-বাবার সকালটা শুরু হয়,

সারাদিন আহার যোগাতেই বেজে যায় বারোটা ,

হাঁড়িতে যে ভাত থাকে তাতে হয় না সবার,

আর কত দিন চলবে এভাবে ? 


 কতদিন মায়ের মলিন হওয়া মুখ দেখতে হবে,

কতদিন বাবাকে খাঁটতে হবে ভূতের ব্যগাড়? 

মায়ের মুখে হাসি কি ফুটবে না,

বাবার স্বপ্ন কি তাহলে বৃথা যাবে,

না, তবে আর কত দিন? 


অভাব-অনটনে লোক চক্ষুর আড়ালে মায়ের চোখে অশ্রু ঝরে।

আমি বাবা মাকে গল্প করতে দেখেছি, তারা মুচকি হেসে বলে, "একদিন ছেলে বড় হবে।"

সেদিন ফুটো হওয়া ভাঙ্গা চাল আর থাকবে না,

ভাতের শূন্য পাতিলও থাকবে পরিপূর্ণ।

তবে সে দিন আর কতদূর ? 


বৃষ্টি আসলে সকলে ভাসে আনন্দের মহা সুখে।

ঘর বাড়ি নেই বললেই চলে,

একখানা ঘর আছে

ফুঁটো দিয়ে আকাশ দেখা যায়,

টিনের ফুঁটো বেয়ে চুঁইয়ে পড়া বৃষ্টি ফোঁটার দিকে চেয়ে,

 তারা কি যেন ভাবে সদা! 


আমি মায়ের কোলে আনমনে বসে তাদের কল্পনা- জল্পনা দেখি।

মায়ের চোখে অশ্রু দেখে আমার আকাশে বিদ্যুৎ চমকায় , 

মা বাবাকে বলে ওগো সন্তানে যেন বুঝতে না পারে,

অভাবের মরন যন্ত্রণা।

আর ক'দিন ভাঙ্গা চাল দিয়ে পরবে বৃষ্টির ধ্বনি ? 


পেটে জঠর জ্বালা অন্নর অভাব সহ্য করেছে কত,

মা উপস থেকে খাইয়েছে আমায়,

বাবা কখনও না বলেনি, চেয়েছি যখন যাহা।

একবারও ভাবিনি সামর্থ্য আছে কি দেবার! 

এভাবে দিন যাবে আর কতকাল?

 

বাবার স্বপ্ন বৃথা যাবে না,

মায়ের চোখের জল আর ঝরতে দেব না,

সংসারে স্বামর্থ আসবে ফিরে,

সেদিন সবাই বলবে, বর্ষায় ঘন মেঘের আড়ালেও সূর্য উঠিল ভাসি। 

এই তো আর বেশি দিন না।

তবে, আর কত দিন বাকী?



• লেখক: মো. হযরত আলী 

ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024