|
Date: 2024-02-07 20:20:18 |
◾বাসস ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা, সুদূরপ্রসারী কার্যক্রম ও গঠনমূলক পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ বিগত ১৫ বছরে সর্বক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছে। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা আগামী ৫ বছরেও অব্যাহত রাখতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর।’
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা আজ বুধবার তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য চয়ন ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার দলকে আগামী পাঁচ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার আরেকটি সুযোগ দেওয়ার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের ২০ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে আমরা তা টেকসই করতে চাই। জনগণ আওয়ামী লীগ সরকারকে ভোটের মাধ্যমে ম্যান্ডেট দিয়ে উন্নয়নের সুযোগ দিয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষ্যে ২০৪১ সাল নাগাদ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যার উদ্দেশ্য হলো স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ। এই চার স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে টেকসই ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রসারের মাধ্যমে অন্তর্ভূক্তিমুলক উন্নয়ন নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উন্নত, সমৃদ্ধশালী ও দারিদ্রশুন্য রাষ্ট্রে পরিণত করা।
প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরুর আগে শেখ হাসিনা বলেন, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের জন্য অনেক বাধা ও ষড়যন্ত্র ছিল। আমি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে এদেশের ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে গিয়েছে। তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। নির্বাচনে আমাদেরকে জয়ী করে দেশ সেবার সুযোগ দিয়েছে। তাই নির্বাচনের যারা আয়োজক ছিল যেমন নির্বাচন কমিশন, আইন-শৃঙ্খলা সংস্থা, সশস্ত্র বাহিনী, জনপ্রশাসন, বাংলাদেশের জনগণ, সকলকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য।
তিনি বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমি যে এলাকা হতে নির্বাচিত হয়েছি, গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া-টুঙ্গিপাড়ার জনগণের প্রতি। নির্বাচনে আমার খুব খাটতে হয়নি। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও স্থানীয় জনগণ সকলেই মিলে নির্বাচনে আমাকে ভোট দিয়ে, নির্বাচনী বৈতরণী পার করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মত বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন একটি কার্যকর নির্বাচন কমিশনে পরিণত হয়েছে। সরকারের পদক্ষেপ এবং উদার ও গণতান্ত্রিক মনোভাব, আইনের শাসনের প্রতি আকুণ্ঠ শ্রদ্ধাশীল থাকার কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। গত ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্বের ৪৮টি দেশের রাষ্ট্র/সরকার প্রধান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন। ২৫টি আন্তর্জাতিক সংস্থা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমুলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশকে অভিবাদন জানিয়েছে।
বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় পড়ে গেলাম, যার ফলে আমাদের কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমাদের কিছু খরচের ব্যাপারে মিতব্যয়ী হতে হয়েছে, কিছু সংকুচিত করতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা এখন অতটা খারাপ নেই। ডলারের সংকট যথেষ্ট ছিল।
তিনি বলেন, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা মনিটরিং বাড়িয়েছি। অনেক ক্ষেত্রে এলসি খোলার নামে যতটা প্রয়োজন নয় তার চেয়ে বেশি দিয়েও অনেকেই এলসি খোলে। কিন্তু ওই টাকাটা ফেরত আসে না। এ কারণে সরকার পণ্য কেনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ব্লুমবার্গের মূল্য তালিকা দেখে সেটা মনিটর করে এলসি খুলতে দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এলসি খুলতে যে অসুবিধার কথা বলা হচ্ছে তা নয়, আগে যেভাবে যখন-তখন খোলা হত, এখন সেটা ইচ্ছেমত হচ্ছে না, সেটা নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে।
রপ্তানি আয় খুব একটা কমেনি বলেও উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, যেসব দেশে আমরা রপ্তানি করি, এমনকি যেগুলো খুব ধনী দেশ তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে। বাজার সংকুচিত হয়েছে, সেখানে অর্ডার কমেছে। অর্থনৈতিকভাবে তারা খুব চাপে আছে, তাদের মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। তারাই কারণে হয়তো কিছুটা কমেছে। আর পদ্মা ব্যাংকের মতো যেসব ব্যাংক চালাতে পারছে না সেসব ব্যাংকে একীভূত করার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা বসে নেই, কাজ করে যাচ্ছি।
© Deshchitro 2024