ইদানীং কয়েক বছর ধরে কিছু নামদারী মুসলমান ও মাথা মোটা বুদ্ধিজীবী প্রতি বছর পূজা, বুদ্ধপূর্ণিমা বা বড়দিন এলেই "ধর্ম যার যার উৎসব সবার" স্লোগানে মেতে উঠে। অথচ এটি একটি সরাসরি ইসলাম বিরোধী ও শরীয়ত পরিপন্থী বক্তব্য। পূজা সহ অন্যান্য ধর্মের উৎসবে এমন কর্মকাণ্ড হয়, যা মহান আল্লাহর সাথে সরাসরি শিরক করা হয়। বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সা) ও স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন শিরকের ব্যাপারে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, তোমরা আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করো না। কেননা শিরক হলো বড় জুলুম। (সূরা লুকমান, আয়াত ১৩)।
আফসোস! আমাদের দেশে কিছু নামদারী মুসলমান আনন্দ চিত্তে পূজা সহ অন্যান্য ধর্মের উৎসবে অংশগ্রহণ করে। সত্যি যা একজন মুসলমান হিসেবে বড় লজ্জাজনক। অন্য ধর্মের উৎসব সমূহে শরীক হওয়ার মানে সেগুলোকে গ্রহণযোগ্য ধর্ম বলে স্বীকার করে নেয়া। অথচ কুরআন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরা আল্লাহ তাআলার দুশমন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিনকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতেও সে হবে ক্ষতিগ্রস্ত।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫)।
হাদীস শরীফে এসেছে, যে ব্যাক্তি অন্য জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে , সে তাদের দলভুক্ত বলে গন্য হবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ’নং ৪০৩১)।
হযরত উমার (রা) বলেন, তোমরা আল্লাহর দুশমনদের উৎসবগুলোতে অংশগ্রহন থেকে বেঁচে থাকো। (আসসুনানুল কুবরা ১৮৮৬২) অন্য বর্ণনায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাসূল (সা) থেকে বর্ণনা করেন, যারা বিধর্মীদের মত উৎসব করবে, কিয়ামত দিবসে তাদের হাশর ঐ লোকদের সাথেই হবে। (আসসুনানুল কুবরা, হাদিস ১৫৫৬৩)
উমার ইবনে খাত্তাব বলেছেন "তোমরা মুশরিকদের উপসনালয়ে তাদের উৎসবের দিনগুলোতে প্রবেশ করোনা। কারন সেই সময় তাদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হতে থাকে। (বায়হাক্বী)
এমন কি অন্য ধর্মের উৎসবে শুভেচ্ছা জানানো সম্পূর্ণ হারাম।
ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিঃ) তাঁর লিখিত “আহকামু আহলিয যিম্মাহ” গ্রন্থে বলেন: “কোন কুফরী আচারানুষ্ঠান [বড়দিন-ক্রিসমাস] উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানো সর্বসম্মতিক্রমে হারাম।”
একটি বিষয় লক্ষ্য করলে দেখা যায় কিছু আবেগী মুসলমান অমুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানেতো যায়ই, আবার তাদের পুজার প্রসাদও খায়।
আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, তিনি তোমাদের ওপর হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত, শূকরের মাংস এবং সেসব জীবজন্তু যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানি ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয় তার জন্য কোনো পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু। (সূরা আল বাকারা, আয়াত ১৭৩)।
অ
আল কুরআনে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোনো অমুসলিমকে বন্ধু বানানোর ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন, হে ঈমানদারগণ তোমরা আমার শত্রু এবং তোমাদের শত্রুকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না। ( সূরা মুমতাহানাহ, আয়াত ১)।
সব উৎসব সবার জন্য নয়। অন্যান্য ধর্মের উৎসব মুসলমানদের উৎসব হতে পারে না। যারা এতদিন "ধর্ম যার যার উৎসব সবার" এ স্লোগানে পক্ষে কথা বলেছেন তাদের উচিৎ এ মুহূর্তে তওবা করে নেয়া এবং ভবিষ্যতে ধর্মীয় বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা। উক্ত স্লোগানটি পরিহার করে "ধর্ম যার উৎসব তার" স্লোগানে আওয়াজ তুলি।আল্লাহ তা‘আলা আমাদের তাউফীক দান করেন। আমীন।
লেখক : কলামিস্ট।