একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করায় বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ধন্যবাদ জানিয়েছে কানাডার নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা। রোববার (৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ শেষে তারা তাদের এ মত প্রকাশ করেন।


এক বিবৃতিতে কানাডীয় পর্যবেক্ষকরা বলেন, আজ বাংলাদেশের নাগরিকরা তাদের মৌলিক ও মূল্যবান অধিকার প্রয়োগ করে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে ভোট দিয়েছেন। গণতান্ত্রিক চেতনায় বাংলাদেশের নাগরিকরাই নির্ধারণ করবেন, দেশকে এগিয়ে নিতে আগামী পাঁচ বছরের জন্য কারা তাদের ম্যান্ডেট পাবেন। আমরা নতুন নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দেখার অপেক্ষায় আছে, যাদের ওপর পরবর্তী সরকার পরিচালনার ভার পড়বে।


 ‘নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোয় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। যে কোনো গণতান্ত্রিক দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা প্রত্যক্ষ করা অবশ্যই সম্মানের। ঢাকায় পা রাখার আগেই আমরা কাজ শুরু করেছিলাম। এখানে আসার আগে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন খবর আমরা পড়েছি। বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন আমরা দেখেছি,’ যোগ করেন তারা।

 

কানাডীয় পর্যবেক্ষকরা বলেন, বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনের বর্জনের ডাক দিয়েছে। নির্বাচন বর্জনের পরেও ২৮টি রাজনৈতিক দল থেকে রেকর্ড সংখ্যক নারী ও ট্রান্সজেন্ডার (তৃতীয় লিঙ্গের) প্রার্থী এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্বতন্ত্রসহ এক হাজার ৯০০ জনের বেশি প্রার্থী এই নির্বাচনে লড়েছেন। গতকাল, আজ ও আগামীকাল হরতাল ডেকেছে একটি বড় রাজনৈতিক দল। নির্বাচনের প্রচারের সময় কিছু বিচ্ছিন্ন সহিংসতার ঘটনা আমরা দেখতে পেয়েছি।

 

তারা আরও জানান, বাংলাদেশে আসার পর বিভিন্ন দল ও মতের লোকজনের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। নির্বাচন ও এর প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাদের কাছ থেকে মতামত জেনেছি। সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অবাধ ও পরিপূর্ণ অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে স্বাধীনভাবে যেতে পারছেন কিনা কিংবা তারা সন্তোষজনকভাবে নির্বাচনী প্রচার করতে পারছেন কিনা; সেই বিষয়েও আমরা খোঁজ নিয়েছি।

 

‘ভোটকেন্দ্রে আসতে তরুণ ভোটারদের উৎসাহিত করতে ব্যাপক চেষ্টা করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদের কোনো অভিযোগ থাকলে তা নিরসন করার সুযোগও বাংলাদেশের আইনে রয়েছে।’

 

পর্যবেক্ষকরা আরও জানান, আমরা ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে নির্বাচনী কার্যক্রম নিজেদের চোখে দেখেছি। ভোটকেন্দ্রগুলোতে আমাদের নিঃশর্ত প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া ও একটি ধর্মীয় সংখ্যালঘু-প্রধান এলাকায় আরেকটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। এই নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ পক্রিয়ায় আমাদের কোথাও বাধার মুখে পড়তে হয়নি।

 

বিবৃতিতে সই করেছেন কানাডীয় পার্লামেন্ট সদস্য চন্দ্রা আর্য ও সিনেটর ভিক্টর ওহ।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024