চীনে দেশের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষার জন্য নতুন যে আইন প্রণীত হয়েছে, তা কার্যকর হবে ১ মে থেকে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি যেটাকেই গোপন মনে করে, সেটাই এই আইনে গোপন হিসেবে অভিহিত হবে বলে জানা গেছে। আর কেউ এই গোপনীয়তার আইন ভঙ্গ করলে তাকে অনেক বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে, এমনকি মৃত্যুদণ্ডও পেতে পারে। ফলে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন কী, তা জানা দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো সেটাই গোপনীয় রয়ে গেছে।


৮ মার্চ, শুক্রবার চীনের শীর্ষ আইন প্রণেতা ঝাও লেজি জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সরকার তার শাসনকার্যে হুমকিগুলো দূর করতে চায়। তাই এই নতুন নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।


ঝাও লেজি আরও বলেন, আইন প্রণেতারা চীনের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন স্বার্থকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করার জন্য ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস (এনপিসি) এর এজেন্ডা তৈরি করেছেন।


তিনি বলেন, চীনের ব্যবস্থা এবং জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষমতাকে আধুনিকীকরণ করতে, বেইজিং একটি জরুরি ব্যবস্থাপনা আইন, শক্তি আইন, পারমাণবিক শক্তি আইন এবং বিপজ্জনক রাসায়নিক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করবে। এটি জাতীয় প্রতিরক্ষা শিক্ষা আইন এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধন করবে।


আইনটিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা এবং স্বার্থের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো হলো রাষ্ট্রীয় গোপনীয় বিষয়। তবে বিষয়টি নিয়ে যে অস্পষ্টতা রয়েছে, তা কাটানো হয়নি।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আইনের ফলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্য সংগ্রহ ও যোগাযোগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে। বিশেষ করে সাংবাদিক, গবেষক, অধিকারকর্মী, আইনজীবীদের কাজ করা কঠিন হয়ে যাবে। ব্যবসা, বিজ্ঞান ও কারিগরি ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের সহযোগিতাও সমস্যায় পড়তে পারে।


তবে চীনের শীর্ষ আইন প্রণেতা আইনগুলো কী থাকবে বা কখন সেগুলো গৃহীত হবে সে সম্পর্কে বিবরণ দেননি। এনপিসি আর্থিক স্থিতিশীলতা থেকে শুরু করে প্রি-স্কুল শিক্ষা এবং রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আইন প্রবর্তন এবং সংশোধন করতেও প্রস্তুত চীন।


হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং চীনা রাজনীতি বিশেষজ্ঞ জিন-পিয়েরে ক্যাবেস্তান বলেন, চীনের আইন প্রণেতাদের জন্য সামরিক শিক্ষা এবং সাইবার নিরাপত্তা সুস্পষ্ট অগ্রাধিকার পাবে। তারা এই ক্ষেত্রগুলোতে আইনি কাঠামোকে শক্তিশালী করতে চায়, যা চীনের প্রেসিডেন্টের অগ্রাধিকারের অংশ।


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024