|
Date: 2023-08-21 11:51:33 |
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ থানার এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে যৌতুক মামলার ওরেন্টভুক্ত আসামি ধরতে বাদীর কাছে অর্ধ লক্ষ টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত এসআইয়ের নাম আবুল হোসেন।
দাবিকৃত ঘুষের টাকা না দেওয়ায় উল্টো বাদীকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছেন ওই এসআই। এমনকি আসামীকে দিয়ে বাদীর নামে থকনায় একটি চুরির অভিযোগ করান ওই এসআই। পরে বাদিকে আটক করার হুমকি দেন।
এ ধরনের হুমকি পেয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী সোমবার (২১ আগস্ট) বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজির কাছে প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের মানসুরাবাদ গ্রামের মৃত জিন্নাত আলী জোমাদ্দারের ছেলে শামসুল হক জোমাদ্দারের সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের এক বছর পরে স্বামী তার কাছে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় সে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করলে এ ঘটনায় গত ৪ এপ্রিল পটুয়াখালী বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (১ম) যৌতুক নিরোধ আইনের মামলা করে সে। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। গ্রেফতারি পরোয়ানা মির্জাগঞ্জ থানায় আসলে থানার এসআই আবুল হোসেন ভুক্তভোগী ওই নারীকে ফোন করে দেখা করতে বলেন। দেখা করলে তার কাছে আসামিকে গ্রেফতার করার জন্য টাকা দাবি করে এসআই। একপর্যায়ে বাড়িতে এসে ভুক্তভোগী ওই নারীকে না পেয়ে তার বৃদ্ধা মায়ের কাছে ৫০,০০০ টাকা দাবি করেন আবুল হোসেন। পরে মামলার তারিখে আদালতে হাজির হয়ে সংসার করতে রাজি হওয়ার শর্তে আসামীর (স্বামী) জামিন হয়। জামিনের পরে তার স্বামী তাকে বাবার বাড়ি থেকে পাঁচজন লোকসহ এসে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর ২৬ জুন রাতে এসআই আবুল হোসেন একটি নোটিশের ফটোকপি নিয়ে এসে ওই নারীর কাছে গিয়ে তালাক হয়েছে বলে স্বামীর ঘর থেকে বের হতে বলেন। এতো রাতে বের হতে না চাইলে তাকে টেনে-হিঁচড়ে জামাকাপড় ছিড়ে মারধর করে ঘরের দরজার সামনে ফেলে রাখে। পরে ঘরের ভিতরে ঢুকে তার মোবাইল ফোন দিয়ে সবকিছুর ভিডিও করে চলে যায়। পরে ওই নারী ওড়না আনার কথা বলে ঘরের ভিতরে গিয়ে বসে পড়ে। এরপরে হুমকি-ধামকি দিয়ে সকালের মধ্যে ঘর ছেড়ে যেতে বলে শাসিয়ে চলে যায়। কিছু দূর যাওয়ার পরে ওই নারীর মুঠোফোনে কল করে সমাধান করে দেবে বলে আবারও টাকা দাবি করে। এই ঘটনার কিছুদিন পরে ওই নারী আবারো তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। পরে ওই নারীসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে চুরির মামলা হয়েছে বলে জানিয়ে আবারো টাকা দাবি করেন এসআই আবুল। যদি টাকা দেওয়া না হয় তাহলে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যাবে বলে হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী শারমিনের মা বলেন, গত শনিবার আবুল হোসেন বাড়িতে এসে এই বলে হুমকি দেয় যে "আপনাদের বিরুদ্ধে চুরির মামলা হয়েছে। যদি টাকা দেওয়া না হয় তাহলে আপনাদের সবাইকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হবে।"
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই আবুল হোসেনের সাথে থানায় গিয়ে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি বক্তব্য না দিয়ে ফোনে বক্তব্য দেওয়ার কথা বলেন। পরে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, উক্ত ঘটনাটি আমি যোগদানের পূর্বে ঘটেছে। তাই এই বিষয়ে আমি অবগত নই। আগে ঘটনাটি জেনে তারপর বলকে পারবো। তাছাড়া যদি আমার কাছে কোন কপি আসে তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী অফিসিয়াল ফর্মালিটিজ মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি জামিল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
© Deshchitro 2024