জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারের নৌকা প্রতীকের তোরণ নির্মাণ, বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড, ফেস্টুন ও পোস্টারে সয়লাব। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের মনোনয়ন ভাগিয়ে নিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সৃষ্টি ফেরাতে সংসদ সদস্য পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে ক্ষতাসীন দলের বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা এসব নৌকা প্রতীকের তোরণ নির্মাণ, বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড, পোস্টার ও ফেস্টুন সাঁটানোর প্রতিযোগিতায় নামতে দেখা যায়। পৌর শহরসহ উপজেলাজুড়ে বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন অপসারণের দায় যেন কারও নেই। তবে উপজেলা প্রশাসনের দাবি, ইতিমধ্যে নির্বাচনী আগাম প্রচারণার সব ধরনের সামগ্রি অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বানের তফসিল ঘোষণার দুই সপ্তাহ গড়ালে আগাম নির্বাচনী প্রচারে পোস্টার, বিলবোর্ডসহ নানা উপকরণ লক্ষণীয়।

নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা উন্নয়নের বিভিন্ন ফিরিস্ত তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রী, এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নানান ধরনের বিলবোর্ড, পোস্টার সাঁটিয়েছেন। নিজেদের মুখচ্ছবি-সংবলিত বিলবোর্ড-ব্যানার টানিয়ে নিজেদের পরিচিতির জানান দেন তাঁরা। নির্বাচনী আইন তোয়াক্কা না করেই তাঁরা এসব কাজ করে যাচ্ছেন। এমনকি জামালপুর-২ ইসলামপুর আসনের সংসদ সদস্য ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান দুলালের পক্ষেও যত্রতত্র সেঁটে দেওয়া হয়েছে সরকারের উন্নয়নের বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পৌর শহরের বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন সড়ক, খালেদ মোশাররফ বীরউত্তম সেতু, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম এলাকাসহ ইউনিয়ন পর্যায়ে হাট-বাজারে সরকার দলীয় বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের বিলবোর্ড-ব্যানারে ছেয়ে গেছে। এসব পোস্টারের মধ্যে বেশির ভাগই অপচনশীল প্লাস্টিকে লেমিনেটিং করা।
সরকারের উন্নয়ন প্রচারের নাম ভাঙিয়ে নিজেদের পরিচয় জানান দিতে ভোট চেয়ে, সালাম, শুভেচ্ছা ও নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরতে এসব বিলবোর্ড ব্যবহার করছেন।

১২ জন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনলেও ইসলামপুর আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান দুলাল। এছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য। কিন্তু এঁদের কেউই আগাম নির্বাচন প্রচারে সাঁটিয়ে দেওয়া পোস্টার, বিলবোর্ডসহ নির্বাচনী প্রচারের নানা সামগ্রি সাঁটানোই রয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধির ১১২ বিধিতে বলা আছে,  ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ সময়ের আগে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করা যাবে না। এছাড়া ১৭ বিধিতে উল্লেখ আছে, এ ধরনের প্রচারকে ‘নির্বাচন পূর্ব অনিয়ম’ হিসেবে গণ্য করা হবে। কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কেউ এ অনিয়ম করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। কোনো দল এ নিয়ম অমান্য করলে অনধিক ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।

উপজেলা নির্বাহী নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামান হোসেন চৌধুরী বলেন, 'সম্ভাব্য প্রার্থীদের আগাম নির্বাচনী প্রচারের উদ্দেশ্যের টানানো পোস্টার, বিলবোর্ড ইতিমধ্যে অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'খুব শিগগিরই নির্বাচনী আগাম প্রচারের সব পোস্টার, বিলবোর্ড ও ফেস্টুন অপসারণ করা হবে।'

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024