কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সম্প্রতি প্রায় নলকূপে পানি উঠছে না। বৈদ্যুতিক মোটর বা ডিজেল চালিত পাম্প না বসালেই মিলছে না প্রয়োজনীয় খাবার পানি।

শুষ্ক মৌসুমে এমনিতেই প্রায় পুকুর, খাল ও জলাশয় শুকিয়ে যায়। সে সাথে গভীর নলকূপগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। ক্রমশ এই সমস্যা প্রকট হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় সুপেয় পানির তীব্র হাহাকার চলছে। এতে চরম বিপর্যস্তে পড়েছে স্থানীয়দের জনজীবন । দ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পবিত্র রমজানেও এক কলসি খাবার পানি সংগ্রহের জন্য গৃহবাসীরা ক্লান্ত শরীরে ছুটছে এক মহল্লা থেকে আরেক মহল্লায়।

স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, উপজেলার উত্তর ধূরুং, দক্ষিণ ধূরুং, লেমশীখালী, কৈয়ারবিল ও বড়ঘোপের কিছু জায়গায় শুষ্ক মৌসুমে সুপেয় পানির সংকট দেখা দেয়। বিশেষ করে প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পানির স্তর নিচে নেমে যায়। দ্বীপে অধিকাংশ নলকূপ ৮’ শত থেকে ১২’ শত ফুট গভীরতা সম্পন্ন। অথচ নির্দিষ্ট এসময়ে শতবার চাপলেও ওই নলকূপ থেকে পানি উঠে না।

দক্ষিণধুরুং, উত্তর ধূরুং ও লেমশীখালী ইউনিয়নের কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, গত মাসখানেক ধরে নলকূপে পানি উঠছে না। সেহেরি ও ইফতারের সময় পানির প্রয়োজন। তবে চাইলে যে কোনো মুহূর্তে পানি সংগ্রহ করা যায় না। যেখানে ডিজেল/ইঞ্জিন চালিত পাম্পের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে, সেখান থেকে মাথায় বা কাঁধে নিয়ে পানি সরবরাহ করতে হয়।অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত বছর দশেক আগেও সুপেয় পানির সংকট ছিল না দ্বীপে। প্রাকৃতিকভাবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এটা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে উপজেলায় বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫০/৬০ হাজারেরও অধিক মানুষ খাবার পানি সংকটে চরম দূর্ভোগে ভোগছে।যথেচ্ছা গভীর নলকূপ স্থাপন, বোরো চাষ ও লবণ উৎপাদনে অবাধে সেচ পাম্প দ্বারা ভূগর্ভস্থের পানি উত্তোলনের কারণে এমন সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে ধারণা করছেন পরিবেশবাদীরা।

এদিকে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. ফরহাদ মিয়া জানান, শুষ্ক মৌসুম এলেই মূলত কুতুবদিয়ার বেশ কয়েকটি এলাকায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়। এ সময় আসলে খাবার পানির স্তর নিচে নেমে যায়। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মিটা পানির স্তর লবণাক্ত পানিতে ঢাকা পড়ে। পাশাপাশি ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভূগর্ভস্থের পানি উত্তোলনের ব্যাপক তোড়জোড়ও চলে। এতে খাবার পানির সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করে বলে জানান তিনি।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024