লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সোশ্যাল  ইসলামী ব্যাংক চর বংশী বাজার এজেন্ট  শাখায় আসমা আক্তার নামে এক বিধবার ৭ লক্ষ   টাকা  আত্মসাৎ ও গ্রাহককে ডাকাতির অভিযোগে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে ঐ শাখার মালিক পক্ষ  মো: ফজলুল করিমের বিরুদ্ধে।  সীলমহোর সম্মিলিত ক্রেডিট রসিদ থাকলেও   অর্থ আত্মসাৎের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস নিয়ন্ত্রণকারী জেলা সোশ্যাল ব্যাংকের ম্যানেজার.।  


 ঐ ব্যাংকের  চর বংশী এজেন্ট শাখায় গত ২২ সালের ৫ মে ৬ লক্ষ, ৭ জুলাই ১ লক্ষ এবল ৪ আগস্ট ৫০ হাজার মোট সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা জমা রাখেন চর বংশী ইউনিয়নে গ্রাহক আসমা আক্তার। স্বামীর মৃত্যুর পরবর্তী বাবার বাড়ির জমি বিক্রি করা শেষ সম্বল জমা রাখেন ঐ এজেন্ট ব্যাংকে। এ বছরের জানুয়ারির ২৪ তারিখে ব্যাংক স্টেটমেন্টে দেখেন তার একাউন্টে টাকা রয়েছে মাত্র ৫১ হাজার। টাকা পেতে নানা জায়গায় ধরনা দিয়েও ফল পাননি। এদিকে  ফজলুল করিম ২ জন লোক নিয়ে নিজেই  ব্যাংকের তালা ভেঙে ঐ ভুক্তভোগীকে ফাঁসাতে থানায় তাদের নামে অভিযোগও দায়ের করেন। কিন্তু  তিনি নিজেই বলেছেন ব্যাংকের তালা কে বা কারা ভেঙেছে তা তিনি দেখেননি৷এদিকে  ১৪ ই মার্চ ফজলুল করীম তার সাথে ২ জন কে নিয়ে ব্যাংকের নিচের দোকান থেকে রড নিয়ে ব্যাংকের তালা ভেঙেছে বলে জানান বংশী বাজার কমিটি সভাপতি ও স্থানীয় কয়েকজন। এছাড়াও জাকির হোসেন নামের এক বৃদ্ধের ১ লাখ ৫০ হাজার টাকাও আত্মসাৎ করেছে বলে জানান তিনি। এর প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার (১৯ মার্চ)  সকাল ১১ টায় বংশী বাজারে ব্যাংকের সামনে ঘন্টা ব্যাপি মানববন্ধন করেন ঐ ভুক্তভোগীরা, তাদের পরিবার ও এলাকাবাসী। মানববন্ধনে ভুক্তভোগী তার উপরোক্ত  টাকা আত্মসাৎের অভিযোগ তুলেন এবং ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি জানান। ডাকাতির অভিযোগে  ফাঁসানোর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগীর পরিবার এলাকাবাসী। দুপুর সাড়ে ১২ টায় ঐ এজেন্ট ব্যাংকে গিয়ে পাওয়া যায় মাত্র ১ জন কর্মকর্তা। ফজলুলু করীমকে মুঠোফোনে কল করার পর আসেন তিনি।টাকা জমা দেওয়ার ক্রেডিট কার্ডে বংশী বাজার এজেন্ট ব্যাংকের রিসিভ ও  সীল মোহর থাকলেও এসব  ভুয়া আর মিথ্যা বলে জানান তিনি।


গ্রাহক আসমা আক্তার রায়পুর উপজেলার উত্তর  চরলক্ষ্মী গ্রামের মাস্টার আলী আহমেদ প্রধানের মেয়ে এবং নোয়াখালী সদর উপজেলার লক্ষ্মী নারায়ণপুরের মৃত জাকির হোসেনের স্ত্রী। অভিযুক্ত মো: ফজলুল করীম রায়পুর উপজেলার চর বংশী ইউনিয়নের বেপারী বাড়ির সাত্তার ব্যাপারির ছেলে। 

  


ভুক্তভোগী আসমা আক্তার ও এলাকাবাসী বলেন, 

আমি টাকা জমা রেখেছি সাড়ে ৭ লাখ কিন্তু এখন আমার একাউন্টে রয়েছে মাত্র ৫১ হাজার টাকা। বাকি টাকা এই ব্যাংকের ফজলুল করীম আমার ব্যাংক একাউন্টে জমা করেনি। আমি আমার বাবার বাড়ি থেকে জমি বিক্রি করে টাকা জমিয়ে রেখেছি। আমি স্বামী হারা। এখন আমার কি হবে আমি আমার টাকা ফেরত চাই, সুষ্ঠু বিচার চাই । 


আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য ফজলুল করীম নিজেই ব্যাংকের তালা ভেঙে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। এলাকায় এরকম ঘটনা মানার মতো না। আমরা এলাকাবাসী চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ভুক্তভোগী তার টাকা যেনো ফিরে পায়। এরকম ঘটনা যেনো আর না ঘটে।  


  চরবংশী বাজার কমিটি সভাপতি সেলিম কবিরাজ বলেন, 

 ফজলুল করীম নিজেই তার ব্যাংকের তালা ভেঙেছে। এখানে অন্য কেউ ব্যাংক ডাকাতি করতে আসেনি। আমরা বাজার কমিটির লোকজনকেও সে জানায়নি। অথচ সে থানায় ভুক্তভোগী গ্রাহকের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে । 


অভিযুক্ত ফজলুল করিম বলেন, 

এই সীল মোহর ভুয়া। আপনারা সকল সীল মিলালে বুজতে পারবেন এগুলা ভুয়া। 


 সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লক্ষ্মীপুর শাখার ম্যানেজার মাকসুদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি আমরা জেনেছি। অভিযোগকারী গ্রাহক আমাদের লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা নিবো। 

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024