জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে উপজেলা পরিষদ চত্বরের পূর্ব পার্শ্বে নির্মিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি সাজানো হয়। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হলেও ইসলামপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও স্বাধীনতার স্তম্ভটি এবার ছিল অবহেলিত। স্বাধীনতার স্তম্ভটিকে সাজানো হয়নি মহান স্বাধীনতার বিজয় দিবসের রংগে। যদিও বীর শহীদদের স্মরণে এ উপজেলায় প্রথম বারের মতো নির্মিত স্থানীয় জনতা মাঠে ইসলামপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও স্বাধীনতার স্তম্ভটি।

স্থানীয় জানা যায়, জেলার মধ্যে প্রথম নান্দনিক এবং উপজেলার মধ্যে প্রথম নির্মিত শহীদ মিনারটি আজ অনাদরে, অবহেলিত। আগে প্রতিটি জাতীয় দিবসগুলোতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষজনের পদচারণায় শহীদ মিনারের পাদদেশ পরিপূর্ণ হলেও এবার ছিল জনশূন্য। 

সরেজমিনে দেখা যায়, এবার বিজয় দিবসে স্থানীয় জনতা মাঠে নির্মিত ইসলামপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও স্বাধীনতার স্তম্ভটিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক করা হয়নি। প্রতিবছর বিভিন্ন জাতীয় দিবসসহ স্বাধীনতা দিবসে শহীদ মিনার ও স্বাধীনতার স্তম্ভটিকে সাজানো হলেও এবার ছিল ব্যতিক্রম। স্বাধীনতার স্তম্ভটি সাজানো হয়নি। পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতাও করা হয়নি স্তম্ভটি।

স্বাধীনতার স্তম্ভটির নাম ফলক থেকে জানা যায়,  ২০০৫ সালে ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে অন্তত ৫০ ফুট উচ্চতা ইসলামপুর উপজেলায় স্বাধীনতার পর প্রথম বারের মতো নির্মাণ করা হয় ইসলামপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও স্বাধীনতার স্তম্ভটি। নির্মাণের পর থেকে স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্তরের লোকজন বিশেষ দিনে এখানেই ফুল দিতেন।

স্থানীয়রা জানান, ২০০৫ সালে নির্মাণের পর থেকে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে উপজেলার সরকারি ও বেসকারি সংস্থাসহ বিভিন্ন স্তরের লোকজন ইসলামপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও স্বাধীনতার স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে আসছিলেন। নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানেন না এই শহীদ মিনারে কথা। পারভেজ মিয়া নামে এক কলেজছাত্র বলেন, ‘শনিবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সবাই নতুন নির্মিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছে। আমরাও সেখানে ফুল দিয়েছি।’

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নিম্ন অঞ্চলীয় ঐক্যজোটের সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম কালা মানিক বলেন, ‘ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে এ উপজেলায় প্রথম নির্মিত শহীদ মিনারের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত।’

দিবস উদযাপনে দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশ না করা শর্তে সরকারি এক কর্মকর্তা বলেন, 'বিজয় দিবস উদ্‌যাপন কমিটি এই শহরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে। প্রস্তুতি সভার বৈঠকে বিজয় দিবস উদ্‌যাপন কমিটির কেউ বিষয়টি উত্থাপন করেননি। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের সীমানা প্রচীরের পূর্ব পাশে নবনির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের সিদ্ধান্ত হয়।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'এ উপজেলায় আমি সদ্য যোগদান করেছি। সেকারণেই ইসলামপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও স্বাধীনতার স্তম্ভটিকে পরিত্যক্ত করা হয়েছে কি না, সেটা আমার জানা নেই।'

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এসএম জামাল আব্দুন নাছের বাবুল বলেন, 'উপজেলা পরিষদ চত্বরের পূর্ব পার্শ্বে নির্মিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিজয় দিবসের পুষ্পস্তবক করা হয়েছে। অতীতে জাতীয় দিবসগুলোতে শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও স্বাধীনতার স্তম্ভে পুষ্পস্তবক করা হতো। এখন নতুন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক করা হয়।'

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024