|
Date: 2024-03-08 09:38:19 |
শত বছরের বহুল প্রতীক্ষিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ গত বছরের নভেম্বর মাসেই উদ্বোধন করেছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী বক্তব্যে সেদিন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘কথা দিয়েছিলাম, কথা রাখলাম। চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ হলো। রেল সংযোগে অন্তর্ভুক্ত হলো দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের শহর কক্সবাজার। তাতে আমিও আনন্দিত। মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল রেললাইন নির্মাণ করার। সেই রেললাইনের উদ্বোধন হলো আজ।
দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার। পর্যটকরা স্টেশনের লকারে লাগেজ রেখে সারা দিন সমুদ্র সৈকতে বা দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে পারবেন। শতভাগ পূর্ণতা পেলে এ স্টেশন দিয়ে দিনে ৪৬ হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করতে পারবে। নির্মিত হয়েছে দেশের একমাত্র দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশন। এ স্টেশনটি অত্যাধুনিক একটি স্টেশন। পুরোটাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এতে রয়েছে পর্যটকের জন্য সব সুযোগ-সুবিধা। আধুনিক ট্রাফিক সুবিধা। স্টেশনের নিচতলায় টিকিট কাউন্টার, অভ্যর্থনা কেন্দ্র। দ্বিতীয় তলায় শপিংমল ও রেস্তোরাঁ। তৃতীয় তলায় তারকা মানের হোটেল। রয়েছে মসজিদ, শিশু যত্ন কেন্দ্র, এটিএম বুথ, পোস্ট অফিস, ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন বুথসহ নানা সেবাকেন্দ্র।
এক সময় মানুষ স্বপ্ন দেখত- ট্রেনে করে কক্সবাজার যাবে, ঘুরবে, আনন্দ করবে। সেই স্বপ্ন আর স্বপ্ন রইল না; বাস্তবে রূপ নিল। বাণিজ্যিক রেল যোগাযোগের মাধ্যমে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগের দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এ রেললাইন পর্যটন অর্থনীতিতে সুবাতাস বয়ে আনার পাশাপাশি বহুমাত্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সূচনা হয়েছে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কপথের দূরত্ব দেড় শ’ কিলোমিটার। সড়কপথে বাসে যেতে সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা। আর এ মহাসড়কে যানজটে পড়লে ছয়-সাত ঘণ্টাও লেগে যায়। এ রেলপথ চালু হওয়ার ফলে ছয়-সাত ঘণ্টার এ দূরত্ব নেমে এসেছে অর্ধেকে; কমছে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও। আর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আসার পাশাপাশি সুযোগ সৃষ্টি হবে পর্যটন অর্থনীতির বহুমাত্রিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের।
পর্যটনের পাশাপাশি রেলের সুফল পাবে কক্সবাজারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের আরও কয়েকটি খাতে। সেসব খাতের মধ্যে রয়েছে- লবণ, কৃষিপণ্য, মৎস্য ও শুঁটকি। পণ্যবাহী রেল চালু হওয়ার ফলে এসব পণ্য কম খরচে আনা-নেয়ার সুযোগ তৈরি হবে। কৃষিপণ্য সহজে আনা-নেয়ার সুবিধা থাকলে কৃষকেরও দাম পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যেও কিছুটা গতি আনতে পারে নতুন এ রেলপথ।
এ ছাড়া বিনিয়োগ বাড়বে পর্যটন, কৃষি ও চিংড়ি শিল্পে। ফলে গতি পাবে এ কক্সবাজারসহ দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির চাকা।
© Deshchitro 2024