|
Date: 2023-12-01 13:58:40 |
নিস্তব্ধ, নিদ্রিত বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা দ্বীপটিই যখন ভ্রমনের উদ্দেশ্য তাহলে আর দেরি কেন? শহরের চঞ্চলতাকে পাশ কাটিয়ে, খুব তড়িঘড়ি করেই সময় বের করে যাওয়ার প্রস্তুতি। যাব কিভাবে,কোথায় থাকবো,কি খাবো, এ যেন এক অগোছালো অবস্থা, সীঘ্রই যেন সব কিছুর সমাধান হয়ে গেল।
বর্ষাকালে গেলে কাঁদায় গোসল করতে হয়, তাই ভুল না করে শীতকালেই যাওয়ার পরিকল্পনা। শীতের সময় সাগরও শান্ত থাকে।শীতের মৌসুমে নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণের উদ্দেশ্য বাড়ি থেকে বের হলাম সাথে স্ত্রী ও ছোট মেয়ে।প্রচন্ড হার কাঁপা শীত,সেই শীত নিবারনে মোটাকাপড়, কান টুপি, ভালো জুতা ও রোদের টুপি এছাড়াও টর্চ লাইট,মোবাইল ফোন,পাওয়ার ব্যাংক, বাইনোকুলার, ক্যামেরা, জুম লেন্স,প্রয়োজনীয় ওষুধ, ওষুধ, ওরস্যালাইন ও পতঙ্গনাশক ক্রীম সাথে নিয়েছিলাম।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে দ্রুতযানে শহরে গেলাম, চট্টগ্রাম থেকে বাধন পরিবহন এর বাসে গেলাম নোয়াখালীর সোনাপুর। সোনাপুর থেকে সিএনজি নিয়ে চেয়ারম্যান ঘাট এবং সেখান থেকে ট্রলারে চেপে হাতিয়া, হাতিয়া থেকে বাইকে করে মোক্তারিয়া ঘাট এবং সেখান থেকে আবার ট্রলারে চড়ে স্বপ্নের নিঝুম দ্বীপ।
বাংলাদেশের দক্ষিণ বিভাগের (চট্টগ্রাম) নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত হাতিয়া উপজেলার একটি দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ।
ছোটবেলায় শুনেছিলাম মনের বয়স নাকি কমানো যায়,বিশ্বাস করিনি,কেনইবা করবো বয়স যে কমানো যায় না তা এক নিরেট সত্য। কিন্তু এই সত্যির মাঝেও যে স্বস্তি আছে সেটাও অস্বীকার করা মোটেও সমীচীন নয়। দ্বীপে যাওয়ার সাথে সাথেই নিজেকে কেন জানি হালকা মনে হলো,বাতাস ও সাগরের দিকে তাকিয়ে নিজেকে আবার যুবকদের মতো মনে হচ্ছিল। স্ত্রী,সন্তানের কথা এক দম মনেই নেই আমার,আমি শুধু দীর্ঘ-শ্বাস নিচ্ছিলাম আর নিচ্ছিত হলাম মনের বয়স কমানো যায়।প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতি বার্ধক্যে মানুষের ভেতর থেকেও যে আনতে পারে শিশুসুলভ চঞ্চলতা এটার স্বাক্ষী হয়ে গেলাম।সাগরের পানির ধ্বনি,নিস্তব্ধ ও হাহাকার পরিষ্কার পরিপার্শ সবাইকে মুগ্ধ করার মতো,আমাদের ও তাই করেছে।
বঙ্গোপসাগরের বুকে ও বাংলাদেশের মেঘনা নদীর মোহনায় জেগে ওঠা এই চরটি হাতিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে দুই কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। চর ওসমান, বাউল্লারচর, কামলার চর, ও মৌলভির চর- এই চার চর নিয়ে পুরো নিঝুম দ্বীপ।আমরা একটা ভালোমানের হোটেলে রাত্রিযাপন করলাম।দুই দিনে একে একে সব দ্বীপ দেখে ফেললাম। দুই দিনে আনন্দঘন পরিবেশে ভ্রমণ শেষ করে অবশেষে আবার জনকোলাহল পূর্ন সেই নীড়ের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছিলাম।
লেখক: কাজী মুহাম্মদ হারুন
ডেপুটি রেজিস্ট্রার, শহীদ আবদুর রব হল।
সাংগঠনিক,দপ্তর ও সম্পাদক, চবি অফিসার্স সমিতি।
© Deshchitro 2024