বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ৬৪টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ৬৪টি মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ৮০ শতাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানাগারের যন্ত্রপাতি অচল । মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী জানেন না বিজ্ঞানাগার কি? আর যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞানাগারের যন্ত্রপাতি রয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে ব্যাবহার হচ্ছে না। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে আলমারিতে নতুন কিছু যন্ত্রপাতি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। অনেকে জানেন না  তাদের প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞানাগার আছে কি না। ফলে ব্যবহারিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে  শিক্ষার্থীরা।

বাড়ছে বিজ্ঞানের প্রতি ভীতি। দিন দিন কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। অথচ বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাসিক ফির সঙ্গে বিজ্ঞানাগার ফি নেওয়া হয়।

উপজেলা মাধ্যমিক  শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মোরেলগঞ্জে  ৬৪টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের  অধিকাংশের বেশি প্রতিষ্ঠানে সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞানাগারের যন্ত্রপাতি দেয়া হয়েছে কিন্তু ব্যবহার হচ্ছে না। নিম্ন মাধ্যমিকেও নেই  বিজ্ঞানাগার।

উপজেলার কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় খবর নিয়ে জানা  গেছে, বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ কক্ষের ভাঙাচোরা  আলমারিতে ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য রাখা হয়েছে কয়েকটি যন্ত্রপাতি। সেসব কক্ষ দীর্ঘদিন ধরে তালাবদ্ধ থাকায় আলমারি ও বইয়ের ধুলার স্তুপ।

মাকড়সার জাল ছেয়ে আছে এদিক-ওদিক। 


মোরেলগঞ্জে সবচেয়ে ভালো ফলাফল অর্জনকারী  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অম্বিকাচরণ লাহা  মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানাগারও চলছে  খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। 


মোরেলগঞ্জ শহরের  এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন,

আমার মেয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাস করেছে। ফলাফল খুব একটা ভালো করেনি। সে যে প্রতিষ্ঠানে পড়েছে, সেখানে এক দিনও ব্যবহারিক ক্লাস হয়নি।

এতে তার মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের প্রতি একরকম ভীতি তৈরি হয়েছে। এখন সে আর বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে চাইছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার একাধিক মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকেরা বলেন, প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞানাগারের জন্য আলাদা একটি ফান্ড আছে, যার নামমাত্র একটি অংশ বিজ্ঞানাগারের কাজে লাগানো হয়। বাকি অর্থ খরচ করা হয় অন্য খাতে, যে কারণে বিজ্ঞানাগার সমস্যার সমাধান হয় না।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম তারেক সুলতান  বলেন, বিদ্যালয়গুলোতে বিজ্ঞানাগার ও বিজ্ঞানচর্চার যন্ত্রপাতি অচল কেন সে বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। তবে উদ্ভাবনী ও সৃজনশীল বিজ্ঞান শিক্ষার লক্ষ্যে উপজেলা প্রাশাসনের উদ্যোগে  উপজেলায় একটি  বিজ্ঞান ক্লাব গঠনের চেষ্টা চলছে ।

জেলা প্রশাসক স্যারের অনুমতি নিয়ে আমরা এটা বাস্তবায়ন করবো, যত দিন বিদ্যালয়গুলোতে  বিজ্ঞানাগার চালু হবে না, তত দিন পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এখানে এসে শিখতে পারবে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024