দেশে প্রথমবারের মতো অফশোর ব্যাংকিং আইন করতে সংসদে বিল উঠেছে। শনিবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সংসদের বৈঠকে ‘অফশোর ব্যাংকিং বিল–২০২৪’ উত্থাপন করেন। পরে বিলটি পরীক্ষা করে এক দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। উত্থাপিত বলা হয়েছে, অফশোর ব্যাংকিং অর্থ বহি:উৎস এবং অনুমোদিত বিশেষায়িত অঞ্চলে পরিচালিত শতভাগ বিদেশি মালাকানাধীন প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত উৎস থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় প্রাপ্ত তহবিল দ্বারা এই আইনে বর্ণিত শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক, সময় সময়, জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী অনিবাসী বা ক্ষেত্রমত বাংলাদেশে নিবাসী ব্যক্তির সঙ্গে পরিচালিত ব্যাংকিং কার্যক্রম। বিলে বলা হয়েছে, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, বেসরকারি রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কসমূহের শতভাগ বিদেশি মালাকিনাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আমানত গ্রহণ করতে পারবে।


পাশাপাশি অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট তাদের স্বল্প মেয়াদি ঋণ ও অগ্রিম বা বিনিয়োগ, ঋণপত্র ও গ্যারান্টি সুবিধা প্রদান, বিল ডিসকাউন্টিং, বিল নেগোশিয়েটিং এবং অন্যান্য বৈদেশিক বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট বহিঃলেনদেন সেবা দিতে পারবে। বিলে বলা হয়েছে, অনিবাসী বাংলাদেশি, বিদেশি ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট আমানত ও ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। বিলে বলা হয়েছে, অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনার আলোকে সংশ্লিষ্ট তফসিলি ব্যাংক পর্ষদের অনুমোদিত নীতিমালা থাকতে হবে। তফসিলি ব্যাংকের অফশোর কার্যক্রমের জন্য পৃথক হিসাবপত্র সংরক্ষণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ অনুমোদনে অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিং ইউনিট থেকে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে তহবিল স্থানান্তর করা যাবে। বিলে বলা হয়েছে, অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট যেকোনো অনুমোদিত বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব পরিচালনা করতে পারবে।


অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসায় অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট কর্তৃক আমানতকারী বা বেদৈশিক ঋণদাতাগণকে প্রদেয় সুদ বা মুনাফা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করমুক্ত থাকবে। আমানতকারী বা বৈদেশিক ঋণদাতাদের হিসাব যে কোনো প্রকাশ শুল্ক ও লেভি মুক্ত হবে। আইন না থাকলেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশে একভাবে অফশোর ব্যাংকিং চালু আছে ১৯৮৫ সাল থেকে। পরে ২০১৯ সালে অফশোর ব্যাংকিং নীতিমালা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর কয়েকটি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়। এখন এ বিষয়ে আইন করা হচ্ছে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2023