|
Date: 2023-11-03 14:03:45 |
জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ বলেছেন, 'লুটপাটের উন্নয়ন করায় মানুষ আওয়ামী লীগকে এখন আর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দেখতে চায় না। উন্নয়নের নামে মহাদুর্নীতি হওয়ায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলালের কাছ থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এলাকাবাসী। উন্নয়ন কাকে বলে, তা মানুষের বুঝতে বাকি নেই। বর্তমানে উন্নয়নের নাম ভাঙিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। সেকারণেই আগামী সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির বিকল্প নেই।'
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় দলের এক কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাপা নেতা মোস্তফা আল মাহমুদ।
জামালপুর-২ ইসলামপুর আসনের সংসদ সদস্য ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলালকে ঈঙ্গিত করে
জাপা নেতা মোস্তফা আল মাহমুদ বলেন, 'নামে আগে জোর করে 'কর্মবীর' উপাধি লাগিয়ে নিলেই হয়। ইসলামপুর উপজেলায় যেখানে হাজার হাজার বেকার যুবক চাকরি কর্মসংস্থান না পেয়ে বেকারত্বের অভিশপ্ত জীবনযাপন করছে। সেখানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী তিনি কীসের কর্মবীর? মূলত তাঁরা কোনো বীর নয়। তারা উন্নয়নের নামে মহাদুর্নীতি কায়েম করেছেন।তাদের লুটপাটের ফিরিস্তি মানুষ কখনো ভুলবে না। নদীভাঙনে মানুষ যখন দিশাহারা, তখন তারা বাঁধ নির্মাণের নামে ইসলামপুরবাসীর সঙ্গে তামাশা করে আসছে। ভাঙনরোধে টেকসই বাঁধের দরকার। বালু বাঁধ আর লুটপাটের বাঁধ নির্মাণ করে এলাকাবাসীকে নদীভাঙন থেকে মুক্ত করা যাবে না। যেদিকেই তাকাই, সেদিকেই আপনাদের মহাদুর্নীতির দূরগন্ধ বের হচ্ছে। সর্বস্তরে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য কায়েম করা হয়েছে। মানুষ আওয়ামী লীগের নেতাদের ধিক্কার দিচ্ছে।'
আগামী সংসদ নির্বাচনে ইসলামপুর আসন থেকে এমপি প্রার্থী হিসেবে নিজে অংশ নিবেন উল্লেখ করে মোস্তফা আল মাহমুদ আরও বলেন, 'গত সংসদ নির্বাচনে আমার কাছ থেকে এ আসনটি চেয়ে নিয়েছিলো আওয়ামী লীগ। এবার ছাড় দেওয়া হবে না। এলাকার মানুষ আমাকেই এমপি হিসেবে দেখতে চান। উন্নয়নের নামে সাগরচুরি হওয়ায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর কাছ থেকে মানুষ প্রতিনিয়তই দূরে সরে যাচ্ছে।'
জাপা নেতা মোস্তফা আল মাহমুদ বলেন, 'আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সন্নিকটে। এ নির্বাচনে মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। ভোট দেওয়ার জন্য অধীর অপেক্ষায় আছেন। অতীতে যে ধরনের ভোট হয়েছে, তাতে সন্দেহ রয়েছে। ভোটাধিকার না থাকলে, জনগণের মনোনীত প্রার্থী বিজয় হতে পারে না। জনগণের প্রার্থী বিজয় না হলে, অধিকার প্রতিষ্ঠা হয় না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূলবৈশিষ্ট হচ্ছে, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্রের মালিক হচ্ছে জনগণ। জণগণ ভোট দিয়ে যাঁদের নির্বাচিত করবেন, তাঁরাই সরকার গঠন কবে, তাঁরাই ক্ষমতায় থাকবে এবং তাঁরাই দেশ পরিচালনা করবে। এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের মূলভিত্তি। আজ আমরা সেই গণতন্ত্র থেকে অনেক দূর সরে গিয়েছি। ইসলামপুরবাসী লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। ইতিমধ্যে জাতীয় পার্টি প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করে শক্তিশালী অবস্থা সৃষ্টি করেছে। আগামীতে জনগণ যদি সুযোগ পায়, তবে লাঙ্গল প্রতীকেই ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে বিজয় হবে, এতে কোনো ধরণের সন্দেহ নেই।'
ইসলামপুর পৌর জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কর্মিসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান বিপু, সিনিয়র সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল্লাহ, সহসভাপতি ফেরদৌসুর রহমান সরকার, হারুনুর রশিদ হারুন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুয়েল সরকার।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিলে কর্মিসভাস্থলে উপস্থিত হন নেতা-কর্মীরা। পরে সেখান থেকে নির্বাচনী মিছিল বের হয়ে পৌর শহরের প্রধান সড়ক পদক্ষিণ শেষে থানা মোড় বটতলা চত্বরে শেষ হয়। এতে অন্তত দেড় হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন।
উল্লেখ্য, ইসলামপুর উপজেলা এবং জামালপুর জেলা জাতীয় পাটিরও সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন মোস্তফা আল মাহমুদ। তিনি ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামপুর আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর প্রার্থীতা প্রত্যাহারে করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফরিদুল হক খান দুলালকে সমর্থন দিয়েছেন।
© Deshchitro 2024