কবি পরিচিতি_

জাকারিয়া আহমেদ পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় এক মুসলিম-মধ্যবিত্ত পরিবারে ২০০২সালের ৫ই জুলাই জন্মগ্রহণ করেন।তার পিতার নাম মোহম্মদ জালাল হাওলাদার এবং মাতা মোসম্মৎ যমুনা খাতুন।তিন সন্তানের তিনিই তার বাবা মায়ের ছোট সন্তান।পরিবারের ইচ্ছায় ছোটবেলা থেকেই মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেন।আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ করে বর্তমানে বরিশাল বিএম কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত অবস্থায় আছেন।উদীয়মান কবি হিসেবে মাত্র অল্পকিছুদিনেই কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কবিতা লিখেছেন যা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে।ভবিষ্যৎ জিবনে তিনি সাহিত্যে অবদান রাখতে চান।লেখালেখির বাহিরে তার স্বপ্ন তিনি একজন প্রকৃত শিক্ষক হবেন।



শিরোনামঃ যখন সন্ধ্যা নামে


রাতের শুরুতে সূর্যাস্তের ক্ষণে সন্ধ্যা নামে বাংলার বুকে;

ব্যস্ততাদের ছুটি দিয়ে সবাই নীড়ে ফিরে সব হিসাব চুকে।

যখন সন্ধ্যা নামে,

সূর্য যাচ্ছে বাড়ি চলে এসেছে গোধুলি লগ্ন;

নিশাচররা অপেক্ষামান আধারে হবে ভ্রমনে মগ্ন।

যখন সন্ধ্যা নামে,

সন্ধ্যামালতীরা উঠে ফুটে ফুটে;

রাত্রি হলে জোঁনাক পোকারা তারার আলোয় চলবে ছুটে ছুটে।

যখন সন্ধ্যা নামে,

গাছের শিরে বিদায়ী সূর্যের রক্তিম আভা দেখা যায়;

বিচরণ সেরে পাখির নীড়ে ফেরায় পাখায় থাকে স্বর্ণরেখা।

যখন সন্ধ্যা নামে,

বৃক্ষরাজির কঁচিপাতাগুলো পড়ে ঘুমিয়ে;

আকাশটাও যেন মিশে আছে নদীর ওপারটা চুমিয়ে।

যখন সন্ধ্যা নামে,

ধীরে ধীরে শূন্য হয় মাঠ-ঘাট;

ক্লান্ত বেশে পথিকরাও ফিরে শেষ করে হাট।

সন্ধ্যা এসে দাড়ালে দুয়ারে প্রকৃতি হয় পূর্ণ,

শিশুরাও ঘরে ফিরে খেলা করে চূর্ণ।

ক্ষনিকের নীরব প্রকৃতির পরে সন্ধ্যা ফিরে যায়;

যাওয়ার কালে সন্ধ্যা তারা মিটিমিটি পিছু ফিরে চায়।



শিরোনামঃ মনে কবে বসন্ত আসবে


তুমি পৌষের প্রভাত কোলে কতখানি হীরাময়ী রোদ্দুর;

শীতের জীর্ণতায় খুঁজি তোমায়,মেঘের আড়ালে লুকাও কোদ্দুর?


লুকিয়ে তুমি হলে মাঘের বিষাদময়ী শেষাংশ;

আমি হলাম কৃষ্ণচূড়া গাছ,পাতা ঝড়ে ঝড়ে হচ্ছি ধ্বংস।


কভু কি আর আসবেনা মন ধারায় বসন্ত হয়ে?

মাঘের হীম শীতল ছোয়ায় যাচ্ছি যে ক্ষয়ে।


প্রতিবেশী পলাশ গাছ দেখে মন হয় অরণ্যে লেগেছে আগুন;

গুচ্ছাকারে ফুটেছে ফুল,তাহলে কি এসেছে ফাগুন?


বসন্ত এসেছে,গাছে গাছে ফুটেছে ফুল বনে;

তবে কেনো ফুটেনি ফুল আমার কৃষ্ণচূড়া মনে?


এই কৃষ্ণচূড়া গাছে_

কবে বসন্ত হয়ে আসবে তা ভাবে মন;

ফুলে ফুলে রক্তিম হব কবে আসবে সে ক্ষণ।



শিরোনামঃবেলি তুমি


শুভ্র বেলির প্রয়োজনে_

মাঘের শিশির স্নাত শীতল প্রভাতে কিরণ হব,

মিষ্টি রোদের আলোতে নিমিষেই জীর্ণতা কাটিয়ে দিব।

প্রিয় বেলির অপ্রয়জনে_

চৈত্রের ভর দুপুরে অগ্নিময় কিরণ হইবো না,

প্রখর রৌদ্র তাপে পুড়িয়ে কৃষ্ণ করিব না।

কোমল বেলির চাওয়াতে_

শ্রাবণ মেঘের ভেলাতে চিরকুট দিব উড়িয়ে,

বৈশাখের পাগলাটে ঝড়ো বাতাসে ভালো লাগা দিব ছড়িয়ে।

ওহে সুগন্ধময়ী_

তোমার পূর্ণতার জন্য বারবার ফাগুন নিয়ে আসিবো,

আমার মনের শহর সুগন্ধীতে ভরে উঠিবো।

হে সুগন্ধময়ী_

আষাঢ়েড় বর্ষা মুখর ঝুম ঝুম ধ্বনিতে,

তোমার প্রতি মুগ্ধ হই  ঐ মন মাতানো সুগন্ধীতে।

হে কোমল মনের বেলি_

তোমার পাশে থাকবো রাত্তিরে তোমার ফোটার কালেতে,

ঝড়ে পড়াতেও সঙ্গে পাবে ভর দুপুর বেলাতে।





শিরোনামঃ  শ্রাবণের এক টুকরো আকাশ তুমি


তোমাকে দেখেছিলাম_

শ্রাবণের কোনো জ্বল জ্বলে 

রৌদ্রে ভরা বিকালের শেষে,

আকাশ দেখার জন্য দাড়িয়েছিলে

সরু শিমুল গাছকে ঘেঁষে।

হাতে কাচের চুরির সাথে

অঙ্গে জড়িয়ে ছিলে নীল শাড়ি 

খোপায় বেঁধেছিলে বেলিরমালা

সমির তার গন্ধ ছড়িয়ে ছিলো ভারী।

নীলের মাঝে শুভ্র মেঘের দিকে

আকাশ পানে তাকিয়ে ছিলে তুমি;

ভাবছি আমি_তুমি যেন তুমি নও

শ্রাবণের এক টুকরো আকাশ ছুয়েছে এ ভূমি।

তোমার আনমনে চেয়ে থাকা বলে দেয়_

"শ্রাবণ গেলে এমন আকাশ পাব কোথায়।"

ঐ দুঃখ যে আমার নাই

মাঘেও আমি খুঁজে নিব,তুমি আছো যেথায়।



শিরোনামঃ জীবন যেন নদীর তীর


নির্জন নিশীথে_

কালো সমীরে ঢেউ আসে পাথারে

কতশত ধার ভাঙে কতশত আঁধারে।

অলখে_

কাঁদে নদী তীর ভাঙার যাতনায়

কতশত যাতনা ঘুচেনি কতশত সাধনায়।

চন্দ্রিমায়_

চাঁদের আলোয় বালুকণারা আর জ্বলেনি

স্রোতের বিপরীতে থেকে যাব বলেনি।

অচেনা প্রতুষ্যে_

তরু বাহু বিছিয়ে দিক ভাঙা তীরে

কতশত রাত পেরিয়ে নদী তার কূল পাক ফিরে।


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024