টেকনাফ থানার একটি কক্ষে মেঝেতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন চোখ বাঁধা এক ব্যক্তি। পাশেই চোখ বাঁধা ও হাতকড়া নিয়ে পড়ে আছেন আরও দুজন।

ভয়ানক এই দৃশ্যের ৩৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ঘুরছে ফেসবুকে, খবর ছাপিয়েছে  জাতীয় গণমাধ্যমও।

ভিডিওতে দেখা যাওয়া তিন ব্যক্তির মধ্যে –  মো. আব্দুর রহিম (১৯) ও আব্দুল আমিন (১৬)  সম্পর্কে আপন ভাই,  অন্যজন ওমর ফারুক (২৪)।

তিন ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন,  সোমবার (২২ এপ্রিল) রাতে হঠাৎ পুলিশ এসে তাদেরকে থানায় তুলে নিয়ে যায়। পরে রাতে ৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়,  টাকা না দেওয়ায় দুপুর ১২ টা অবধি ওসির কক্ষে চোখ, হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয়।

মোস্তাক আহমেদ নামের এক টমটম-চালককে হত্যার অভিযোগে এই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে টেকনাফ থানা পুলিশ, গত বুধবার তাঁদের কক্সবাজার আদালতে তোলা হয় এরপর পাঠানো হয় কারাগারে। টেকনাফের অলিয়াবাদে গত ৬ মার্চ খুন হয়েছিলেন মোস্তাক।

ওমর ফারুকের স্ত্রী নুসরাত বেগমের দাবী, তার স্বামী কাউকে খুন করেনি। খুন করতে পারে না। আব্দুল আমিনের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, “অসুস্থ থাকায় টমটমচালক নিখোঁজের দিন আব্দুল আমিন বাড়ি থেকে বের হননি।”

ওসি ওসমান গণি  অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ” থানা কক্ষে নির্যাতনের বিষয়টি জানা নেই।”  তবে  ছবি ও ভিডিওর কথা বললে তিনি বলেন “আমার খোঁজ নিতে হবে।”

এদিকে থানায় আসামিদের নির্যাতন, থানায় টর্চার সেলসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে।

পুলিশের একটি সূত্র বলছে, তদন্তের প্রেক্ষিতে ওসি ওসমান গণি বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার হতে পারেন।

এদিকে শুক্রবার রাতে টেকনাফ থানার ওসি ওসমান গনি প্রত্যাহার হয়পছেন বলে গুঞ্জন শোনা যায় তবে তার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর দেশব্যাপী আলোচিত হয় টেকনাফ থানা পুলিশের কার্যক্রম।

২০২০ সালের জুলাইতে ঘটা এই ঘটনার পর সেখানে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড কমলেও সম্প্রতি পুলিশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ বেরিয়ে আসছে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024