◾ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান


যেসব গরিব লোক বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভিক্ষা করে, সামান্য অর্থ-কড়ি পেলেই খুশি হয় এবং সমাজের লোকজন তাদের দান-সদকা করে থাকে, ইসলামে তাদের ফকির বলা হয়। কিন্তু সমাজে আরেক শ্রেণির গরিব লোক আছে, যারা আত্মসম্মান ও লজ্জায় প্রকাশ্যে চাইতে পারে না, আবার মানবীয় প্রয়োজনও মেটাতে পারে না, ইসলামে তাদের মিসকিন বলা হয়। ইসলাম এমন লোককে খুঁজে বের করে দান-সদকা করার নির্দেশ দিয়েছে। 


মহানবী (সা.) বলেন, ‘যারা মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে এবং দু-এক গ্লাস খাবার বা দু-একটি খেজুর ভিক্ষা করে ঘরে ফেরে, তারা মিসকিন নয়।’ সাহাবিরা বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, তাহলে মিসকিন কে?’ তিনি বললেন, ‘মিসকিন সে, যার মানবীয় মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর সামর্থ্য নেই; মানুষও তাকে অভাবী বলে জানে না, ফলে কেউ তাকে দানও করে না। এমন ব্যক্তি নিজ থেকে কারও কাছে কিছু চায়ও না (তাদের দান-সদকা করো)।’ (মুসলিম)আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘দান-সদকা ওই সকল দরিদ্র মানুষের জন্য, যারা আল্লাহর পথে আটকে গিয়েছে, ফলে জীবিকার সন্ধানে তারা পৃথিবীতে চলাচল করতে পারে না। না চাওয়ার কারণে অজ্ঞরা তাদের অভাবমুক্ত মনে করে। আপনি তাদের আলামতে চিনতে পারবেন। তারা মানুষের কাছে আকুতি-মিনতি করে ভিক্ষা চায় না। আর তোমরা যে সম্পদ ব্যয় করো, অবশ্যই আল্লাহ সে সম্পর্কে অধিক জ্ঞানী।’ (সুরা বাকারা: ২৭৩)


একইভাবে তাদের কোরবানির গোশত দান করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখন পশুগুলো কাত হয়ে পড়ে, তখন তা থেকে তোমরা খাও এবং যে অভাবী ব্যক্তি মানুষের কাছে হাত পাতে না এবং যে অভাবী হাত পাতে, সবাইকে খেতে দাও।’ (সুরা হজ: ৩৬) 


লেখক: অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024