ঈদ ও রোজাকে সামনে রেখে আশাশুনি সহ আশপাশ এলাকায় গড়ে উঠেছে নকল দুধের কারখানা। এসব কারখানায় ত্রিশ লিটার পানি, ৫ কেজি চিনি,সয়াবিন তেল,১০ লিটার খাটি গভীর দুধ দিয়ে তৈরি হয় ৫০ কেজি দুধ। আর এসব দুধ বিক্রিয় হচ্ছে আশাশুনির সর্বত্র গড়ে উঠা মিষ্টির দোকানে এবং দুধ শীতলী করণ কেন্দ্র।আশাশুনির কিছু দুধ ব্যবসায়ী কাটিং ওয়েল,ছানার পানি,ক্ষতিকারক ক্রিম মিল্ক পাউডার,বাটের ওয়েল.সোডা ,সোয়াবিন তৈল,চিনি.দুধের ননি সহ বিভিন্ন ক্যামিক্যালের সাহায্যে নকল দুধ তৈরি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে ।আর এ সমস্ত দুধে ফরমালিন ব্যবহার করে সাতক্ষীরা,খুলনা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।আর এ রকম একটি চক্র গড়ে উঠেছে আশাশুনির বুধহাটার শ্বেতপুর,সাতক্ষীরা সদরের হাবাসপুর ও কুলতিয়া,আশাশুনি কুল্যার কচুয়া,খুলনার পাইকগাছার বাঁকা ও কাটি পাড়া,সাতক্ষীরা সদরের ধুলিহর ও ব্রম্মরাজ পুর এলাকা সহ জেলার সর্বত্র ।দুধে মিশ্রিত এসব রাসায়নিক দ্রব্য শিশু সহ মানুষের পেটের পীড়া,ডায়রিয়া,কিডনী ও লিভারের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে থাকে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী জানান,প্রত্যন্ত অঞ্চলে গভীর রাত থেকে শুরু করে সকাল ৮ টার মধ্যে নকল দুধ তৈরি হয়ে থাকে।৫০ লিটার দুধ তৈরির জন্য ৩০ লিটার পানি,৫ লিটার সয়াবিন তেল,১০ লিটার খাঁটি দুধ ও ৫ কেজি চিনি দিয়ে শ্যালো মেশিন চালিত ব্লেডার মেশিনে মিশ্রিত করেই দুধ তৈরি করা হয়।অনেকে ছানার পানি ও বিষাক্ত ক্যামিক্যাল দিয়ে দুধ তৈরি করে শীতলীকরন মেশিনে সংরক্ষন করা হয় আবার কখনও সরাসরি সরবরাহ করা হয়ে থাকে।দেশের অনেক বিখ্যাত কোম্পানি,মিষ্টি ব্যবসায়ীর প্রতিনিধিরা জ্ঞাত বা অজ্ঞাত ভাবেই এ দুধ সরবরাহ নিয়ে থাকে।আশাশুনি দুগ্ধ উৎপাদন এলাকা হিসাবে বেসরকারি ব্র্যাক,মিল্ক ভিটা ও প্রান কোম্পানী তাদের আঞ্চলিক শাখা দুগ্ধ সংগ্রহ শালা স্থাপন করেছে।এর ফলে এ অঞ্চলে প্রতিটি গৃহ গাভী পালনে ঝুকে পড়েছে।আর জীবন জিবিকার জন্য দুধের ব্যবসা বেছে নিয়েছেন।এ দিকে চাহিদার তুলনায় দুধ উৎপাদন কম হওয়ায় ছানা উৎপাদক ও অসাধূ ব্যবসায়ীরা নকল দুধ তৈরি করে আসল দুধের সাথে মিশিয়ে বিক্রয় করছে, ফলে দুধ ও ভেজাল দুধে পরিনত হচ্ছে।একটি সূত্র জানায়,ছানার কারখানার ছানার পানিই নকল দুধ তৈরির প্রধান উপকরন।কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও ঘোষ  প্রতি মণ ছানার পানিতে আধা কেজি ননী,আধাকেজি মিল্ক পাউডার সামান্য পরিমান লবণ,খাবার সোডা,এক কেজি চিনি ও দুধের কৃত্রিম সুগন্ধি মিশিয়ে অবিকল দুধ তৈরি করছে যা রাসায়নিক পরীক্ষা ছাড়া আসল কি নকল বোঝার উপায় থাকে না।অপর একটি সুত্র জানায় অসাধু ঘোষ ও ব্যবসায়ীরা এক মণ ফুটান্ত পানিতে এক কেজি দুধের ননী,আধা কেজি দুধের পাউডার,কয়েক ফোঁটা কাটার অয়েল ২৫০ গ্রাম হাইড্রোজ,সম পরিমান লবন,১০০ গ্রাম সোয়াবিন তেল ও কয়েক ফোঁটা ফরমালিন মিশিয়ে নকল দুধ তৈরি করা হয়।ক্ষতিকর মিল্ক পাইডার ভারত থেকে সীমান্ত পথে দেশে প্রবেশ করছে।দুধের ল্যাকটো ও ঘনত্ব নির্ণয়ে ল্যাকোমিটার ব্যবহার করে ভেজাল শানাক্ত করা যায় বলে নকল দুধে চিনি লবন,হাইড্রোজ, ও সয়াবিন তেল ব্যবহার করা হয়।এতে দুধের ঘনত্ব  ও ল্যাকটো বেড়ে যায়।দুধ তাজা রাখার জন্য ব্যবহার করা হয় ফরমালিন ফলে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা কালে ল্যাকটোমিটার দিয়ে এই সূক্ষ প্রতারনা ধরা সম্ভব নয়।বেসরকারি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান ফ্যাটের ওপর দুধের মূল্য নির্ধারন করে থাকে।এ জন্য এ চক্রটি সয়াবিন তেল,পামওয়েল ও দুধ বিল্ডার মেশিনে শিশ্রন করে দুধের ফ্যাট বাড়াচ্ছে।এখনই এদের নির্মুল করা না গেলে মানকদেহে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে জনসাধারনের স্বাস্থ্যের অবনতি হবে বলে অভিঞ্জ মহল মনে করেন।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2023