প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়(ঢাবি) আয়োজন করতে যাচ্ছে নিজেদের ৫৩ তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান ।  অনুষ্ঠানটিতে অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদেরকেও অংশ গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে । তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য সরাসরি সমাবর্তনের অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও থাকছে না সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য । জানা যায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ডিজিটাল সমাবর্তনের ব্যবস্থা।

 

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছে সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা । সাত কলেজের একটি ফেসবুক গ্রুপে ভার্চুয়াল ভোটের আয়োজন করা হলে সেখানে দেখা যায়, ৯০% ই ডিজিটাল সমাবর্তন চান না । এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় । 


ইডেন মহিলা কলেজের একজন শিক্ষার্থী তাসমিয়াহ্ আমিন বলেন, "সমাবর্তন হলো এমন একটা বিষয় যখন সর্বোচ্চ পদস্থ কারো উপস্থিততে গ্র্যাজুয়েট  শিক্ষার্থীকে সম্মানিত করা হয় । কিন্তু অনলাইনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য সেখানে না আছে কোনো সম্মান, না আছে তেমন কোনো আনুষ্ঠানিকতা"।তিনি দাবি জানান, ঢাবির সাথে এক স্থানে সম্ভব না হলে অন্ততপক্ষে সাত কলেজের জন্য  আলাদাভাবে সশরীরে সমাবর্তন আয়োজন করার। 


ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী এম এম রানা বলেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রামের যাত্রা পালার মতো প্রজেক্টরে সমাবর্তনের আয়োজন করতে যাচ্ছে যা শিক্ষার্থীদের কাছে হাস্যকর"।


তিনি আরও বলেন, "এই ডিজিটাল সমাবর্তন আর ঘরে বসে টিভি দেখা কিংবা বায়স্কোপ দেখার মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখি না। খুবই দুঃখের বিষয় যে, অধিভুক্তর পর থেকে দেশের সবচেয়ে প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠসমূহ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহনকৃত এসব শিক্ষার্থীদের সাথে সমাবর্তনের নামে এমনই এক হাস্যরসাত্মক, ব্যঙ্গকৌতুক করে আসছে প্রশাসন । যাতে করে  সমাজের চোখে হাস্যকর পাত্রে পরিণত হতে হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের "। 


ঢাকা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী মাহদী বলেন-" ঢাবি আর সাত কলেজ এত কাছাকাছি দূরত্ব হওয়া সত্বেও সাত কলেজের ক্যাম্পাসের মাঠে প্রজেক্টরের মাধ্যমে অনলাইনে সমাবর্তন আয়োজন মেনে নিতে পারছি না। তবে এটা সত্যি যে সাত কলেজে শিক্ষার্থী বেশি।কিন্তু তাই বলে অনলাইনের পর্দায় নয় বরং আমরা চাই সাত কলেজ নিয়ে আলাদা সমাবর্তন হোক যেখানে অতিথিদের সশরীরে দেখা যাবে"।


এ বিষয়ে সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্য বলেন, "সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ৫২ তম সমাবর্তনেও প্রজেক্টের মাধ্যমে অংশ নিয়েছিলো। একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ তম সমাবর্তনেও সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের প্রজেক্টের মাধ্যমে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। তবে এ বিষয়টি নিয়ে আমরা তাদের সাথে আলোচনা করবো"।তিনি আরো যোগ করেন,"ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তুলনায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কয়েকগুণ হওয়ায় ভিন্ন ভিন্ন ভেন্যুতে আয়োজন করার কথা ভাবা হয়েছে "।


উল্লেখ্য, সরকারি কাজী নজরুল কলেজ,সরকারি তিতুমীর কলেজ, বাংলা কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও ঢাকা কলেজ এ কলেজ গুলোর ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা কলেজের মাঠে এবং ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা কলেজের ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়ে ইডেন মহিলা কলেজের মাঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য অধিভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ।


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2023