প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ নভেম্বর ২০২৩ সোমবার খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিয়ে খুলনা অঞ্চলের ২২টি উন্নয়ন প্রকল্প ও বিভিন্ন স্থাপনা উদ্বোধনের অংশ হিসেবে বহু প্রতিক্ষীত বসন্তপুর নৌবন্দরের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর এলাকায় ৫৮ বছর পর সীমান্ত নদী ইছামতী, কালিন্দী ও কাকশিয়ালী এই তিন নদীর মোহনায় পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে নৌবন্দরটি।
সাতক্ষীরা সীমান্তের ইছামতী, কালিন্দী ও কাকশিয়ালী নদীর মোহনায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের বসন্তপুর গ্রাম।
৫৮ বছর আগেও এ গ্রামে ছিল সমৃদ্ধ নৌবন্দর। এই নৌবন্দরের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্য হতো। তখন বসন্তপুর ইমিগ্রেশন দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করা যেত। এছাড়া সাতক্ষীরায় উৎপাদিত মাছ, কাঠ ও কাঠের তৈরি সামগ্রীসহ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য ভারতে রপ্তানি হতো।
১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পর এই বন্দরটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের খুলনা অঞ্চল নৌ-বন্দরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ বলেন, বন্দরের জন্য নির্ধারিত স্থানে ভিত্তিপ্রস্তর ফলক নির্মাণ করা হয়েছে।
বর্তমান সরকারের আমলে বন্দরটির কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন। একই সঙ্গে তাকে আহ্বায়ক করে বসন্তপুর নদীবন্দর বিষয়ক একটি উপ-কমিটিও গঠন করে জেলা আওয়ামী লীগ।
বসন্তপুর নদীবন্দর বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, সাতক্ষীরার উন্নয়নে কিছু করার তাড়না থেকে কালিগঞ্জের বসন্তপুর নৌ-বন্দরটি চালুর উদ্যোগ মাথায় আসে।
এজন্য ২০২১ সালের ২৮ ফেফ্রয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে আবেদন করি। তিনি বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বন্দরটি চালুর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বসন্তপুর বন্দর’ ঘোষণা দেওয়া হয়। আর সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিয়ে খুলনা অঞ্চলের সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর নৌবন্দরসহ খুলনা অঞ্চলের মোট ২২টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন। বন্দরটি চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দ্বার উন্মোচন হবে।মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, বন্দরটি চালু হলে সাতক্ষীরার অর্থনৈতিক অঞ্চলের একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। এখানে সামগ্রিকভাবে উন্নতি হবে। বিশেষ করে সাতক্ষীরা বাংলাদেশের একমাত্র জেলা যেখানে একটি নদী ও একটি স্থলবন্দর শুরু হলো।