|
Date: 2024-03-12 14:25:31 |
পরিবার ছেড়ে থাকা সবার জন্যই কষ্টের।তাও যদি হয় রমাদানের মতো পবিত্র মাসে সেহেরি,ইফতারের সময় তা সত্যিই হৃদয়বিদারক। তবে,জীবিকা নির্বাহ এবং শিক্ষা অর্জনের খাতিরে অনেককেই থাকতে হয় পরিবারে ছেড়ে দূরে।কিংবা প্রবাসে।
আজ মঙ্গলবার (১২ ই মার্চ) সম্পন্ন হলো প্রথম রমাদান।এদিনে দূরে থাকা শিক্ষার্থীদের অনুভূতি জানার চেষ্টা করেছে দৈনিক দেশচিত্র।
ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জামিয়া এমি বলেন,বাড়িতে পুরো পরিবারের সাথে ইফতার করা হতো৷ কিন্তু সৎ উদ্দেশ্য বাড়ি থেকে ঢাকায় এসেছি। এখানে পরিবার পরিজন কেউ নেই।সবার আলাদা রান্না করে খেতে হয়। ইফতার হলো মুসলিমদের আত্মত্যাগ,ধৈর্য, এবং সহানুভূতির শিক্ষা।সারাদিনের রোজা রাখার পর পুনরজ্জীবিত হতে সাহায্য করে। এটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানও যা পরিবার এবং বন্ধুদের একত্রিত করে। সেই জায়গা থেকে একা একা ইফতার এবং সাহরি করা অত্যন্ত কষ্টের,বেদনার। পরিবারের সব সদস্যদের প্রতিটা কাজে,সময়ে মিস করি। বিশেষ ভাবে বাবা মা কে।ইফতার এবং সাহরি পরিবারের সাথে করাটা অত্যন্ত ভাগ্যের ব্যাপার।পড়াশোনার স্বার্থে আজ পরিবারের বাইরে।
আরেক নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ফারহানা সুলতানা নুপুর বলেন,
বাসায় যখন থাকতাম তখন কোনো কাজ করতে হতো না। আম্মু বিকেল থেকে ইফতার তৈরিতে ব্যস্ত থাকতো। বড় আপু ছোটবোন সাহায্য করতো। আমি পছন্দের খাবার গুলো প্লেটে নিয়ে আজানের অপেক্ষা করতাম ।আজান দিলে আব্বু,আম্মু,বোনেরা আর আমি একসাথে ইফতার করতাম।
আর আজকের ব্যাপারটা যেন পুরোটাই ভিন্ন।দুপুরে নামাজ পরে ডিউটিতে গিয়েছি। সেখানে একটার পর একটা ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করেছি।আসরের নামাজ পরে যখন হসপিটালে ফিরে এসে অন্যান্য পেসেন্টের মেডিসিন ইনজেকশন দিতে দিতে ৬:০০ টা বেজে যায়।দায়িত্ব পালন শেষে বের হয়ে ইফতার কিনে রুমে আসলাম ৬:০৭ এ।ফ্রেশ হওয়ার আগেই আযান দিয়ে দিলো।তারপর কোন রকম ইফতার করলাম।নামাজের পরে আবার ৯ টা অবধি ডিউটি।এই হলো যান্ত্রিক জীবন।এই হলো কর্মের খাতিরে পরিবারের বাইরে কাটানো সময়।তবুও শান্তি অনুভব করি মাহে রমজানে পবিত্র মাসে।
রাজধানীর তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী পিকুল মোল্লা জানায় বাড়িতে পালন করা রমজান আর ঢাকায় পালন করা রমাদান যেন আকাশ পাতাল তফাত।
সবুজ শ্যামল গ্রাম,গ্রামের সহজ সরল মানুষ।রমাদান এলেই যেন আমাদের মাঝে শান্তির একটা বাতাস প্রবাহিত হয়।মসজিদে মানুষের আনাগোনা বেড়ে যায়।বিকেলে বাড়িতে ইফতার তৈরীতে সাহায্য করি মাকে।অথচ ঢাকাতে যেন বদ্ধ কূপে জীবন পার করছি।সবসময় বাড়িকে অনুভব করি।মনে হয় কবে আবার নিজের জন্মভূমিতে স্থায়ী হবো।
ইফতার করলাম ঠিকই বাজারমূল্য অবাক করার মতো।ভালোমানের ইফতারি করতে প্রায় ৮০-১৫০৳ খরচ হবে।খেজুর,মুড়ি,ছোলা,পেঁয়াজ, দুধ,কলা,বেল,সকল ফল সবই বিক্রি হচ্ছে দেড় থেকে দুইগুন দামে।
রমাদানে যেন আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা দস্যুতে পরিণত হয়।চাওয়া থাকবে আল্লাহ তাদের হেদায়েত দান করে।
সবমিলিয়ে যান্ত্রিকজীবনে খুব খারাপ নেই।তবে,খুব ভালোও নেই।
© Deshchitro 2024