পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে আপন চাচা ও সৎ মায়ের পাশবিক নির্যাতনে আহত হয়ে জুবায়ের (১৫) নামে এক কিশোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। 


এ ঘটনায় রবিবার (২২ অক্টোবর) নির্যাতিত কিশোরের মামি মারজিয়া বেগম বাদি হয়ে মির্জাগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে অভিযুক্ত চাচা খালিদ সাইফুল্লাহ (২৫) কে প্রধান আসামি করে চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়। 


নির্যাতিত কিশোর জুবায়ের উপজেলার উত্তর আমড়াগাছিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম মোল্লার ১ম স্ত্রীর ছেলে এবং সুবিদখালী দারুসসুন্নাত ফাজিল মাদরাসার ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। একই সাথে সে হাফেজী (২৬ পারা) পড়ুয়া একজন ছাত্র।



লিখিত অভিযোগ ও নির্যাতিত কিশোরের সাথে কথা বলে জানা যায়, কিশোর জুবায়েরকে ছোট রেখে তার মা অন্যত্র বিবাহ করলে তার বাবাও কিছুদিন পর ২য় বিবাহ করে। এরপর থেকেই সৎ মা বিভিন্ন সময় কারণে-অকারণে আমাকে তাকে নির্যাতন করতো আর বলতো তাকে (জুবায়ের) দেখলে নাকী তার (সৎ মা) শরীরে জ্বালা করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার (২০ অক্টোবর)  মাদরাসা থেকে বাড়ি গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর রাত বারোটার দিকে তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে বাবার চোখের সামনেই সৎ মা মিতু ও চাচা খালিদ সাইফুল্লাহ লাঠি দিয়ে এলোপাথারি পেটাতে থাকে। এতে সে মাটিতে লুটিয়ে পরলে গলা চেপে ধরে ও বুকের উপর লাথি মারে আর বলে চুরির কথা স্বীকার না করলে আজ তোকে মেরে বস্তায় ভরে ফেলে দেব। এসব তার বাবা দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখলেও কিছু বলেনি। পরে তারা ওই কিশোরকে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। পরদিন শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তার জ্ঞান ফিরলে টয়লেটে যাবার কথা বলে পালিয়ে আত্মীয় স্বজনের কাছে যায় ওই কিশোর। এরপর তাদের মাধ্যমে থানায় গেলে পুলিশ তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়।


নির্যাতনের বিষয় চাচা সাইফুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ও (জুবায়ের) চুরি করেছে তাই একটু শাসন করেছি। 


নির্যাতিত কিশোরের বাবা সফিক বলেন, যারা বেশি ভালোবাসে তারাই শাসন করে। তবে মারাটা একটু বেশি হয়েছে। 


এবিষয়ে মির্জাগঞ্জ থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ছেলেটি আহত অবস্থায় থানায় আসলে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগও পেয়েছি। তদন্ত করে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024