|
Date: 2024-01-22 08:47:57 |
আশাশুনিতে লাইসেন্স বিহীন ইটভাটা পরিচালনার পাশাপাশি শিশু শ্রমিকদের কাজ করানো হচ্ছে। এছাড়া কয়লার পরিবর্তে পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ ও টায়ারের গুড়া। আশাশুনির অধিকাংশ ভাটায় দেখা যায় ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ ও টায়ারের গুড়া। যা কালি নামে পরিচিত ভাটা শ্রমিক ও মালিকদের কাছে।বুধহাটা বাজারের পাশে অবস্থিত বুধহাটা বিক্রস ভাটায় যেয়ে দেখা যায়, নদীর মাটি কেটে নিয়ে তৈরী করা হচ্ছে ইট। এছাড়া কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে ইট পোড়ানোর কাজে। উপজেলার গুনাকরকাটি এস এ বি ব্রিক্স ভাঁটায় অবাধে কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট, দেখার যেন কেউ নেই। প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে, নিয়ম নীতি না মেনে পোড়ানো হচ্ছে কাঁঠ। ইট তৈরি ও ভাঁটা স্থাপনা আইন মানার বালাই নেই। সরকারি মাটি, কৃষি জমির মাটি ব্যবহার হচ্ছে ভাঁটায়। ভাঁটার কাজে ব্যবহৃত ডাম্পার গাড়ি ও ট্রলিতে রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই ভাঁটায় বেতনা নদীর মাটি দিয়ে তৈরি করছেন ইট। ওয়াবদার স্লোবে দুই তালা পাঁকা ঘর ও অফিস থাকলেও দেখার কেউ নেই।। ভাঁটার শুরুতে বিভিন্ন খাঁস জায়গার সম্পত্তির মাটি ক্রয় করেন তিনি। এমনই অভিযোগের ভিত্তিতে গুনাকরকাটি এস এ ব্রিক্সে গেলে দেখা যায় ভাঁটায় বিভিন্ন জায়গায় বনজ ও ফলজ কাঠের স্তুপ। তুষ কাঠ ভর্তি ঘরে। কিন্তু কোন জায়গায় কয়লার দেখা পাওয়া যায়নি। বেতনা নদীর মাটি কেটে ভাঁটার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ভাঁটায় ইট তৈরির ফলে পাশে কৃষি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া পাশে লোকালয় অবস্থিত। যার ফলে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের বায়ুবাহিত রোগ হচ্ছে। বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশের। স্থানীয়রা জানান দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতির মুখে পড়তে পারে এলাকাবাসি। জানা যায় ফসলি জমি নষ্ট করে এ ভাঁটা তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অনুমোদনহীন এসব ইটভাটার চিমনি নির্দিষ্ট উচ্চতা না করে কম উচ্চতা সম্পন্ন। এসব ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানোর কারণে বাড়ির গাছ-গাছালি ও বসতবাড়ির আঙ্গিনায় কালো ছাইতে পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এমনকি খাওয়ার সময় বাতাসে ভাতের থালাতেও পড়ছে। ফলে তাদের বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতেও ভুগতে হচ্ছে। এসমস্ত ইট-ভাটা বন্ধের জন্য প্রশাসনকে বলেও কোন ফল হচ্ছে না। এসব ইটভাটার কারণে কৃষি সমৃদ্ধ আশাশুনি উপজেলায় লিচু, আম ও ধানের ফলন কমতে শুরু করছে? তাই মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টির আগে পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।কৃষি জমির উপরের মাটি কেটে নিলে তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে ২০/৩০ বছর সময় লেগে যায়। স্কুল কলেজ বসতবাড়ির এক কিলোমিটারের মধ্যে ভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকলেও তা মানছে না ভাটা গুলো। ফলে ভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় দেখা দেয় নানা রোগ ব্যাধি। তাই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে র্দীঘমেয়াদী ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।এদিকে অভিযোগ রয়েছে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ম্যানেজ করে দিনের পর দিন চলছে এসব অবৈধ ইটভাটা। এলাকাবাসীর অভিযোগ নদী, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, স্বাস্থ্য ও মানুষের বসতির ক্ষতি করে চলছে অবৈধ এসব ইটভাটা। এসব ভাটাতে পরিবেশ, ফায়ার, ট্রেড, বিএসটিআইসহ কোন ছাড়পত্র নেই, কিন্তু আইনের তোয়াক্কা না করে ভাটা চালিয়ে যাচ্ছে। ইটভাটা তদারকি করার জন্য জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বন বিভাগ, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তাদের রহস্যজনক নীরবতার কারণে আশাশুনির অধিকাংশ ইটভাটা মালিক এসব আইনের তোয়াক্কা না করে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে দেদারে তাদের অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
© Deshchitro 2024