নীলফামরীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ টি এম নুরুল আমিন শাহ প্রায় ৬ ধরে একই উপজেলায় চাকরি করার সুবাধে কতিপয় সুবিধাবাদী লোকদের নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তুলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসসহ প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। টাকা ছাড়া কোন কাজ করেন না তিনি। দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করার সুবাদে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঘিরে একটি শক্তিশালী দুর্নীতির বলয় তৈরি করেছেন তিনি।

প্রতিটি মাদরাসা ও হাইস্কুল গুলোতে নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে এমপিওভুক্ত করা কিংবা বেতন ছাড় করানো পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে ধাপে শিক্ষা কর্মকর্তা এ টি এম নুরুল আমিন শাহকে মোটা অংকের উৎকোচ দিতে হয় বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক। তার চাহিদা অনুযায়ী উৎকোচ না দিলে কারও চাকরি ফাইল স্বাক্ষর হয় না এবং এমপিও বেতন ছাড়ের ফাইলও মাসের পর মাস আটকে থাকে। শুধু তাই নয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সরকারি বরাদ্দ আসলে মোটা অংকের টাকা আদায় করেন ওই শিক্ষা কর্মকর্তা। আর এভাবেই তিনি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে নীলফামারীতে কোটি টাকার অট্ট্রলিকা তৈরি করেছেন ।

যেসব প্রতিষ্ঠানে চতুর্থ শেণী কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হবে সে সব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরিক্ষার আগে মোটা অংকের টাকা গ্রহন করেন তিনি। তা নাহলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ন বন্ধ করে দেন। এদিকে সেকেন্ডারী এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইওপি) এর আওতাভুক্ত এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তয়বায়ধীন পারফরমেন্স বেজড গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারী ইন্সটিটিউশনস (পিবিজিএসআই) স্কীম এর আওতায় ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে জবাবদিহি অনুদান হিসেবে ৫লক্ষ টাকা বরাদ্দ পান ছিট রাজিব আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। সেই বরাদ্দকৃত টাকা ৫ ধাপে ব্যয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষকবৃন্দের জন্য প্রণোদনা ১ লক্ষ টাকা, বইপত্র-লাইব্রেরী, শিক্ষা উপকরন এবং গবেষনা সরঞ্জাম ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি,শৌচাগার, কমন রুম ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সহায়তা ৭৫ হাজার টাকা ও প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের ফ্যাসিলিটি উন্নয়ন ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। গত ৩১ অক্টোবর উক্ত বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে শুধু শিক্ষকদের প্রণোদনা ১ লক্ষ টাকা দিয়ে বই বাবদ ৫০ হাজার ও একাটি ডেস্কটপ কিনে বাকী সব টাকা আর্থসাৎ করেছেন ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তার এ অর্থ আতœসাত ও অনিয়মের বিষয়গুলো উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ টি এম নুরুল আমিন শাহকে অবগত করলে, তিনি বলেন আগে আমাকে সরেজমিনে গিয়ে দেখতে হবে। পরের দিন তার দপ্তরে বক্তব্য ও তথ্য নেয়ার জন্য গেলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের হুমকি প্রদর্শন করেন। শুধু তাই না ওই প্রতিষ্ঠানে গেলে তিনি সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। আরও বলেন আপনারা ওই প্রতিষ্ঠানে কেন গিয়েছেন আমি কি আপনাদের যাইতে বলছি। অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললে তিনি বলেন আমি ব্যবস্থার নেওয়ার কে? এবং বলেন আপনারা যে তথ্যের জন্য এসেছেন আমি আপনাদেরকে কোন তথ্য দিতে পারবো না। এদিকে সংবাদকর্মীদের হুমকি দেওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন সংবাদকর্মী সামসুজ্জামান সুমন,ইয়ামনি কবির স্বপন ও আদর আলী।

 এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহজাহান সিদ্দিকী এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন অর্থ আতœসাতের লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংবাদকর্মীদের হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন ওই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসায় আনবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন,অভিযোগ পেয়েছি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2023