সফলতা নির্ভর করে অনেক যদি কিন্তুর উপর, উদাহরণ স্বরূপ,

বিসিএস ক্যাডার না হয়ে আপনি বেঁচে গেছেন।

কেন? চলুন জেনে নেই??

১. বেতন খুবই কম।এটা সেটা কেটেকুটে হাতে পাবেন ৩৪০০০ বা এর একটু কম বা বেশি!!  বলুন এই টাকায় সংসার চলে? তারচেয়ে নিজের ছোট ব্যবসা বা প্রাইভেট চাকরী হওয়াটাও ভালো!! 

২. খুবই আনস্টাবল লাইফ। আজ এখানে বদলী তো কাল ওখানে বদলী। আপনার স্পাউজ আর সন্তানের ঘরের মালপত্র প্যাকেটিং করতে করতে জীবন যাবে।দিপু নাম্বার টু এর মতন আপনার সন্তানের বন্ধু থাকবে না কারণ বন্ধুত্ব হওয়ার আগেই বদলীর নোটিশ। 

৩.বিসিএস ক্যাডার বলে আপনার কাছে সামাজিক প্রত্যাশা থাকে আকাশচুম্বী। সবাই জানবে আপনার অঢেল ক্ষমতা।কিন্তু আপনি তো জানেন আপনার সীমাবদ্ধতা। তাদের কাজ  করলেন না তো শত্রু হয়ে গেলেন। এই ছোটো জীবনে অকারণে কিছু শত্রু পাবেন শুধুমাত্র অনৈতিক কিছু দাবী না শোনার জন্য।

৪. কিছু ক্যাডারে ২৪/৭ ডিউটিতে থাকতে হয়। দিন-রাত কিংবা পরিবার বলতে কিছু নেই। এমন ও হয়েছে আপন চাচা মারা গেছে দেখতে যেতে পারে নি। চাকরী একটা রুজির পথ শুধু মাত্র পরিবারের জন্য।সেই পরিবার কেই যদি সময় দিতে না পারেন তবে এই  চাকরী করে লাভ কি??

৫. বিসিএস এখন আর "Survival of the fittest" এ নাই বরং "Survival of the fate" থিওরি ফলো করে!!

সুতরাং বিসিএস হয়নি মানে আমি শেষ এটা ভাবাটা ও বোকামী।কারণ Fate এ যেখানে রুজিরোজগারের ব্যবস্হা আছে সেখানে তো যেতেই হবে। আপনি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী হলে ভাগ্যকেও বিশ্বাস করেন!!

৬. আপনি সবসময় একটা বাঁধাধরা নিয়মে থাকবেন। বোরিং ট্রেনিং  থাকবে।এগুলো জীবনীশক্তি শুষে নেয়। আপনার স্বতঃস্ফূর্ততা কেড়ে নেবে। ধীরে ধীরে বিষন্নতা আপনাকে আঁকড়ে ধরবে।

৭. আপনার আন্ডারের অনেক কর্মচারী থাকবে আপনার  নাম করে দুর্নীতি করবে অথচ আপনি একজন সৎ মানুষ। আপনার সততা তাদের কর্মফলে ঢেকে যাবে।আড়ালে মানুষ আপনাকে অসৎ বলবে। এটা আপনার মানসিক কষ্টের কারণ হবে। যতো সৎ থাকুন আপনাকে ঘুষখোর বললেও বলতে পারে। এটা আপনাকে ভীষণ মানসিক পীড়া দেবে।।

৮. কর্মজীবনে শুরুতেই গ্রামে পোস্টিং দেবে। শহরে বা মফস্বলে যাদের বাসা ছিল তাদের এই জীবনে এডজাস্ট করতে অনেক কষ্ট হয়। যারা ভাবেন গ্রামের মানুষ খুবই সহজ সরল তাদের শরৎ বাবুর ভাষায় বলতে হয় এমন গ্রাম সত্য যুগে থাকলে ও থাকতে পারে বর্তমানে অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খুঁজলেও পাবেন।

৯. কিছু কিছু ক্যাডারে প্রচুর Stress নিতে হয়।সত্যি বলতে পাবলিক ডিলিং এর চেয়ে কষ্টের কোন কাজ হয় না।

১০. আজীবন স্যার, ইয়েস স্যার, জ্বী স্যার....স্যার স্যার বলে যেতে হবে। পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করতে হবে। Sir is right এই ফিলোসোফি ফলো করতে হবে।আপনি নজরুলের মতন আপনাকে ছাড়া অন্য কাউকে কুর্নিশ না করলে বিসিএসে না আসাই ভালো।

লেখক : প্রণব মন্ডল, কবি এবং শিক্ষার্থী।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024